Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

ইড়পালা পর্যন্ত রেলপথ কেন, প্রশ্ন ঘাটালবাসীর

প্রত্যাশা ছিল ঘাটাল-পাঁশকুড়া লাইনের অর্থের অনুমোদন মিলবে। কিন্তু, মিলল আরামবাগ-ইড়পালা নতুন রেল লাইনের অর্থ। ইড়পালা এলাকাটি আরামবাগ সংলগ্ন হলেও ঘাটাল থানা এলাকার মধ্যে পড়ে। একই সঙ্গে এলাকাটি ঘাটালের এক প্রান্তে হওয়ায় মহকুমার একটা বড় অংশের মানুষ রেলের সুবিধে ততটা নিতে পারবেন না। ফলে রেলমন্ত্রীর ঘোষণায় ততটা খুশি হতে পারছেন না সিংহ ভাগ ঘাটালবাসী।

অভিজিৎ চক্রবর্তী
ঘাটাল শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৫১
Share: Save:

প্রত্যাশা ছিল ঘাটাল-পাঁশকুড়া লাইনের অর্থের অনুমোদন মিলবে। কিন্তু, মিলল আরামবাগ-ইড়পালা নতুন রেল লাইনের অর্থ। ইড়পালা এলাকাটি আরামবাগ সংলগ্ন হলেও ঘাটাল থানা এলাকার মধ্যে পড়ে। একই সঙ্গে এলাকাটি ঘাটালের এক প্রান্তে হওয়ায় মহকুমার একটা বড় অংশের মানুষ রেলের সুবিধে ততটা নিতে পারবেন না। ফলে রেলমন্ত্রীর ঘোষণায় ততটা খুশি হতে পারছেন না সিংহ ভাগ ঘাটালবাসী।

বৃহস্পতিবার রেল বাজেটে রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু আরামবাগ-ইড়পালা নতুন লাইন নির্মাণে অর্থ বরাদ্দ করেছেন। তা মেনে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসেংযাগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র শুক্রবার বলেন, “ওই রেলপথের জন্য ১২ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। দ্রুত কাজ শুরু হবে।”

ঘাটাল মহকুমা এলাকার বাসিন্দাদের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম সড়ক পথ। এলাকা দিয়ে গিয়েছে ঘাটাল-পাঁশকুড়া ও ঘাটাল-চন্দ্রকোনা রাজ্য সড়ক। কাছাকাছি স্টেশন বলতে ৩৪ কিলোমিটার দূরে পাঁশকুড়া এবং ৩৫ কিলোমিটার দূরে চন্দ্রকোনা রোড। কৃষিপ্রধান এই জনপদের মানুষ দীর্ঘ দিন ধরেই রেল লাইনের জন্য বহু আবেদন-নিবেদন জানিয়ে আসছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন পাঁশকুড়া-ঘাটাল নতুন রেললাইন চালুর প্রতিশ্রুতি দেন। মুকুল রায় রেলমন্ত্রী থাকার সময়েও ঘাটালে এসে ঘাটাল-পাঁশকুড়া এবং ঘাটাল-চন্দ্রকোনা রোড এই দু’টি লাইন দ্রুত শুরু হবে জানিয়েছিলেন। সেই ঘোষণায় স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন এলাকাবাসী। কিন্তু, আংশিক দাবিপূরণ হওয়ায় তাঁরা কিছুটা হতাশ।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, ঘাটাল শহর থেকে ইড়পালার দূরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার। ইড়পালায় স্টেশন হলে ঘাটালের দশটি পঞ্চায়েতের সাতটি পঞ্চায়েতের মানুষের সে রকম কোনও সুবিধা হবে না। চন্দ্রকোনা ও দাসপুর থানা এলাকার বাসিন্দাদের কোনও সুবিধে হবে না বলেও তাঁরা জানাচ্ছেন।

রেল সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে আরামবাগ মহকুমার গোঘাট হয়ে ইড়পালা পর্যন্ত ট্রেন আসবে। এ নিয়ে শুধু সমীক্ষা হয়েছে। জমি অধিগ্রহণ বা ঠিক কোন এলাকা দিয়ে লাইন পাতা হবে, তা চূড়ান্ত হয়নি। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, বাজেটের কপি আসার পরই নতুন করে আরও একবার সমীক্ষা করে কাজ শুরু করে দেওয়া হবে।

তবে খুশি ইড়পালার বাসিন্দারা। এ দিন গ্রামে যেতেই দেখা গেল, পাড়ার অলি-গলি থেকে চায়ের দোকান— সর্বত্রই নতুন লাইন নিয়ে আলোচনা। রাজ্যের মধ্যে হাতে গোনা নতুন রেল লাইন নির্মাণে ইড়পালার নাম কাগজে দেখতে পেয়ে খুশিতে ইড়পালার মতো খুশিতে ডগমগ সুলতানপুর, কোমরা, খাসবাড়-সহ সংলগ্ন এলাকা। ইড়পালার বাসিন্দা গৃহবধূ মালতী চক্রবর্তী, কৃষক নিমাই ঘোষ, কলেজ ছাত্র অপু সরকারেরা বলেন, “আমরা খুশি। কিন্তু, ঘাটাল পর্যন্ত হলে আমাদেরও ভাল হত।”

খড়্গপুর-হাওড়া রেলওয়ে প্যাসেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য নারায়ণ নায়েক বলেন, “আমাদের বহু আন্দোলনের ফসল এই লাইন। তবে ইড়পালার লাইনটিকে ঘাটাল পর্যন্ত এবং পাঁশকুড়া থেকে ঘাটাল ও চন্দ্রকোনা রোড পর্যন্ত করার জন্য রেলের জন্য আন্দোলন চলবেই।” তৃণমূল নেতা তথা ঘাটাল পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি দিলীপ মাঝি অবশ্য প্রশ্ন, “এলাকায় রেল লাইনের স্বপ্ন দলের মন্ত্রীরাই দেখিয়েছেন। এই সরকার শুধু পুরানো প্রকল্পের জন্য টাকা বরাদ্দ করেই দায় এড়িয়েছে। ওই লাইন সম্প্রসারণ না হলে কী লাভ?”

অন্য বিষয়গুলি:

rail line irpala ghatal abhijit chakraborty
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE