যার ফোনে ফাঁদে পড়বেন প্রতারিত তার কমিশনই সবচেয়ে বেশি। প্রতীকী ছবি।
যার ফোনে ফাঁদে পড়বেন প্রতারিত তার কমিশনই সবচেয়ে বেশি। বাকিরা কমিশন পাবে পূর্ব নির্ধারিত হারে। এমনকি, প্রতারণার টাকা রাখার জন্য ভাড়া নেওয়া হত ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট। যাঁর অ্যাকাউন্ট, তিনি ভাগ পেতেন কমিশনের। ঝাড়গ্রামে এক বৃদ্ধকে অনলাইনে প্রতারণার ঘটনায় ধৃত জামতাড়া গ্যাংয়ের তিন সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এমনই তথ্য পেয়েছেন তদন্তকারীরা।
ঝাড়গ্রাম শহরের বাছুরডোবা এলাকায় ওই বৃদ্ধের লক্ষাধিক টাকা অনলাইনে প্রতারণার ঘটনায় প্রিন্স কুশাওহা, সৌরভ মিত্র ও কিষাণ গরাই এই তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতেরা জেল হেফাজতে রয়েছে। জেলে গিয়ে ধৃতদের জেরা করার জন্য আদালতে আবেদন জানিয়েছে সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছে অনলাইনে প্রতারণার পাশাপাশি তিনজনের পেশা ছিল আলাদা। জামতাড়া গ্যাংয়ের কো-অর্ডিনেটর কিষাণ গরাইয়ের বাড়িতে মুদি দোকান রয়েছে। সৌরভ একটি শপিং মলে কাজ করত। আর প্রিন্স গাড়ির ধোঁয়া পরীক্ষা কেন্দ্রে কাজ করত। কিন্তু পুলিশের দাবি, এরা বিভিন্ন পেশার হলেও এঁদের মূল পেশা ছিল অনলাইনে প্রতারণা করা। পশ্চিম বর্ধমান জেলার কুলটি থানা এলাকায় প্রিন্স ও সৌরভের বাড়ি। সৌরভ দুর্গাপুরে ভাড়া বাড়িতে থাকত। সৌরভের সম্পর্কিত ভাই প্রিন্স। প্রিন্স আসানসোল ও দুর্গাপুরে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াত।
পুলিশ সূত্রে খবর, প্রতারণার কাজে কিষাণের অধীনে কাজ করত সৌরভ ও প্রিন্স। কিষাণের বাড়ি জামতাড়ায়। কিষাণ বিয়ে করার পর থেকে সালানপুর থাকত। তবে কিষাণের সঙ্গে জামতাড়ার বন্ধুদের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। কিষাণের কাজ ছিল কিছু নতুন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুঁজে বার করা। সেই অ্যাকাউন্টেই প্রতারণার টাকার লেনদেন হত। যাঁরা অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে দিতেন, কমিশন বাবদ তাঁরাও টাকা পেতেন। প্রতারণার সময় স্মার্টফোন ব্যবহার করত না জামতাড়া গ্যাংয়ের সদস্যেরা। যে ফোন করে কথার ছলে রাজি করাত সেই পেত বেশি কমিশন। প্রিন্স ও সৌরভ লেনদেন টাকার ১০ শতাংশ কমিশন পেত। কিষাণ ২৫-৩০ শতাংশ টাকা পেত। সৌরভ ও প্রিন্স এই কাজে বছর খানেক জড়িয়েছে বলে জানিয়েছে তাদের পরিবার। সৌরভের দাদা সৈকত বলেন, ‘‘বাড়িতে নতুন টিভি ও এসি যখনই কিনেছিল, তখন আমাদের সন্দেহ হয়েছিল। টাকা কোথা থেকে আসছে। তবে দু’জনেই (সৌরভ, প্রিন্স) জানিয়েছিল, বালি খাদানের টাকা এদের অ্যাকাউন্টে রাখতে দিয়েছিল।’’ পুলিশ জানিয়েছে, কিষাণ প্রতারণা চক্রের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত রয়েছে। সালানপুরে এসে জায়গা কিনে দোতালা ঝ-চকচকে পাকা বাড়ি বানিয়েছে কিষাণ। যদিও কিষাণের স্ত্রী সুজাতা গরাই বলেন, ‘‘মেয়ে হওয়ার পর কিষাণ জানিয়েছিল, এসব করে না।’’
ঝাড়গ্রামের ডিএসপি (ডিএনটি) সব্যসাচী ঘোষ বলেন, ‘‘জামতাড়ায় অধিকাংশ লোকজনই মাঠে-ঘাটে বসেই ছোট ছোট গ্যাংয়ে প্রতারণার কাজ করেন। এরা মানুষজনের অজ্ঞানতাকে কাজে লাগায়। ধৃতদের সংশোধনাগারে জিজ্ঞাসাবাদ হবে। আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে। এই গ্যাংয়ে আরও কয়েকজন জড়িত রয়েছে। তাঁদের খোঁজ চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy