Advertisement
E-Paper

প্রাথমিকে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ, বিজ্ঞপ্তিতে বিতর্ক

জেলায় এর আগে প্রাথমিকে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ হয়েছিল বাম আমলে, ২০০৮ সালে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় প্রায় ৩,৮০০ প্রাথমিক স্কুল রয়েছে।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২৫ ০৯:১২
Share
Save

মেদিনীপুর: প্রাথমিক স্কুলে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। শুক্রবার এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী শিবির।

সিপিএমের প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠন এবিপিটিএ-র জেলা সম্পাদক সন্দীপ ঘোষ বলেন, ‘‘বোঝা যাচ্ছে না, সংসদ ঠিক কী চাইছে! আইনি পরামর্শ নিয়েই এগোব।’’ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি অখিলবন্ধু মহাপাত্র অবশ্য বলেন, ‘‘দীর্ঘ কয়েক বছর পরে জেলার প্রাথমিক স্কুলে প্রধান শিক্ষকের শূন্যপদে নিয়োগ শুরু হতে চলেছে। স্বাগত জানাচ্ছি।’’

জেলায় এর আগে প্রাথমিকে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ হয়েছিল বাম আমলে, ২০০৮ সালে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় প্রায় ৩,৮০০ প্রাথমিক স্কুল রয়েছে। এরমধ্যে প্রায় ২,৬০০ প্রাথমিক স্কুলেই স্থায়ী প্রধান শিক্ষক নেই। শতাংশের নিরিখে যা প্রায় ৬৮ শতাংশ। এই বিপুল সংখ্যক ফাঁকা পদে একজন সহকারী শিক্ষক বা শিক্ষিকা অস্থায়ীভাবে দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। টিচার ইনচার্জ অর্থাৎ টিআইসি হিসাবে। তাঁরা প্রধান শিক্ষক হিসাবে আর্থিক সুবিধা পান না। শুক্রবার শূন্যপদে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ। ওই সংসদের জেলা সভাপতি অনিমেষ দে বলেন, ‘‘বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। প্রধান শিক্ষক পদে যে সব কর্মরত শিক্ষক কাজ করতে ইচ্ছুক, তাঁদের কাছে আবেদন চাওয়া হয়েছে।’’

ওই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ইচ্ছুক শিক্ষক, শিক্ষিকারা আবেদন জমা করতে পারবেন ১৬ থেকে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে। সংসদের দেওয়া ফরম্যাটে আবেদন করতে হবে। যোগ্যতার মাপকাঠি কী, তা বিজ্ঞপ্তিতেই উল্লেখ রয়েছে। আবেদন জমা করতে হবে সার্কেল অফিসে, অর্থাৎ অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের (এসআই) অফিসে। সরাসরি জেলা সংসদে আবেদন জমা দিলে তা গৃহীত হবে না। সংসদ সূত্রে খবর, আবেদনের ভিত্তিতে অভিজ্ঞতাকে অগ্রাধিকার দিয়েই প্রধান শিক্ষকের পদে নিয়োগ করা হবে। আবেদনের সঙ্গে ‘সেল্ফ অ্যাসেসমেন্ট’ বা স্ব-মূল্যায়নের সুযোগ থাকছে। এ ক্ষেত্রে ৩০ নম্বর থাকছে। মৌখিক পরীক্ষা হবে না।

এই নিয়োগ প্রক্রিয়া যাতে স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত হয়, সে দাবি করেছে জেলার বিভিন্ন প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠন। বিজ্ঞপ্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলে এবিপিটিএ’র জেলা সম্পাদক সন্দীপ বলেন, ‘‘সিনিয়র মোস্টেরই প্রধান শিক্ষক হওয়ার কথা। সংসদ বিজ্ঞপ্তিতে সিনিয়রিটির বিষয়টি রেখেছে ঠিকই, তবে পাশাপাশি ‘সেল্ফ অ্যাসেসমেন্ট’-সহ একাধিক বিষয় জুড়েছে। ‘সেল্ফ অ্যাসেসমেন্ট’ রাখার যুক্তি কী? নিশ্চয়ই এখানে কোনও ফাঁক রাখা রয়েছে। আগে তিনটি স্কুলের অপশন থাকত। সেটাও নেই। বিজ্ঞপ্তি দেখে ঠিক বোঝা যাচ্ছে না সংসদ কী চাইছে!’’ তাঁর কটাক্ষ, ‘‘আপাত দৃষ্টিতে যেটা বোঝা যাচ্ছে, প্রধান শিক্ষক নিয়োগের সদিচ্ছা নেই বলেই সম্ভবত এমন বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে!’’ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি অখিলবন্ধু অবশ্য বলছেন, ‘‘অনেকে ১৫-২০ বছর ধরে টিআইসি হিসাবে কাজ করছেন। তাঁদের আশা, চাকরির শেষ জীবনে প্রধান শিক্ষক হবেন। আশা পূরণ হতে চলেছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আবেদনের ক্ষেত্রে যে মানদণ্ড রাখা হয়েছে, তা যুক্তিপূর্ণ। ‘সেল্ফ অ্যাসেসমেন্ট’ করে আবেদনকারী নিজেকে ‘মার্কস’ দেবেন, এটা নজিরবিহীন। আমরা চাই, যাঁদের সুযোগ পাওয়ার কথা, তাঁরা প্রত্যেকে যেন সুযোগ পান।’’

সংসদ সূত্রে খবর, প্রধান শিক্ষক নিয়োগে অভিজ্ঞতাকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে। সংসদের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদে প্রাথমিক স্কুলে কর্মরত সবচেয়ে অভিজ্ঞ শিক্ষকদের নিয়োগ করা হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

midnapore

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}