বাংলায় রামনবমীর উদ্যাপন বিক্ষিপ্ত ভাবে আগেও হয়েছে। কিন্তু এ বার পরিকল্পিত ভাবে উদ্যাপনের মাত্রা চড়িয়ে গেরুয়া শিবির মেরুকরণের রাজনীতিতে নেমে পড়ায় ঝাঁঝিয়ে উঠলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবারকে কাঠগড়ায় তুলে বুধবার প্রশ্ন করলেন, ‘‘রামনবমী কি তোমাদের? বাসন্তী পুজো আমরা করিনি? অন্নপূর্ণা পুজো করিনি! এখন নতুন করে ঢং হচ্ছে?’’
মমতার অভিযোগ, বাংলায় বিভাজনের বিষ ছড়াচ্ছে বিজেপি। বাংলায় বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ তৈরি করতে চাইছে। তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপি মাছের টুকরোর মতো সমাজকে ভাঙতে চাইছে। কিন্তু মাছটা রান্না করে খাওয়ার জন্য। দেশটা নয়।’’
উত্তরপ্রদেশে গেরুয়া ঝড়ের পর বাংলায় সঙ্ঘ পরিবার যে এ বছর রামনবমী উদ্যাপনের মাত্রা বাড়াতে চাইছে, তার ইঙ্গিত ছিলই। মঙ্গলবার রাতে গেরুয়া শিবির জানিয়েছিল, কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় বাইশটি মিছিল বের করবে তারা। অন্যত্রও রামনবমীর মিছিলে ভিড় বাড়ান সঙ্ঘের কর্মীরা। কোথাও মোটরবাইক নিয়ে। কোথাও তাঁদের হাতে ছিল অস্ত্রও। এই আগ্রাসী মূর্তি দেখে কিছু এলাকায় ধন্ধে পড়ে যায় তৃণমূল। ফলে শিলিগুড়ি, হাওড়া, উত্তর কলকাতার একাংশে তারা রামনবমীর মিছিল করে। বীরভূম জুড়ে হনুমান পুজো করেন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা।
আরও পড়ুন: মমতা কি মোদীর মুখোমুখি হবে?
অনেকের মতে, বিষয়টির নেপথ্যে বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবারের সুস্পষ্ট কৌশল রয়েছে। বাংলায় জমি দখলে মেরুকরণের আবহ তৈরিতে নেমেছে তারা। এবং তাতে বিপদ দেখে এখন পাল্টা আক্রমণাত্মক হয়েছেন মমতা। তবে গেরুয়ার বাড়বাড়ন্তের জন্য তৃণমূলকেই দায়ী করছে বাম-কংগ্রেস। তাদের বক্তব্য, মমতা ভেবেছিলেন বাংলাকে বিরোধী শূন্য করে দেবেন। কিন্তু বিরোধী দলগুলিকে খতম করলে আরও বিপজ্জনক শক্তির মাথা তোলার আশঙ্কা থাকেই।
বিপদের গন্ধ শাসক দল যে পাচ্ছে, তা মমতার আক্রমণের তীব্রতাতেই স্পষ্ট। বাঁকুড়ার সুনুকপাহাড়িতে তিনি বলেন, ‘‘এখন দেখছি পার্টির পতাকায় ‘ওঁ’ লাগিয়ে নিয়েছে। কেন ‘ওঁ’ কি তোমার জমিদারি নাকি? ‘ওঁ’ এর সঙ্গে বিজেপি-র কোনও সম্পর্ক নেই।’’
তবে মুখ্যমন্ত্রীর এই আক্রমণেও খুশি বিজেপি নেতারা। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘তৃণমূল যে আমাদের ভয় পাচ্ছে, এর পরেও বলে দিতে হবে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy