সদ্যোজাত শিশুর আঙুলে কোপ মারা নার্সের চাকরি চলে যাওয়া উচিত বলে জানিয়েছিলেন আগেই। বৃহস্পতিবার দুপুরে এসএসকেএম হাসপাতালে গিয়ে আঙুল খোয়ানো নবজাতককে দেখেও এলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার বাবা-মাকে আশ্বাস দিলেন, শিশুটির সব রকম চিকিৎসার দায়িত্ব নিচ্ছে তাঁর সরকার। এসএসকেএম হাসপাতাল অবশ্য এ দিন জানিয়ে দিয়েছে, আঙুল জোড়া লাগানো কোনও ভাবেই সম্ভব নয়।
চিকিৎসকদের বক্তব্য, সদ্যোজাত শিশুর ক্ষেত্রে এই ধরনের অস্ত্রোপচার সফল হওয়ার আশা থাকে না বললেই চলে। তা ছাড়া ওই শিশুর কাটা আঙুলটি যথাযথ ভাবে সংরক্ষণ করা হয়নি। তা ছাড়া বালুরঘাট থেকে দীর্ঘ পথ পেরিয়ে শিশুটিকে আনাও হয়েছে অনেক দেরিতে। বিভাগের এক চিকিৎসক বলেন, ‘‘এই বয়সে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ খুবই ছোট থাকে। শিরা-উপশিরাগুলিও এত সরু হয় যে, অস্ত্রোপচার করে অঙ্গ জোড়া লাগানো কার্যত অসম্ভব। কব্জির উপরের কোনও অংশ হলে তবু চেষ্টা করে দেখা যেত। আপাতত শিশুটির ক্ষত শুকিয়ে আসছে। বয়স বাড়ার পরে তার হারানো আঙুলে কসমেটিক সার্জারির কথা ভাবা যেতে পারে।’’
নবজাতকের আঙুল কাটার ঘটনায় অভিযুক্ত নার্স গ্রেফতার না-হওয়ায় পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠছে। জেলার তৃণমূল নেতা থেকে শুরু করে জেলা সভাধিপতি পর্যন্ত সকলেই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নিতে বলেছেন পুলিশকে। তবু ঘটনার চার দিন পরেও অভিযুক্ত নার্স রাখি সরকার কেন অধরা, তার উত্তর দিতে পারেনি পুলিশ। তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক প্রবীর রায় বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী যে-ভাবে ওই ঘটনায় হস্তক্ষেপ করেছেন, তার পরে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করতে পুলিশের তো গড়িমসি করার কথাই নয়। অভিযুক্ত নার্সকে গ্রেফতার করে মানুষের কাছে পুলিশের বিশ্বাসযোগ্যতা ফেরাতে হবে।’’
এ দিন দক্ষিণ দিনাজপুরের সভাধিপতি ললিতা টিগ্গা বালুরঘাটে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে পাশে বসিয়ে ওই শিশুর পরিবারকে জেলা পরিষদের তরফ থেকে ১০ হাজার টাকা সাহায্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। রবিবার রাতে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট হাসপাতালে নবজাতকের আঙুল কাটার পরের দিন শিশুটির জেঠু বিজন মণ্ডল অভিযুক্ত নার্সকে গ্রেফতার করে কড়া শাস্তির দাবি জানিয়েছিলেন। তার পরেই মামলাটির মূল তদন্তভার বালুরঘাট থানার আইসি-কে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার বালুরঘাট থানার আইসি বিপুল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা একাধিক বার অভিযুক্তের বাড়িতে হানা দিয়েছি। তাঁকে পাওয়া যাচ্ছে না। অভিযুক্ত নার্স নিজের মোবাইল বাড়িতে রেখে অন্য কোথাও পালিয়ে গিয়েছেন।’’ জেলার পুলিশ সুপার এস ঝাঝারিয়া বলেন, ‘‘অভিযুক্তকে ধরার সব রকম চেষ্টা চলছে।’’
অভিযুক্ত নার্সের আগাম জামিনের জন্য তাঁর স্বামী উত্তম বসাককে এ দিন বালুরঘাট আদালতে আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। পরে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের তিন বছরের যমজ মেয়ে রয়েছে। বাচ্চা দু’টি মা ছাড়া থাকতে পারবে না বলেই আগাম জামিনের চেষ্টা করছি। আমি বেকার। পরিস্থিতি বিচার করে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন, রাখিকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করলে সংসার ভেসে যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy