Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Fraud

অনুমোদন ছাড়াই ভর্তি, সরকারি হাসপাতালে প্রশিক্ষণের টোপ

দইসাই এজি চার্চের বিজ্ঞাপনে তিন বছরের জেনারেল নার্সিং কোর্স পড়ানোর কথাও উল্লেখ করা রয়েছে।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

কেশব মান্না
কাঁথি শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৪ ০৭:৩৭
Share: Save:

ডাক্তারিতে ভর্তির সর্বভারতীয় এন্ট্রান্স পরীক্ষা বা ‘নিট’ এ ডামি প্রার্থী বসিয়ে তারা অনেককে সরকারি মেডিক্যাল কলেজে পড়ার সুযোগ করে দিয়েছে বলে দাবি করেছিল কাঁথির 'মুশকিল আসান' নামে একটি সংস্থা। এদের কয়েক লক্ষ টাকা দিয়ে বিনা নিটে মেডিক্যালের প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাশ করে কাঁথির এক ছাত্র কলকাতার সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে ২০১৯ সালে ভর্তি হয়েছিলেন, সেই প্রমাণও মিলেছে। এর পরই নড়ে চড়ে বলেছে পুলিশ ও রাজ্যের গোয়েন্দা দফতর। ইতিমধ্যে খুলে ফেলা হয়েছে 'মুশকিল আসান'কেন্দ্রের নামের বোর্ড।

কাঁথির ওই একই অফিসে 'দইসাই এজি চার্চ' নামে আরেকটি সংস্থার কাজও চলত। সেই সংস্থার বিরুদ্ধে এ বার অনুমোদন না থাকা সত্ত্বেও নার্সিং কোর্সে পড়ুয়া ভর্তি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এমনকি, তারা জাল নথি দেখিয়ে তাদের সংস্থার বিভিন্ন মেডিক্যাল সংক্রান্ত পাঠ্যক্রমের পড়ুয়াদের সরকারি হাসপাতালে হাতেকলমে কাজ শেখানোর ব্যবস্থা করতে স্বাস্থ্য দফতরের কাছে আবেদন জানিয়েছিল বলে অভিযোগ।

গত বছর ২ মার্চ ওই সংস্থার পক্ষ থেকে নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে এ ব্যাপারে লিখিত আবেদন জানানো হয়। আবেদনপত্রে কাঁথি মহকুমা হাসপাতাল এবং খড়িপুকুরিয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ওই সংস্থার মেডিক্যাল সংক্রান্ত বিভিন্ন পাঠ্যক্রমের পড়ুয়াদের হাতেকলমে কাজ শেখানোর জন্য অনুমতি চাওয়া হয়। আবেদন পত্রের সঙ্গে 'ভারত সেবক সমাজ'-এর (১৯৫২ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের পরিকল্পনা কমিশনের দ্বারা নির্মিত ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি) নামে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালানোর একটি অনুমতি পত্র জমা দেওয়া হয়। যদিও ওই অনুমতি পত্র ২০২২ সালের ৩১ মে শেষ হয়ে গিয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। এবং ওই সমস্ত নথিপত্র নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলার তরফ থেকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় স্বাস্থ্য ভবনে। এখনও পর্যন্ত স্বাস্থ্যভবন সবুজ সঙ্কেত না পাওয়ায় ওই পড়ুয়ারা কোথায়, কী ভাবে হাতেকলমে কাজ শিখছেন, কী ভাবে শংসাপত্র পাচ্ছেন, গোটা বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে বলে অভিযোগ।

দইসাই এজি চার্চের বিজ্ঞাপনে তিন বছরের জেনারেল নার্সিং কোর্স পড়ানোর কথাও উল্লেখ করা রয়েছে। এ বিষয়ে আগেই ‘মুশকিল আসান’ কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত সব্যসাচী পণ্ডা বলেছিলেন,"দইসাই এজি চার্চ সংস্থার নার্সিং পড়ুয়াদের আমাদের একটি নার্সিং কলেজে পড়ানো এবং পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।" যদিও সেই দাবি অস্বীকার করে অভিযুক্ত সংস্থার কর্মধার অর্পণ রানা বলেছিলেন,"মুশকিল আসান কেন্দ্র থেকে শুধু মাত্র আইটিআই পড়ুয়া আমাদের প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়।"

এর আগেও দইসাই এজি চার্জের বিরুদ্ধে অনুমতি ছাড়া নিজেদের বিজ্ঞাপনে সরকারি হাসপাতালের নাম ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছিল। এ ব্যাপারে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালের সুপারকে স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ জানাতে বলা হয়। নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসিত কুমার দেওয়ান বলছেন,"স্বাস্থ্য দফতর ওই কলেজকে সরকারি হাসপাতালে তাদের পড়ুয়াদের হাতে কলমে প্রশিক্ষণের কোনও অনুমোদন দেয়নি। তবু কেন তারা আমাদের নাম ব্যবহার করেছিল জানি না। পুলিশকে জানিয়েছি।" মেয়াদ উত্তীর্ণ অনুমোদনের শংসাপত্র জমা দেওয়ার বিষয়ে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলছেন,"খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।" যদিও দইসাই সংস্থার কর্ণধার অর্পণ রানা-র দাবি,"আমাদের অনুমতি পত্র নিয়মিত নবীকরণ করা হয়।" কিন্তু সেই শংসাপত্র তিনি দেখাতে পারেননি।

অন্য বিষয়গুলি:

Contai
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy