অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের। ছবি: টুইটার
এ রাজ্যে এনআরসি-র প্রয়োজন নেই, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অসমে এনআরসি থেকে বাদ পড়া মানুষদের নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন তিনি। তবে, রাজীব কুমার নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে স্পষ্টতই তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। ওই প্রশ্নকে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ বলে ব্যাখ্যা করেন।
বৃহস্পতিবার, অমিত শাহ ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক ঘিরে আগ্রহের পারদ চড়ছিল। ঠিক যেমনটা দেখা গিয়েছিল বুধবার, মোদী-মমতা বৈঠকের আগে। কলকাতায় গোয়েন্দা প্রধান রাজীব কুমারকে খুঁজছে সিবিআই। এই আবহেই দিল্লি সফরে মুখ্যমন্ত্রী। কী নিয়ে দু’জনের আলোচনা হল তা নিয়ে উৎসুক ছিল সব মহলই।
বুধবার ঝাড়খণ্ডে ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তাঁর মন্ত্রকের কাছে মুখ্যমন্ত্রীর তরফে সময় চাওয়া হয়। সেই মতো এ দিন দুপুর দেড়টা নাগাদ সময় দেওয়া হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। দু’জনের মধ্যে প্রায় আধ ঘণ্টা কথা বার্তা হয়। বৈঠক শেষে মমতা বলেন, ‘‘আমি অমিত শাহকে একটি চিঠি দিয়েছি। তাঁকে বলেছি, এনআরসি থেকে বাদ পড়া ১৯ লক্ষ মানুষের মধ্যে অনেকেই হিন্দিভাষী, বাংলাভাষী এবং স্থানীয় অসমিয়া রয়েছেন। অনেক প্রকৃত ভোটারকে বাদ দেওয়া হয়েছে তালিকা থেকে। এদিকে নজর দেওয়া উচিত বলে অনুরোধ করে আমি একটি চিঠি জমা দিয়েছি।’’ সম্প্রতি এনআরসি থেকে ১৯ লক্ষ মানুষের নাম বাদ গিয়েছে অসমে।
আরও পড়ুন: আইপিএস মেসে হানা, রাজীবকে পেতে মরিয়া সিবিআই, ফের চিঠি ডিজিকে
পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি চালু করার হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন বিজেপি নেতারা। এ নিয়ে কি অমিত শাহের সঙ্গে কোনও কথা হয়েছে? তার জবাবে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অমিত শাহ পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি চালু সম্পর্কে কিছু বলেননি। তবে আমি জানিয়েছি পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি-র দরকার নেই’’। এ প্রসঙ্গে বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর নামও উল্লেখ করেন মমতা। বলেন, ‘‘নীতীশ কুমারও জানিয়েছেন, বিহারে এনআরসির দরকার নেই।’’ সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, বাংলায় এনআরসির আতঙ্কে ডিজিটাল রেশন কার্ডের লাইনে লক্ষ লক্ষ মানুষ দাঁড়িয়ে পড়েছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁর কথা মন দিয়ে তাঁর কথা শুনেছেন বলেও দাবি করেছেন মমতা।
বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পর দিনই সরকারের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠক মুখ্যমন্ত্রীর। কী নিয়ে আলোচনা হতে পারে দু’জনের বৈঠকে? এ নিয়ে রাজ্য তো বটেই, সরগরম ছিল দিল্লির রাজনীতিও। কারণ এই মুহূর্তে কলকাতায় গোয়েন্দা প্রধান রাজীব কুমারকে হন্যে হয়ে খুঁজছে সিবিআই। আর এই সময়েই দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সময় নির্বাচন নিয়েই প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। সাংবাদিক বৈঠকে এ নিয়েও প্রশ্নের মুখে পড়েন মমতা। প্রথমবার উত্তরে তিনি বিষয়টিকে ‘‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’’ বলে ব্যাখ্যা করেন। সাংবাদিক বৈঠকের শেষ লগ্নে ফের এক বার এই প্রশ্নের মুখে পড়েন তিনি। তার উত্তর অবশ্য তিনি এড়িয়ে যান।
বাংলাদেশ, নেপালের মতো আন্তর্জাতিক সীমান্ত এ রাজ্যের সঙ্গে সংযুক্ত। রয়েছে বেশ কয়েকটি রাজ্যের সঙ্গে সীমানাও। সীমান্ত নিরাপত্তার বিষয়টিও দু’জনের আলোচনায় উঠে এসেছে বলে জানিয়েছেন মমতা।
আরও পড়ুন: বিনা ছাড়পত্রে উদ্বোধনে ডাক কেন? ডেউচায় না যেতে মোদীকে আর্জি বিজেপি সাংসদের, প্রশ্ন উদ্দেশ্য নিয়েও
গত লোকসভা ভোটের আগে থেকেই বিজেপি ও তৃণমূলের রাজনৈতিক বিরোধ চরমে উঠেছে। রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে দু’পক্ষই একে অপরকে নিশানাও করেছে বার বার। এমনকি বিজেপি দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর ও অমিত শাহ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার পরে সেই দ্বন্দ্ব বেড়েছে বই কমেনি। তাই বৈঠক ঘিরে এ দিন আগ্রহের পারদ ছিল তুঙ্গে। তবে ‘সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা’ থেকেই এই সাক্ষাৎ বলে ব্যাখ্যা করেছেন মমতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy