সাইকেল চোর সন্দেহে এক যুবককে পিটিয়ে অজ্ঞান করে রেললাইনের ধারে ফেলে গেল জনতা।
প্রায় দেড় ঘণ্টা তিনি সেখানেই পড়ে ছিলেন। কেউ ফিরেও তাকায়নি। পরে রেলপুলিশ গিয়ে তাঁকে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
শুক্রবার দুপুরে পুরুলিয়ার আদ্রা স্টেশনের কাছে ঘটনাটি ঘটে। স্বনিযুক্ত আইনরক্ষকদের মধ্যে এলাকার লোকজন তো বটেই, রেলকর্মীরাও ছিলেন বলে অভিযোগ। তবে শনিবার রাত পর্যন্ত এই ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি। এই ‘নিষ্ক্রিয়তা’ অবশ্য নতুন নয়। এর আগে বহরমপুর, বোলপুরের মতো বহু জায়গাতেই গণপ্রহারের ঘটনায় পুলিশ কাউকে ধরেনি।
প্রহৃত যুবকের নাম রঘু বাউরি। বয়স বছর পঁয়ত্রিশ। বাড়ি পুরুলিয়ারই সাঁওতালডিহি থানার পাহাড়িগোড়াতে। রেলের এক ঠিকাদারের অধীনে দিনমজুরের কাজ করেন বলে তিনি জানিয়েছেন। আদ্রা স্টেশনের কাছে পূর্ব কেবিনের কাছে রেলকর্মীদের সাইকেল রাখার জায়গায় ঘোরাঘুরি করতে দেখে এলাকার কিছু লোকজন তাঁকে ধরে। এর আগে ওই জায়গা থেকে কয়েক বার সাইকেল চুরি হয়েছে। কিন্তু রঘুকে কথা বলার বিশেষ সুযোগই দেয়নি জনতা।
শনিবার হাসপাতালে শুয়ে রঘু বলেন, ‘‘কয়েক দিন ধরেই বাঁকুড়ায় ঠিকাশ্রমিকের কাজ করতে যাচ্ছিলাম। শুক্রবার গিয়ে কাজ পাইনি। তাই ফিরে আসছিলাম। আদ্রা স্টেশনে নেমে শৌচকর্ম করতে যাই। সাইকেল পুলের পাশে যেতেই লোকজন ‘চোর’ বলে মারধর শুরু করে।’’ বেধড়ক মার খেয়ে রঘু অজ্ঞান হয়ে যান। তত ক্ষণে জনতার হাতের সুখ হয়ে গিয়েছে। সংজ্ঞাহীন রঘুকে রেললাইনের ধারে ফেলে চম্পট দেয় তারা। পরে আদ্রা স্টেশন থেকে রেলপুলিশ (জিআরপি) গিয়ে তাঁকে তুলে রেল হাসপাতালে নিয়ে যায়।
রেল হাসপাতালের সার্জিক্যাল মেল ওয়ার্ড সূত্রে জানানো হয়েছে, রঘুর মাথায় সেলাই দিতে হয়েছে। এ ছাড়া দেহের বহু জায়গায় চোট রয়েছে। আদ্রার জিআরপি থানার ওসি বাসুদেব মণ্ডল বলেন, ‘‘চোর সন্দেহে ওই যুবককে গণপ্রহার করা হয়েছে। কিছুটা সুস্থ হলে ওঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। কেউ খবর না-দেওয়াতেই উনি ঘণ্টাখানেক লাইনের পাশে পড়েছিলেন।’’ রঘুর সঙ্গে কথা বলার আগে কাউকে গ্রেফতার করা বা অন্য কোনও ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব নয় বলে ওসি দাবি করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy