তোড়জোড়: আপাতত খবর, কোচবিহারে আসার কথা নেই মুখ্যমন্ত্রীর। তবুও মদনমোহন বাড়িতে চলছে প্রস্তুতি। বৃহস্পতিবার। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব
এই মাসের শেষ দিকে মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গ সফরে যেতে পারেন বলে এর মধ্যেই শোনা যাচ্ছে। সেই সময়ে পাতলাখাওয়ার ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠল কোচবিহারের রাজনৈতিক পরিবেশ। বৃহস্পতিবার বিজেপির সংকল্প যাত্রার সময়ে সংঘর্ষে এক তৃণমূল কর্মীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। ফলে এ দিন সন্ধ্যা থেকে জেলা রাজনীতিতে নতুন করে আলোড়ন তৈরি হয়েছে।
পাতলাখাওয়ায় সংঘর্ষের সময়ে যে তৃণমূল কর্মী অসুস্থ হয়ে পড়েন, তাঁর নাম মজিরুদ্দিন সরকার (৫০)। পরে তাঁকে নার্সিংহোমে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। এলাকায় তৃণমূলের চেনা মুখ তিনি। লোকসভা ভোটে দল হেরে যাওয়ার পরেও তৃণমূলের হয়ে প্রচার করেছেন। বাড়ি পাতলাখাওয়া অঞ্চলের উত্তর কালারুইয়ের কুঠিতে। এলাকায় বেশিরভাগ মানুষ তাঁকে ‘পাইলট’ নামে চেনেন। প্রতিবেশীরা জানান, হঠাৎ এমন ঘটনায় গোটা পরিবার ভেঙে পড়েছে। তাঁর দুই ছেলে বাইরে কাজ করেন। তাঁদের মৃত্যুসংবাদ দেওয়া হয়েছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ রাতেই পুন্ডিবাড়ি পৌঁছন। তিনি বলেন, “শুধু আমাদের কর্মী নন, এলাকায় ভাল মানুষ বলে পরিচিত মজিরুদ্দিন। তাঁর দুই ছেলে সেনা কর্মী। বিজেপির এই অন্যায় কাজ মেনে নেওয়া যায় না।” দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে এর মধ্যেই বিক্ষোভ শুরু করেছে তৃণমূল। বিজেপি অবশ্য তৃণমূলের যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।
লোকসভা ভোটের পরে দীর্ঘদিন তৃণমূল ছিল ব্যাকফুটে। তার পরে সাংগঠনিক রদবদলের পরে কিছুটা চাঙ্গা হয়ে মাঠে নামেন নতুন নেতৃত্ব। সঙ্গে যুবর পুরনো কিছু মুখও। কিছু দখল হয়ে যাওয়া গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিও পুনর্দখলের দাবি করে তৃণমূল। সম্প্রতি এনআরসি নিয়ে হারানো জমি পুনরুদ্ধারে নেমেছে তারা। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী যখন উত্তরবঙ্গ সফরে আসবেন, তখন দল আরও কিছুটা জোর পাবে, মনে করছেন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা।
সেই সফরের প্রস্তুতি হিসেবে তাই দফায় দফায় বৈঠক হচ্ছে। সারা বছর ধরে চলা উন্নয়নমূলক কাজের রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে। প্রথমে শোনা গিয়েছিল, নভেম্বরে কোচবিহারে আসবেন মুখ্যমন্ত্রী। পরে অবশ্য জানা গিয়েছে, ২২ অক্টোবর মুখ্যমন্ত্রীর শিলিগুড়ি পৌঁছনোর কথা। ওই দিন উত্তরকন্যায় প্রশাসনিক বৈঠক রয়েছে। সেখানেই কোচবিহার জেলার প্রশাসনিক আধিকারিকদেরও ডাকা হয়েছে। উত্তরবঙ্গের আরও জেলার প্রশাসনিক প্রতিনিধিরা সেখানে থাকবেন। ওই বিষয় নিয়ে অবশ্য কেউই মুখ খুলতে চাননি। কোচবিহার জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “নির্দেশ মতো সবাই মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে যোগ দেবেন।”
প্রশাসনিক বৈঠক উত্তরকন্যায় হলেও মুখ্যমন্ত্রী জেলা নেতৃত্বকে নিশ্চয়ই কোনও বার্তা দেবেন, মনে করছেন দলীয় নেতারা। কোচবিহার জেলা পরিষদ সূত্রের খবর, নির্দিষ্ট সময়ে কাজ না করার জন্য একাধিক প্রকল্পের ২০ কোটির বেশি টাকা ফেরত চলে যায়। আবার ওই টাকা আনার জন্যে তদ্বির শুরু করেছে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ। কোচবিহার জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আব্দুল জলিল আহমেদ বলেন, “নির্বাচন বিধি লাগু হওয়ার জন্য ওই টাকার কাজ নির্দিষ্ট সময়ে হয়নি। এটা প্রায় সব জেলা পরিষদেই হয়েছে। সে কথা জানিয়ে ফের ওই বরাদ্দের জন্য আবেদন করা হয়েছে। দ্রুত তা মিলবে বলে আশা করছি।” জেলা প্রশাসনের এক কর্তা অবশ্য জানিয়েছেন, ফের উন্নয়নের কাজ শুরু হয়েছে জোরকদমে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy