Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

সদস্য সংগ্রহে গতি নেই, চিন্তায় বিজেপি

সদ্য সমাপ্ত বনগাঁ লোকসভা এবং কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভার উপ-নির্বাচনে ভাল ভোট বেড়েছে বিজেপি-র। গেরুয়া শিবিরের শক্তিবৃদ্ধি নিয়ে দলের অন্দরে উদ্বেগ প্রকাশ করছে বাম দলগুলো। এই অবস্থাতেও বিজেপিকে ভাবাচ্ছে সদস্য সংগ্রহে মন্থর গতি। ছবিটি পশ্চিম মেদিনীপুরের।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:২৬
Share: Save:

সদ্য সমাপ্ত বনগাঁ লোকসভা এবং কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভার উপ-নির্বাচনে ভাল ভোট বেড়েছে বিজেপি-র। গেরুয়া শিবিরের শক্তিবৃদ্ধি নিয়ে দলের অন্দরে উদ্বেগ প্রকাশ করছে বাম দলগুলো। এই অবস্থাতেও বিজেপিকে ভাবাচ্ছে সদস্য সংগ্রহে মন্থর গতি। ছবিটি পশ্চিম মেদিনীপুরের।

আগামী মার্চের মধ্যে এই জেলায় দু’লক্ষ সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে বিজেপি-র। হাতে মাস দেড়েকও সময় নেই। অথচ এখনও পর্যন্ত জেলায় বিজেপি-র সদস্য সংগ্রহ হয়েছে এক লক্ষেরও কম! স্বভাবতই উদ্বিগ্ন দলের জেলা নেতৃত্ব। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে তড়িঘড়ি বৈঠকও ডাকা হয়েছে। দলের এক সূত্রে খবর, আগামী সোমবার খড়্গপুরে এই বৈঠকে দলের অঞ্চল সভাপতি, ওয়ার্ড সভাপতিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। থাকার কথা দলের দুই রাজ্য সাধারণ সম্পাদক অমল চট্টোপাধ্যায় এবং দিলীপ ঘোষের। থাকবেন বিজেপির রাজ্য সহ-সভানেত্রী তথা জেলার পর্যবেক্ষক কৃষ্ণা ভট্টাচার্যও। দলীয় সূত্রের খবর, বৈঠকে নির্দিষ্ট কিছু নির্দেশ দেবেন রাজ্য নেতৃত্ব। আগামী দিনে জেলায় সেই মতোই কাজ হবে।

প্রকাশ্যে অবশ্য বিজেপি নেতৃত্ব উদ্বেগের কথা মানছেন না। দলের জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায় বলেন, “জেলার সর্বত্র সদস্য সংগ্রহ অভিযান চলছে। নির্ধারিত সময়ে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়ে যাবে। কিছু কিছু এলাকায় সামান্য সমস্যা হচ্ছে। তবে তা তেমন কিছু নয়।” তাহলে খড়্গপুরে তড়িঘড়ি বৈঠক কেন? তুষারবাবুর জবাব, “এটা সাংগঠনিক ব্যাপার। সদস্য সংগ্রহ অভিযান-সহ সংগঠনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হবে।” তুষারবাবু যাই বলুন বিজেপি সূত্রেরই খবর, সদস্য সংগ্রহের গতি যাতে না কমে সে জন্য নেতাদের এলাকায় পড়ে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেমন, দলের মেদিনীপুর শহর সভাপতি অরূপ দাসকে মার্চ পর্যন্ত শহরে থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

“জেলার সর্বত্র সদস্য সংগ্রহ অভিযান চলছে। কিছু কিছু এলাকায় সামান্য সমস্যা হচ্ছে।”
—তুষার মুখোপাধ্যায়। বিজেপি-র পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি

ইতিমধ্যে ব্লক এবং শহরগুলোর জন্য সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছে জেলা বিজেপি। যেমন মেদিনীপুর শহরে দলের কুড়ি হাজার সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্য রয়েছে। খড়্গপুর শহরে ৩০ হাজার। বিজেপির এক জেলা নেতার কথায়, “সংগঠন গড়ে তুলতে না পারলে ভোটে ভাল ফল করা কখনওই সম্ভব নয়। বনগাঁ এবং কৃষ্ণগঞ্জ উপ-নির্বাচনের ফলও সেই ইঙ্গিত দিয়েছে। শুধু বামেদের ভেঙে ভোট ঘরে তুললে হবে না, শাসক তৃণমূলের ভোটও ভাঙাতে হবে।” গত লোকসভার ভোটের পর থেকেই জেলায় বিজেপির শক্তিবৃদ্ধি হতে শুরু করে। লোকসভা নির্বাচনে জেলার তিনটি আসনে ১০ শতাংশের বেশি ভোট পায় বিজেপি। খড়্গপুর সদর বিধানসভা ৩৪.৯ শতাংশ ভোট পেয়ে এগিয়ে ছিল তারা। তারপর থেকে গোটা রাজ্যের সঙ্গে জেলাতেও সংগঠন গোছানো শুরু করেছে বিজেপি। বাজার বা জনবহুল এলাকায় চেয়ার-টেবিল পেতে সদস্য সংগ্রহ চলছে, অনলাইনেও চলছে সদস্য সংগ্রহ।

বিজেপির এই শক্তিবৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে বাম দলগুলো। সিপিএম-সিপিআইয়ের সাম্প্রতিক জেলা সম্মেলনে গেরুয়া শিবিরের বাড়বাড়ন্তের কথা স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি দেখে তৃণমূলও সদস্য সংগ্রহে ঝাঁপাচ্ছে। দলের এক সূত্রে খবর, তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব নির্দেশ দিয়েছেন, মার্চের মধ্যে বুথ-ভিত্তিক সম্ভাব্য সদস্য তালিকা রাজ্যে পাঠাতে হবে। যাঁরা সদস্য হতে ইচ্ছুক তাঁদের আবেদন করতে হবে। ব্লক এবং শহর নেতৃত্বের হাত ঘুরে ওই তালিকা যাবে জেলা নেতৃত্বের কাছে। জেলাস্তরে এ জন্য কমিটিও করা হয়েছে। জেলা নেতৃত্ব তালিকা রাজ্য নেতৃত্বকে দেবেন। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন রাজ্য নেতৃত্ব। তাঁরা জেলায় ফর্ম পাঠাবেন। যাঁদের নামে ফর্ম আসবে, তাঁরা তা পূরণ করে জমা দেবেন এবং তৃণমূলের সদস্য হবেন।

অন্য বিষয়গুলি:

midnapur bjp member
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE