Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

পুরসভার কর্মী নিয়োগে কারচুপির অভিযোগ, আদালতে পরীক্ষার্থীরা

পুরসভার কর্মী নিয়োগের পরীক্ষায় কারচুপির অভিযোগ তুলে পরীক্ষা বাতিল করার দাবিতে সরব হয়েছিলেন পরীক্ষার্থীরা। গত ১ জুলাই সেই পরীক্ষারই ফল প্রকাশিত হওয়ায় আদালতের দ্বারস্থ পরীক্ষার্থীরা। এগরা পুরসভায় ২০১২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর কর্মী নিয়োগের পরীক্ষা নেওয়া হয়। পরীক্ষা চলাকালীন তৎকালীন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি মামুদ হোসেন অভিযোগ করেন, “ওই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র পরীক্ষার আগের দিন শনিবার থেকেই খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে। তাই অবিলম্বে এই পরীক্ষা বাতিল করা হোক।”

কৌশিক মিশ্র
এগরা শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৪ ০১:৩৯
Share: Save:

পুরসভার কর্মী নিয়োগের পরীক্ষায় কারচুপির অভিযোগ তুলে পরীক্ষা বাতিল করার দাবিতে সরব হয়েছিলেন পরীক্ষার্থীরা। গত ১ জুলাই সেই পরীক্ষারই ফল প্রকাশিত হওয়ায় আদালতের দ্বারস্থ পরীক্ষার্থীরা।

এগরা পুরসভায় ২০১২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর কর্মী নিয়োগের পরীক্ষা নেওয়া হয়। পরীক্ষা চলাকালীন তৎকালীন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি মামুদ হোসেন অভিযোগ করেন, “ওই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র পরীক্ষার আগের দিন শনিবার থেকেই খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে। তাই অবিলম্বে এই পরীক্ষা বাতিল করা হোক।” তাঁর আরও অভিযোগ ছিল, “এগরা পুরসভার তৎকালীন কংগ্রেস পুরপ্রধান স্বপন নায়ক রাতের অন্ধকারে প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন।” স্বপন নায়ক দাবি করেন, “এগরা পুরসভার কর্মী নিয়োগের পরীক্ষা বৈধভাবেই হয়েছে।” এরপর তৎকালীন এগরার মহকুমাশাসক পরীক্ষার তদন্ত করে রির্পোট জেলাশাসকের কাছে পাঠান। ২০১৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজ্য পুর দফতরের জয়েন্ট সেক্রেটারি এগরার পুরপ্রধানকে পাঠানো এক নোটিসে জানতে চান, প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ সত্ত্বেও পুরসভার কর্মী নিয়োগের পরীক্ষা কেন বাতিল করা হয়নি? অন্য একটি নোটিসের মাধ্যমে পুরসভার ‘ডাইরেক্টর অফ লোকাল বডিজ’কে তদন্তকারী দল গঠন করে ওই পরীক্ষার তদন্ত রির্পোট পাঠাতে বলা হয়। এরপর ২০১৩ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর পুরপ্রধান স্বপন নায়ক তৃণমূলে যোগ দেন। ও পুরপ্রধান পদেই তিনি বহাল থাকেন।

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, পরবর্তীকালে রাজ্যের পুর দফতরের পক্ষ থেকে ওই পরীক্ষাকে বৈধ ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এরপরই প্রায় দু’বছর পর গত ১ জুলাই ২০১৪ ওই পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। আগামী ১০ জুলাই পরীক্ষায় সফল প্রার্থীদের ইন্টারভিউয়ে ডাকা হয়েছে। পরীক্ষার ফল বাতিলের দাবিতে পরীক্ষার্থী কেদার কামিল্যা, আবীরলাল মাইতি, উৎপল কুমাররা জেলাশাসকের দ্বারস্থ হন। তাঁদের অভিযোগ, “ওই পরীক্ষাতে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছিল। এগরার মহকুমাশাসকের তদন্তেও পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে বলেও আমরা শুনেছি। তারপরেও কিভাবে পুরসভা ওই পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করল, সেটাই বিস্ময়ের। আমরা এর বিরুদ্ধে রাজ্যের মুখামন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলাশাসক ও আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।” আগামী ৯ জুলাই কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি সৌমিত্র পালের এজলাসে ওই মামলার শুনানির দিন নির্দিষ্ট হয়েছে বলেও তাঁরা জানান। স্বপনবাবু বলেন, “ওই পরীক্ষা বৈধ ছিল বলেই রাজ্য সরকারের পুর দফতর নিয়োগে ছাড়পত্র দিয়েছে। কয়েকজন ইচ্ছাকৃতভাবে এই নিয়োগ আটকানোর চেষ্টা করছে।” তবে এগরা শহর তৃণমূল সভাপতি তপন কর বলেন, “পরীক্ষার্থীদের দাবিই সঠিক। মামুদ হোসেন আগেই ওই পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার কথা বলেছিলেন।” জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ মামুদ হোসেন বলেন, “সব কিছু শুনেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।” পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক অন্তরা আচার্য বলেন, “পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ তদন্ত করে দেখছি।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE