Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
JEE

কেন্দ্রে পৌঁছতে নাজেহাল, পরীক্ষা দিলেন না অনেকে

কলকাতা, শিলিগুড়ি, দুর্গাপুরের মতো শহরেই মূলত পরীক্ষা কেন্দ্র হয়েছে। তার বাইরে কেন্দ্র হাতে গোনা। ফলে, বহু পথ উজিয়ে পরীক্ষার্থীদের আসতে হয়েছে।

পরীক্ষাকেন্দ্রে চলছে স্বাস্থ্য পরীক্ষা।—ছবি এএফপি।

পরীক্ষাকেন্দ্রে চলছে স্বাস্থ্য পরীক্ষা।—ছবি এএফপি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৫:৫৭
Share: Save:

করোনার কারণে ট্রেন বন্ধ। বাস কম। তার উপর সকাল থেকেই বৃষ্টি।

এই ত্র্যহস্পর্শেই মঙ্গলবার, সর্বভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারিং প্রবেশিকা পরীক্ষা ‘জেইই-মেন’-এর প্রথম দিন কাটল এ রাজ্যের পড়ুয়াদের। পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছতে কেউ ভোররাতে বাবার মোটরবাইকে রওনা দিলেন, কেউ গাড়ি ভাড়া গুনলেন কয়েক হাজার টাকা, কারও আবার পরীক্ষায় বসাই হল না।

কলকাতা, শিলিগুড়ি, দুর্গাপুরের মতো শহরেই মূলত পরীক্ষা কেন্দ্র হয়েছে। তার বাইরে কেন্দ্র হাতে গোনা। ফলে, বহু পথ উজিয়ে পরীক্ষার্থীদের আসতে হয়েছে। কলকাতার পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিতে তাপমাত্রা মাপা, স্যানিটাইজ়ার দিয়ে হাত ধোয়া, মাস্ক পরা, দূরত্ব রেখে বসার মতো স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়েছে। তবে বৃষ্টিতে বাইরে অপেক্ষারত অভিভাবকেরা মাথা বাঁচাতে সামাজিক দূরত্ব ভুলেছেন।

মালদহের পরীক্ষার্থীদের কলকাতায় আসতে হয়েছে। সোমবার, লকডাউনের রাতে কলকাতাগামী কিছু বাস বাতিল হওয়ায় ৭-৮ হাজার টাকায় গাড়ি ভাড়া করেছেন অনেকে। প্রশাসনের অনুমতি পেতেও নাজেহাল হতে হয়েছে। উত্তরবঙ্গের বাকি জেলার পরীক্ষার্থীরা শিলিগুড়িতে পরীক্ষা দিয়েছেন হোটেলে বা আত্মীয়ের বাড়িতে থেকে, কিংবা এসেছেন ভাড়ার গাড়িতে। কোচবিহার থেকে চার হাজার টাকায় গাড়ি ভাড়া করে আসা অর্চিতা দত্তের মা প্রতিমা বলেন, ‘‘আরও কিছু দিন পরে পরীক্ষা হলে ভাল হত।’’

দুই ২৪ পরগনা, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, মুর্শিদাবাদের পরীক্ষার্থীরা এসেছেন কলকাতায়। সল্টলেকে একটি বেসরকারি তথ্যপ্রযুক্তি অফিসের পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছতে পৌনে চারটেয় অন্ধকার থাকতেই বাবার বাইকে চেপে রওনা দেন ঘাটালের রূপক সাহা। বাইকের পিছনে জলের বোতল, মুড়ি আর আলুভাজার ব্যাগ বেঁধে নিয়েছিলেন রূপকের বাবা অশোক সাহা। তাঁর বক্তব্য, ‘‘করোনার মধ্যে বাইরে খাওয়া ঝুঁকির। তাই খাবার সঙ্গে এনেছি।’’

নদিয়ার কল্যাণীতে শিল্পাঞ্চল স্টেশনের কাছে একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে নির্বিঘ্নেই পরীক্ষা মিটেছে। তবে অনেক জেলার ছাত্রছাত্রীরা যাতায়াতের সমস্যায় পরীক্ষাই দিতে পারেননি। যেমন বীরভূমের মহম্মদবাজার ব্লকের আঙ্গারগড়িয়ার এক পরীক্ষার্থী জানালেন, বাসে দুর্গাপুরে পরীক্ষা দিতে গেলে ফিরতে পারতেন না। কারণ ওই সময় সিউড়ি ফেরার বাস নেই। আর গাড়ি ভাড়ার সামর্থ্য নেই। তাই পরীক্ষা দেননি। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের রাহুল রায় বলেন, ‘‘দু’দিন পরীক্ষা। দু’টো দিনই গাড়ি ভাড়া করে বর্ধমানে যাওয়া সম্ভব নয়। একটি পরীক্ষা দেব না ভাবছি।’’

মেদিনীপুরের প্রান্তিকা সাউ, ঝাড়গ্রামের অর্পণ সেনাপতিরা আবার করোনার ভয়ে পরীক্ষা দিতে যাননি। দু’জনেই বলেন, ‘‘কলকাতায় গিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার ঝুঁকি নিলাম না।’’ বর্ধমান শহরে দু’টি ও গুসকরায় একটি কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীরা এসেছেন মূলত কয়েক জন মিলে গাড়ি ভাড়া করে। কালনার সীমা ঘোষ, পূর্বস্থলীর রূপম মিত্রেরা বলেন, ‘‘ট্রেন চলছে না। বাসের ভরসায় থাকা সম্ভব নয়।’’

দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার এমডি কিরণকুমার গোদালা অবশ্য জানান, দুর্গাপুর, বেলঘরিয়া ও জঙ্গলমহল ডিভিশনে ৫৫৭টি রুটে বাস চলেছে। দুর্গাপুরে সকালে সিটি সার্ভিস বাসও চলেছে।

অন্য বিষয়গুলি:

JEE Examination
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy