শুভদীপ মিস্ত্রি। — নিজস্ব চিত্র।
বাংলাদেশে পড়াশোনা করতে গিয়েছিলেন উলুবেড়িয়ার যুবক। কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন চলছে সে দেশে। প্রাণ হাতে কোনও মতে সে দেশ থেকে বাড়ি ফিরলেন ডাক্তারির ছাত্র। জানালেন নিজের অভিজ্ঞতার কথা। ওই ছাত্রের দাবি, ভারতীয় দূতাবাস কোনও সাহায্য করেনি।
উলুবেড়িয়ার লক গেট পাড়ার বাসিন্দা শুভদীপ মিস্ত্রি বাংলাদেশে ডাক্তারি পড়তে গিয়েছিলেন বাংলাদেশে। তৃতীয় বর্ষে পড়াশোনা করেন তিনি। গত কয়েক দিন ধরে উত্তাল বাংলাদেশ। সে দেশের পরিস্থিতি কেমন, তা আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছেন শুভদীপ। তাঁর কথায়, ‘‘চার দিকে বোমা, গুলির শব্দ। আগুন জ্বলছে। এই পরিস্থিতিতে আতঙ্কে দিন কাটছিল।’’ অবশেষে রবিবার রাতে বাড়ি ফিরে আসেন শুভদীর।
ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানাতে গিয়ে মাঝে মধ্যেই চমকে উঠছেন শুভদীপ। তিনি বলেন, ‘‘কখনও কখনও চপার থেকে গুলিবর্ষণের আওয়াজ পেয়েছি। এখনও কানে বাজছে। চারি দিকে জ্বলছে গাড়ি, বাইক, বাড়িঘর। গোটা ঢাকা শহর জুড়ে শুধু আতঙ্ক। তার মধ্যেই মানুষ জন লাঠি, হকির ব্যাট হাতে দৌড়দৌড়ি করছেন।’’ শুভদীপ জানিয়েছেন, বাড়ি থেকে বেরোতে ভয় পাচ্ছিলেন, পাছে সেনাবাহিনী গুলি করে দেয়। কারণ, তিনি যে ভারতীয়, তা তো বুঝতে পারবে না। খাবার কিনতে যেতেও ভয় হচ্ছিল। তাঁর কথায়, ‘‘বার বার বলা হয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে, কিন্তু স্বাভাবিক হয়নি।’’
শুভদীপের দাবি, বাড়ি ফেরার বিষয়ে ভারতীয় দূতাবাস কোনও সাহায্য করেনি। তিনি বলেন, ‘‘আমি ৩০ থেকে ৪০ বার ফোন করেছি। বেশির ভাগ সময়ে ফোনে কাউকে পাইনি। যখন পেয়েছি, ১০ জন ১০ রকমের কথা বলেছেন।’’ শুভদীপ দাবি করেছেন, বাংলাদেশে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ। অথচ ভারতীয় দূতাবাসের তরফে অনলাইনে বিমানের টিকিট কাটতে বলা হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘দূতাবাসের তরফে বলা হয়, টিকিট কাটুন, আমরা বিমানবন্দরে পৌঁছে দেব। নেট পরিষেবা নেই। এই অবস্থায় টিকিট কাটব কী ভাবে? ওঁরা শুধু বলে গিয়েছেন, আমরা দেখছি।’’ শুভদীপ দাবি করেন, শেষ পর্যন্ত নিজেরাই নিজেদের দায়িত্বে বাংলাদেশ থেকে এ দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমার যখন ফিরে আসার বিষয়টি জানাই, তখন ভারতীয় দূতাবাস হুঁশিয়ারি দেয়। বলে, আপনাদের যদি কিছু হয়, তার দায়িত্ব আমরা নেব না।’’
শুভদীপের দাবি, কলেজের প্রধান শিক্ষক এবং উঁচু ক্লাসে পড়ুয়াদের সাহায্যে তাঁরা বেরিয়ে এসেছেন। প্রধান শিক্ষক একটি চিঠি লিখে দিয়েছিলেন তাঁদের। সেই চিঠি দেখে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী এবং পুলিশ তাঁদের ছেড়ে দেয়। তাঁরা ঢাকা থেকে প্রথমে পায়ে হেঁটে এবং তার পর ফেরি করে নদী পেরিয়ে সীমান্তে আসেন। সেখান থেকে শিয়ালদহ হয়ে উলুবেড়িয়ার বাড়িতে ফিরেছেন। ওই একই কলেজের ১০৬ জন ভারতীয় পড়ুয়া এক সঙ্গে ফিরেছেন। রবিবার রাতে ছেলে বাড়ি ফেরায় স্বস্তি পেয়েছে শুভদীপের পরিবার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy