মাঝরাতে হাতি ঢুকে পড়ল বাড়ির মধ্যে। সেখানেই না থেমে শুঁড় দিয়ে আছাড়ও মারল এক মহিলাকে।
বন দফতর সূত্রে খবর, সোমবার রাতে একটি প্রকান্ড দলছুট দাঁতাল ঝাড়গ্রাম জেলার পুকুরিয়া বিটের দিক থেকে এসে জামবনি ব্লকের পড়াডিহা গ্রামে ঢুকেছিল। সেখানে প্রথমে লালমোহন মাহাতো নামে এক ব্যক্তির বাড়ির দরজা ভেঙে ফেলে। লালমোহন বলেন, ‘‘দরজা ভাঙার পর গ্রামের লোককে ফোন করে যেই হ্যালো বলেছি, সেই হাতি তেড়ে আসে। ভয়ে হাত থেকে ফোন পড়ে যায়। কিছুক্ষণ পরে হাতিটি বেরিয়ে যায়।’’ এরপরে হাতিটি আবার একটি বাড়িতে ঢোকে। সেই বাড়ির বারান্দায় আড়াই বছরের নাতনিকে নিয়ে ঘুমিয়েছিলেন জানকি মাহাতো। একটু দূরে শুয়েছিলেন তাঁর স্বামী গণেশ মাহাতো। জানকির বৌমা পুতুল মাহাতো তাঁর আর এক মেয়েকে নিয়ে ঘুমিয়েছিলেন বাড়ির মধ্যে। রাত দুটো নাগাদ আচমকা মশারি সমেত গণেশের পা ধরে টানে হাতি। কোনও মতে পা ছাড়িয়ে নেন গণেশ। তাঁর গোঙানির শব্দে উঠে জানকি দেখেন বাড়ির দরজা খোলা। তাঁকে সামনে পেয়ে আছাড় মারে হাতি। ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় জানকিকে। মঙ্গলবার বিকেলে তিনি বলেন, ‘‘কোনওদিন হাতি বাড়িতে আসেনি। সে যে একেবারে বাড়ির মধ্যে ঢুকে শুঁড় বাড়াবে তা বুঝতেই পারিনি। নাতনির কিছু এই হয়নি এটাই রক্ষা।’’ জানকির মেয়ে উমা মাহাতো বলেন, ‘‘ভাই বাইরে লরি চালায়। তার মধ্যেই এই ঘটনা। মাকে কটকে নিয়ে যাওয়া হবে।’’
পরে গ্রামবাসীর তাড়া খেয়ে হাতিটি গিধনি রেঞ্জের গোদরাশোল বিটের ভুরসান গ্রামে যায়। ওই গ্রামে জনৈক লক্ষীকান্ত মাহাতোর মাটির বাড়ির দেওয়াল ভেঙে খাবারের খোঁজ করে। পরে জঙ্গলের দিকে চলে যায়। ঝাড়গ্রামের ডিএফও উমর ইমাম বলেন, ‘‘হাতিটি পুকুরিয়ার দিক থেকে গিয়েছিল। তার উপরে নজরদারি রয়েছে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)