এলআইসি মোড়ে এভাবেই পড়েছিলেন ওই যুবক। নিজস্ব চিত্র।
বাসে অসুস্থ হয়েছেন এক যুবক। কনডাক্টর তাঁকে নামিয়ে রিকশাচালকের হাতে দিলেন ২০ টাকা। রিকশাচালক অসুস্থ যুবককে নিয়ে পৌঁছলেন হাসপাতালে। অভিযোগ, চিকিৎসা শুরুর বদলে শুরু হল জিজ্ঞাসাবাদ। নথির খোঁজ। রিকশাচালক ফের অসুস্থ যুবককে নিয়ে ফিরলেন আগের জায়গায়। পরে পুলিশ ফের হাসপাতালে নিয়ে গেলেও বাঁচানো যায়নি ধনঞ্জয় দে নামে ওই যুবককে।
ধনঞ্জয়ের পরিজনদের অভিযোগ, হাসপাতাল যদি শুরুতে যুবকটিকে ভর্তি নিয়ে নিত, তা হলে হয়তো তাঁর এই পরিণতি হত না। ওই যুবককে এ ভাবে হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হল কেন? বাড়ির লোক ছাড়া অন্য কেউ ভর্তি করতে এলে কি ভর্তি নেওয়া যায় না? হাসপাতালের সুপার ইন্দ্রনীল সেন বলেন, ‘‘ওই সময়ে ঠিক কী হয়েছে, আমি খোঁজখবর নিয়ে দেখছি। জরুরি বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। কী হয়েছে, জানার চেষ্টা করছি।’’
বছর ৩৭-এর ধনঞ্জয়ের বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতার পানিকোটর এলাকায়। স্থানীয় সূত্রের খবর, বুধবার সকালে বাসে করে গড়বেতা থেকে মেদিনীপুরে আসছিলেন ওই যুবক। আসার পথেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। বাসের কর্মীরা তাঁর বাড়িতে খবর দেন। বাস থেকে নামিয়ে ওই যুবককে রাখা হয়েছিল রাস্তার পাশে। এলআইসি মোড়ের অদূরে। অসুস্থ ওই যুবককে প্রথমে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন কার্তিক রাণা নামে এক রিকশাচালক। কার্তিক বলেন, ‘‘সকালে স্ট্যান্ডে এসে তখন গাড়িটা লাগাচ্ছি। স্ট্যান্ডের লোকেরা বলল, একে ভর্তি করে দিয়ে আয় হাসপাতালে। বাসের কন্ডাক্টর আমায় ২০ টাকা ভাড়াও দিলেন। ওকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য।’’ এলআইসি মোড়ের কিছু দূরেই মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। সেখানে ভর্তি করতে গিয়ে কেমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছিল? কার্তিক বলেন, ‘‘ওঁর সব নথি খুঁজছিল (হাসপাতালের লোকেরা) আমার কাছে। ওঁর বাড়ির লোকেদেরও খুঁজছিল।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমার কাছে তো ও সব কিছুই নেই। আমি তখন কী করব? তাই হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে নিয়ে চলে আসি। যে জায়গা থেকে ওঁকে তুলেছিলাম, সেই জায়গায় পৌঁছে দিয়েছি।’’ এলআইসি মোড়ের কাছে রাস্তার পাশেই অসুস্থ অবস্থায় দীর্ঘক্ষণ পড়ে থেকেছেন গড়বেতার ওই যুবক। সকাল খানিক গড়াতে খবর যায় পুলিশ- প্রশাসনের কাছে। পুলিশকর্মীরা আসেন। ওই যুবককে উদ্ধার করে ফের হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়। পরে হাসপাতালেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
ছেলের অসুস্থতার খবর পেয়ে মেদিনীপুরে ছুটে এসেছিলেন তাঁর বাবা নীলমণি দে। বৃদ্ধ নীলমণি বলছিলেন, ‘‘খবর পেয়েছিলাম, ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। অবস্থা খুব খারাপ। তাই মেদিনীপুরে আসি। শহরে এসে দেখি, এলআইসি মোড়ের কাছেই পড়ে আছে ছেলে। পরে ওকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy