মুর্শিদাবাদের নিমতিতা রেল স্টেশনের ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে বিস্ফোরণ। —ফাইল ছবি।
তার বিরুদ্ধে নিমতিতা বিস্ফোরণের ঘটনায় বিস্ফোরক সরবরাহ করার অভিযোগ রয়েছে। ওই অভিযোগে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা বা এনআইএ তাকে গ্রেফতারও করেছে। বর্তমানে ওই মামলায় সে বিচারাধীন বন্দি। অভিযোগ, জেলে বসেই বিভিন্ন জায়গায় বিস্ফোরক সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করেছিল ওই বন্দি। তার নির্দেশেই রাজ্যের বাইরে থেকে বোমা তৈরির বিস্ফোরক পৌঁছে যাচ্ছিল রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। জেলে বসে ওই বিস্ফোরক সরবরাহ পরিচালনা করার অভিযোগে ওই জেলবন্দিকে গ্রেফতার করে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ। পুলিশ জানিয়েছে, প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি ওই দুষ্কৃতীর নাম ইশা শেখ। বৃহস্পতিবার জঙ্গিপুর আদালতের নির্দেশে সাত দিনের জন্য ইশাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে এসটিএফ। কী ভাবে সে জেলে বসে ওই বিস্ফোরকের সামগ্রী সরবরাহের কাজে যুক্ত ছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে এসটিএফ জানিয়েছে। জেলে তাকে কেউ মদত দিত কি না, সেটিও জেলের তরফে খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, ২০২১ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি মুর্শিদাবাদের নিমতিতা রেল স্টেশনের ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। তাতে গুরুতর জখম হন তৎকালীন রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্য জাকির হোসেন। ওই বিস্ফোরণে মোট ২৭ জন আহত হন। ওই ঘটনায় বিস্ফোরক সরবরাহ করেছিল ইশা। তদন্তে নেমে ইশাকে প্রায় এক বছর পরে গ্রেফতার করে এনআইএ। তার পর থেকে জেলেই ছিল সে। উল্লেখ্য, গত বছর উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরের মোচপোলে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল। যাতে মৃত্যু হয় ন’জনের। সূত্রের দাবি, ওই বিস্ফোরণে ইশার ছেলে এবং দাদা-সহ তার পরিবারের চার জনের মৃত্যু হয়েছিল।
কেন তাকে গ্রেফতার করল এসটিএফ? গোয়েন্দারা জানান, গত মাসে মুর্শিদাবাদের সুতি থানা এলাকার দু’টি পৃথক ঘটনায় রাজ্য পুলিশের এসটিএফ যথাক্রমে ৫৮ কিলোগ্রাম এবং এক কুইন্টাল বোমা তৈরির বিস্ফোরক উদ্ধার করে। গ্রেফতার করা হয় এক টোটো চালক-সহ দু’জনকে। অভিযোগ, ওই বিস্ফোরক রাজ্যের বাইরে থেকে মুর্শিদাবাদে বোমা তৈরির জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। এক তদন্তকারী অফিসার জানান, ওই দুই ঘটনায় ধৃত আকবর বিশ্বাস এবং রাজু শেখকে জেরা করে জানা যায়, ওই বিস্ফোরক সরবরাহ করার পিছনে রয়েছে ইশা। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, জেলে বসেই সে ওই বিস্ফোরক বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দিচ্ছে। এর পরেই তাকে ফের গ্রেফতার করা হয়। কার নির্দেশে সে এই কাজ করছে বা তার পিছনে কারা রয়েছে, তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে ওই গোয়েন্দা কর্তা জানান।
তদন্তকারীরা জানান, দশ বছরের বেশি সময় ধরে বেআইনি ভাবে ইশা বোমা তৈরির বিস্ফোরক সামগ্রী সরবরাহ করে আসছে। গ্রেফতার হওয়ার পরেও সে জেলে বসেই ওই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy