ভোট-পর্ব মিটে গিয়েছে। তবু শাসক-বিরোধী চাপানউতোরে দাঁড়ি পড়েনি। আর সেই চাপানউতোরের কেন্দ্রে ‘স্পর্শকাতর’ কেশপুর।
কেশপুরের ভোট-পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে জেলাশাসক এবং জেলা পুলিশ সুপারকে চিঠি দিয়েছেন ঘাটালের বাম প্রার্থী তথা সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদক সন্তোষ রাণা। সোমবারই তিনি জেলা এই চিঠি দেন। সন্তোষবাবু জানান, লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের দু’দিনের মাথায় তিনি পুলিশকে চিঠি দিয়ে কয়েকটি এলাকায় পুলিশ ক্যাম্প করার অনুরোধ করেছিলেন। চরকাতেও পুলিশ ক্যাম্প করার অনুরোধ করেন। কিছু দিন আগে এই চরকাতেই সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষে এক তৃণমূল নেতা নিহত হন। জখম হন সিপিএমের কয়েকজন। সন্তোষবাবুর অভিযোগ, “গ্রাম এখনও পুরুষশূন্য। মহিলারাও বাড়ি থেকে বেরোতে পারছেন না। সব সময় তৃণমূলের লোকেরা নজরদারি চালাচ্ছে। চরকায় পুলিশ ক্যাম্প হলে হয়তো এ সব ঘটনা এড়ানো যেত।” এই পরিস্থিতিতে কেশপুরে শান্তি ফেরাতে পুলিশ-প্রশাসন যাতে তৎপর হয়, সেই আর্জি জানিয়েই এ দিন চিঠি দিয়েছেন সন্তোষবাবু। পুলিশ জানিয়েছে, কেশপুরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক। বিভিন্ন এলাকায় নজরদারিও চলছে। সন্তোষবাবুর চিঠির প্রেক্ষিতে জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ বলেন, “এমন কোনও চিঠি এখনও হাতে পাইনি। চিঠি পেলে সব দিক খতিয়ে দেখে যদি কিছু পদক্ষেপ করার থাকে করবো।”
চরকা গ্রামেই বাড়ি কেশপুরের এক সময়ের ‘দাপুটে’ সিপিএম নেতা এন্তাজ আলির। সিপিএমের অভিযোগ, কেশপুরের যেকটি এলাকায় তৃণমূল সমর্থন হারাচ্ছে, বেছে বেছে সেই সব এলাকায় শাসকদলের লোকজন সন্ত্রাস চালাচ্ছে। সন্তোষবাবুর দাবি, “বহু গ্রামে পানীয় জলের সংযোগ, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। আশা করি, পুলিশ-প্রশাসন এ ক্ষেত্রে উপযুক্ত পদক্ষেপ করবে।” বাম প্রার্থীর অভিযোগ উড়িয়ে জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ বলেন, “কেশপুরের সর্বত্র শান্তি বজায় রয়েছে। কিছু এলাকায় সিপিএম নতুন করে অশান্তি তৈরির চেষ্টা করছে। তবে মানুষ তা করতে দেবে না।”
কেশপুরে সবমিলিয়ে ২৭৩টি বুথ রয়েছে। সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে এর মধ্যে ২২টি বুথে লিড পেয়েছে বামেরা। বাকি ২৫১টি বুথেই তৃণমূলের লিড রয়েছে। হাতে গোনা যে ক’টি এলাকায় তৃণমূল এগিয়ে নেই, তার মধ্যেই রয়েছে চরকা-কলাগ্রাম-মহিষদা-গোপীনাথবাটির মতো এলাকা। লোকসভার ফলাফল বলছে, ২৪টি বুথে ৯০ শতাংশেরও বেশি ভোট পেয়েছে তৃণমূল। এই সংখ্যক বুথে বামেদের প্রাপ্ত ভোট ০ থেকে ১০-এর মধ্যে। ৮১টি বুথে বামেদের প্রাপ্ত ভোট ১১ থেকে ৫০-এর মধ্যে। বামেদের অভিযোগ, অবাধ ভোট হয়নি বলেই এই ফল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy