প্রতীকী ছবি।
সংস্কারের অভাবে ধুঁকছে কেশিয়াড়ির ‘রবীন্দ্র ভবন’।
কেশিয়াড়িতে বড় মাপের সভাঘর বলতে একমাত্র ‘রবীন্দ্র ভবন’-ই রয়েছে। কখনও সরকারি উদ্যোগে, কখনও বেসরকারি উদ্যোগে প্রায়শই এখানে নানা অনুষ্ঠান হয়। দেখভালের অভাবে এই সভাঘরের এখন বেহাল দশা। সেই অর্থে মঞ্চটি বড় মাপের কোনও অনুষ্ঠানের উপযুক্ত নয়। নির্মাণ পরিকল্পনাতেও ত্রুটি রয়েছে বলে স্থানীয়দের একাংশের মত। মঞ্চে অনুষ্ঠানের সময় সভাঘরের সর্বত্র শব্দ স্পষ্ট শোনা যায় না। মঞ্চে গায়কেরা গান করলে প্রতিধ্বনির চোটে সমস্ত সুর তালগোল পাকিয়ে যায়। কখনও কান খাড়া করে থেকেও নাটকের সংলাপ বোঝা যায় না। এই ‘রবীন্দ্র ভবন’- এর সংস্কার জরুরি হয়ে পড়েছিল।
এতদিনে সভাঘরটির হাল ফেরাতে উদ্যোগী হল প্রশাসন। রবীন্দ্র ভবন সংস্কারে অর্থ সহায়তা করছে পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ (পিইউপি)। ব্লক থেকেই সংস্কারের পরিকল্পনা করা হয়। পরে সেই পরিকল্পনা জেলায় পাঠানো হয়। জেলা থেকে তা পাঠানো হয়েছিল পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের কাছে। অর্থ সহায়তার আবেদনে সাড়া দিয়েছে পর্ষদ।
প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, কেশিয়াড়ির ‘রবীন্দ্র ভবন’ সংস্কারে ১২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। ব্লক প্রশাসনের এক আধিকারিক মানছেন, “কেশিয়াড়ির এই সভাঘরের হাল ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ওই পর্ষদের কাছে অর্থ সহায়তা চাওয়া হয়েছিল। তা মিলেছে। সংস্কারের নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করা হয়েছে। পরিকল্পনা মতো কাজ হলে সভাঘরের হাল অনেকটাই ফিরবে।” তাঁর সংযোজন, “সভাঘরের সংস্কার হলে কেশিয়াড়ির সংস্কৃতিপ্রেমী মানুষই উপকৃত হবেন।”
পশ্চিম মেদিনীপুরের গুরুত্বপূর্ণ ব্লকগুলোর মধ্যে কেশিয়াড়ি অন্যতম। কেশিয়াড়িতে প্রায়শই নানা অনুষ্ঠান হয়। তবে আগে এখানে উন্নতমানের সভাঘর ছিল না। ফলে, সমস্যায় পড়তেন উদ্যোক্তারা।
বড় মাপের অনুষ্ঠানের জন্য অস্থায়ী ভাবে মঞ্চ তৈরি করতে হত। সে জন্য খরচও বেশি হত। পরিস্থিতি দেখেই এখানে ‘রবীন্দ্র ভবন’ তৈরির পরিকল্পনা হয়। ২০০৩ সালের গোড়ায় প্রস্তাবিত সভাঘরের শিলান্যাস হয়। শিলান্যাস করেন তৎকালীন বন প্রতিমন্ত্রী মহেশ্বর মুর্মু। সেই সময় কেশিয়াড়ি মহেশ্বরবাবুরই নির্বাচনী এলাকা ছিল। দীর্ঘ টালবাহানার পরে ২০১১ সালের গোড়ায় সভাঘরের উদ্বোধন হয়। উদ্বোধন করেন তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেন। প্রায় ৭০০টি আসন বিশিষ্ট সভাঘরটি তৈরি করতে খরচ হয় ১ কোটি ৭৯ লক্ষ টাকা। গ্রামে গ্রামে সংস্কৃতির প্রসার বাড়ানোর উদ্যোগ থেকেই ‘রবীন্দ্র ভবন’ তৈরির পরিকল্পনা। দেখতে দেখতে একের পর এক বছর ঘুরেছে। এই সময়ের মধ্যে সভাঘরের রঙও চটতে শুরু করেছে।
এ বার সংস্কারের পাশাপাশি সভাঘরের আশেপাশের এলাকায় সৌন্দর্যায়নের কাজ করার পরিকল্পনাও রয়েছে প্রশাসনের। ব্লক প্রশাসনের এক কর্তার আশ্বাস, “সংস্কারের কাজ শেষ হলে নতুন করেই সেজে উঠবে এই সভাঘর।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy