জেলা জুড়ে জোরকদমে সহায়ক মূল্যে ধান কেনায় জোর দিল প্রশাসন। কাজে গতি বাড়াতে ধান কেনার শিবিরে আসছেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। কাল, বুধবার তিনি জঙ্গলমহলে ধান কেনার শিবিরে যোগ দেবেন বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। তারপর প্রতিটি ব্লক অফিসের সামনে শিবির করে ধান কেনা হবে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা খাদ্য নিয়ামক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “ইতিমধ্যে সহায়ক মূল্যে ধান কেনা শুরু হয়েছে। এ বার শিবিরের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে।”
প্রশাসন সহায়ক মূল্যে ধান কেনা শুরুর দাবি করলেও হাতে গোনা দু’-একটি জায়গা ছাড়া জেলার কোথাও সহায়ক মূল্যে ধান কেনা শুরু হয়নি। ফলে ধানের দামও খোলাবাজারে অনেকটাই কম। গত বছর সরকার কুইন্ট্যাল প্রতি ১৩১০ টাকা দরে ধান কিনেছিল চাষিদের থেকে। চলতি বছরে সরকার কুইন্ট্যাল প্রতি দাম নির্ধারণ করেছে ১৩৬০ টাকা। কিন্তু খোলাবাজারে ধানের দাম কুইন্টাল প্রতি ১১০০ থেকে সাড়ে ১১৫০ টাকা। বাধ্য হয়েই অভাবি বিক্রি করতে হচ্ছে চাষিদের। চন্দ্রকোনার চাষি রঞ্জিত দত্তের কথায়, “ব্যবসায়ীদের কাছে ধান বিক্রি করতে গেলে নানা অজুহাত দিচ্ছে। কখনও বলছে ধান ভাল করে শুকোনো হয়নি, কখনও বলছে, এই ধান চাল করতে গেলেই ভেঙে যাবে। নানা অজুহাতে কুইন্ট্যাল প্রতি ১১০০ টাকার বেশি দামই দিতে চাইছে না।”
এখন আলু চাষের সময়। আলু চাষে খরচও বেশি। সেই খরচ জোটাতে ধান বিক্রি করতেই হয়। তাছাড়া সামনেই মকর সংক্রান্তি। গ্রামবাংলার বড় উৎসব। ফলেস কার খরচ জোগাড়েও ধান বিক্রি করতে হয়। ধান চাষি মলয় ঘোষের কথায়, “সরকার এখনও যদি সহায়ক মূল্যে ধান কেনা শুরু না করে তাহলে আমাদের তো বাধ্য হয়েই কম দামে ধান বিক্রি করতে হবে। সরকার বুঝেও দেরি করলে চাষিদের তো সব ধান অভাবী বিক্রিই হয়ে যাবে। পরে সরকার সহায়ক মূল্যে যাঁদের কাছ থেকে ধান কিনবেন, তাঁরা কারা? এতেই তো এক শ্রেণির ব্যবসায়ী মুনাফা লাভ করে।” যদি জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, এবার দ্রুত গতিতে সহয়াক মূল্যে ধান কেনা শুরু হবে। যাতে গতি বাড়ানো যায় সে জন্যই মন্ত্রী নিজেও ধান কেনার শিবিরে যোগ দিতে আসছেন।
যদিও চলতি বছরে ধান কেনার লক্ষ্য মাত্রা অনেকটাই কমে গিয়েছে। গত বছর সরকার যেখানে ৮০ হাজার মেট্রিক টন চাল কিনেছিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা থেকে চলতি বছরে সেখানে লক্ষ্যমাত্রা স্থির হয়েছে মাত্র ৬৭ হাজার মেট্রিক টন। আর বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে কাস্টম মিলড রাইস (সিএমআর) কিনবেন ১ লক্ষ ২ হাজার ১০০ মেট্রিক টন চাল। এগুলি কিনবে কনফেড, বেনফেড, ইসিএসসি-র মতো বিভিন্ন সংস্থা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy