বিদ্যাসাগর হলে তৃণমূলের বৈঠক। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।
ভোটের আগে সময় কম। তাই জনসংযোগ আরও বাড়ানোয় জোর দিল তৃণমূল।
ভোটের মুখে জেলা কমিটির বৈঠক ডেকে নেতা-কর্মীদের ২১ দফা নির্দেশ দিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়। যেখানে প্রতি বুথে একটি নির্বাচনী কার্যালয় খুলে কর্মী-সমর্থকদের নিয়মিত বসার পাশাপাশি ব্লক কমিটির নেতৃত্বকে প্রতিদিন মিলিত হয়ে দায়িত্ব ভাগ করে বুথে বুথে যাওয়ার মতো নির্দেশ রয়েছে।
বুধবার দুপুরে মেদিনীপুর শহরের বিদ্যাসাগর হলে তৃণমূলের জেলা কমিটির বৈঠক হয়। বৈঠকে দীনেনবাবু ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান মৃগেন মাইতি, দুই জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোত্ ঘোষ ও নির্মল ঘোষ, দলের শহর সভাপতি আশিস চক্রবর্তী প্রমুখ। দলীয় সূত্রে খবর, বৈঠকে জেলা সভাপতি বলেন, “আমি যে বুথের কর্মী, সেই বুথের দায়িত্ব আমাকে নিতে হবে। সেই বুথ থেকে দলীয় প্রার্থীকে জেতাতে হবে। আমরা অনেক কষ্টে গণতন্ত্র ফেরত পেয়েছি। এ লড়াই আমাদের লড়াই। এ লড়াই জিততেই হবে।”
জেলার বিভিন্ন ব্লকের নেতা- কর্মীরা বুধবারের ওই বৈঠকে যোগ দেন। পশ্চিম মেদিনীপুরে মেদিনীপুর, ঘাটাল ও ঝাড়গ্রাম-তিনটি লোকসভা আসন রয়েছে। গত লোকসভার ভোটে এই তিনটি আসনই দখল করে বামফ্রন্ট। মেদিনীপুর থেকে জেতেন সিপিআই প্রার্থী প্রবোধ পণ্ডা। ঘাটাল থেকে সিপিআইয়ের গুরুদাস দাশগুপ্ত। ঝাড়গ্রাম থেকে সিপিএমের পুলিনবিহারী বাস্কে। প্রবোধবাবু এ বারও মেদিনীপুর থেকে ফ্রন্টের প্রার্থী হয়েছেন। পুলিনবাবুও ঝাড়গ্রাম থেকে প্রার্থী হয়েছেন। অন্য দিকে, গুরুদাসবাবু অব্যাহতি নেওয়ায় ঘাটাল থেকে ফ্রন্টের প্রার্থী হয়েছেন সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদক সন্তোষ রাণা।
রাজ্যে পালাবদলের আগে পশ্চিম মেদিনীপুর ‘লালদুর্গ’ বলেই পরিচিত ছিল। অবশ্য পালাবদলের পর দ্রুত পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়। একের পর এক এলাকায় সিপিএমের সংগঠনে ধস নামে। বদলে প্রভাব বাড়ে তৃণমূলের। গত বিধানসভা-পঞ্চায়েতের পর পুরভোটেও সাফল্য পেয়েছে শাসক দল। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জেলার তিনটি লোকসভার আসন দখল করতে মরিয়া তৃণমূল।
জেলায় এ বার দু’দফায় ভোট হবে। ৭ মে ঝাড়গ্রাম এবং মেদিনীপুরে। ১২ মে ঘাটালে। হাতে সময় কম। এই পরিস্থিতিতে জেলা কমিটির বৈঠক ডেকে দলের নেতা-কর্মীদের ২১ দফা নির্দেশ দিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি। দীনেনবাবুর নির্দেশ, প্রতিটি বুথে যতগুলো পাড়া আছে, সেই পাড়াগুলোতে নিয়মিত ভাবে বৈঠক করতে হবে। পাড়া কমিটি গঠন করতে হবে। পাড়া কমিটিতে যত বেশি সংখ্যক মানুষকে যুক্ত করা সম্ভব করতে হবে। প্রতিটি বুথে সপ্তাহে এক-দু’দিন মিছিল করতে হবে। প্রতি বুথে আবশ্যিক ভাবে মহিলা কমিটি গঠন করতে হবে। বয়স্ক মানুষ ও গণসংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের নিয়েও একটি প্রচার টিম করতে হবে।
জেলা সভাপতির আরও নির্দেশ, কোনও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে উর্ধ্বতন কমিটিকে না জানিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না। কারণ, এতে দলের ক্ষতি হতে পারে। কোনও রকম প্ররোচনায় পা দেওয়া যাবে না। মা- মাটি- মানুষের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত তিন বছরে যে ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন, তা জনসমক্ষে তুলে ধরতে হবে। পাশাপাশি, নেতা- কর্মীদের আরও ব্যাপক ভাবে জনসংযোগ বাড়ানোরও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy