নোট বাতিলের বাজারে কৃষিমেলার খরচ কমানো হয়েছে বলে সরকারি সিদ্ধান্তের কথা প্রকাশ্যে এসে গিয়েছিল। অন্যান্য বছরের চেয়ে প্রায় ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ কমানো হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন খোদ কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু। এমন কথা প্রকাশ্যে বলার জন্য দলের অন্দরে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে মৃদু ভর্ৎসনা শুনতে হল কৃষিমন্ত্রীকে।
ব্লকে ব্লকে যে কৃষিমেলার আয়োজন করে রাজ্য সরকার, এ বার তার খরচ ও বহরে রাশ টানা হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন পূর্ণেন্দুবাবু। তিনি বলেছিলেন, মেলার জন্য প্রস্তাবিত ২ লক্ষ ২০ হাজার টাকার বরাদ্দ কমিয়ে ১ লক্ষ ৮২ হাজার টাকা করা হয়েছে। শাসক শিবির সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার তপসিয়ার তৃণমূল ভবনে দলীয় বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী পূর্ণেন্দুবাবুকে বলেন, কৃষিমেলার বরাদ্দ একটুও কমানো হয়নি। কেন তিনি ভুল তথ্য দিয়েছেন, তার কারণও জানতে চান কৃষিমন্ত্রীর কাছে। বৈঠকের পরেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কৃষিমেলার খরচ কমানো হয়েছে বলে সংবাদপত্রে বেরিয়েছে। কৃষিমেলার টাকা কমানো হয়নি। ১ লক্ষ ৮২ হাজার টাকা বরাদ্দ ছিল। সেটাই আছে।’’
নোট বাতিলের সঙ্কটে সরকারি খরতে রাশ টানার কথা স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীই আগে বলেছিলেন। কিন্তু বরাবরই মেলা-উৎসবকে এ সবের বাইরে রেখেছেন। কয়েক দিন আগে তিনি নিজেই পার্ক স্ট্রিটের অ্যালেন পার্কে ‘ক্রিসমাস ফেস্টিভ্যাল’-এর উদ্বোধন করেছেন। তার উপরে কৃষিমেলা গ্রামীণ এলাকায় কৃষকদের সহায়তা করে থাকে। নোট বাতিলে যে কৃষি সমাজ বড় রকমের ধাক্কা খেয়েছে বলে মমতা প্রতিদিন সরব। তাই কৃষিমেলার খরচ কমানোর খবরে ভুল বার্তা যেতে পারে বলে আশঙ্কা থেকেই কৃষিমন্ত্রীকে ভর্ৎসনা শুনতে হয়েছে বলে তৃণমূলের একটি সূত্রের ব্যাখ্যা।
নোট বাতিলের জেরে হয়রানির শিকার হয়ে যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে রাজারহাট-গোপালপুর বিধানসভা এলাকায় সম্প্রতি দু’দিনের ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন হচ্ছিল। ওই টুর্নামেন্টের পোস্টারে ‘মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণা’র কথা ঘোষণার পাশাপাশি স্থানীয় বিধায়ক পূর্ণেন্দুবাবুরও ছবি ছিল। তাঁকে উদ্যোক্তা হিসাবেও দেখানো হয়েছিল। কেন এমন ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন, সংবাদমাধ্যমের কাছে তার কারণ ব্যাখ্যা করেছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ তথা আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভানেত্রী দোলা সেন। প্রতিযোগিতা এমন পোস্টার দেখে ক্ষুব্ধ হন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর নির্দেশেই পোস্টার খুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কেন অনুমতি ছাড়া এ ভাবে তাঁর ছবি ব্যবহার করে প্রতিযোগিতার আয়োজন হচ্ছিল, তা নিয়ে দলের বৈঠকে এ দিন দোলাকেও তিরস্কার করেন মমতা। তিরস্কারের মাধ্যমেই ভবিষ্যতের জন্য দলের সব নেতা-কর্মীকে সতর্ক বার্তা দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy