বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা পার্থকে নিয়ে বেশকিছু সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
গত শনিবার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) হাতে গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর গ্রেফতারির পর পাঁচদিন কেটে গেলেও তাঁকে দলের মহাসচিব পদ বা মন্ত্রিত্ব থেকে সরাননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বিরোধীদের তরফে চাপ তৈরি করা হচ্ছে পার্থকে মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্ত করার। ইতিমধ্যে মঙ্গলবার পার্থ তাঁর মন্ত্রীর গাড়ি চাবি-সহ বিধানসভায় ফিরিয়ে দিয়েছেন। সেই ঘটনার সূত্রেও জল্পনা ছড়িয়েছে তাঁর মন্ত্রিত্বের ভবিষ্যৎ নিয়ে। তৃণমূলের মুখপত্রেও পার্থকে আর এখন ‘মহাসচিব’ বা ‘মন্ত্রী’ বলে লেখা হচ্ছে না।
এই টানাপড়েনের মধ্যেই বৃহস্পতিবার দুপুরে নবান্নে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক। মন্ত্রীদের কাছে ইতিমধ্যেই সেই বার্তা পৌঁছে গিয়েছে। সেই বৈঠকে যে বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক তথা রাজ্যের তিনটি দফতরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী পার্থর যোগ দেওয়া হবে না, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। তাই প্রশাসনিক মহল এবং রাজনীতির কারবারিরা মনে করছেন, বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা পার্থকে নিয়ে বেশকিছু সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
শিল্প ও বাণিজ্য দফতরের পাশাপাশি পার্থর হাতে এখনও রয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি ও পরিষদীয় দফতর। নবান্ন সূত্রে খবর, ওই তিন দফতরের ভাগ্য বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠকেই ঠিক করে দিতে পারেন মমতা। মহাসচিবের পদ বা মন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পার্থকে এখনও না সরালেও পার্থর হাতে-থাকা দফতর এবং দলের কাজ পরিচালনার জন্য ‘দায়িত্ববণ্টন’ যে জরুরি, তা মানছেন প্রশাসনিক কর্তারা। তাই মনে করা হচ্ছে, পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে পার্থর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। কারণ, ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে তৎকালীন পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্র সারদা-কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়ার পর তাঁর ইস্তফা দ্রুত গ্রহণ করে পরিবহণ দফতরের দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নিয়েছিলেন মমতা। ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দফতর তুলে দিয়েছিলেন অরূপ বিশ্বাসের হাতে।
পার্থকে নিয়ে গত শুক্রবার সকাল থেকেই বিবিধ আলোচনা চলছে। তার মধ্যে সবচেয়ে জোরাল হল মন্ত্রিসভায় তাঁর ভবিষ্যৎ। তৃণমূলের একাংশের অভিমত ছিল, পার্থর নিজে থেকেই মন্ত্রিত্বে ইস্তফা দেওয়া উচিত। তা না-করলে মুখ্যমন্ত্রীর উচিত তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেওয়া। এর মধ্যেই পরিষদীয় মন্ত্রীর জন্য বরাদ্দ গাড়িটি পার্থ বিধানসভায় ফিরিয়ে দেওয়ার পর তাঁর মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দেওয়ার জল্পনা জোরালো হয়েছে। তাই বৃহস্পতিবারের মন্ত্রিসভার বৈঠক সবদিক থেকেই বাড়তি গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।
এখন প্রশ্ন— মমতা পার্থর তিনটি দফতর কাকে বা কাদের দেবেন। নবান্নের একটি সূত্রের খবর, শিল্প ও বাণিজ্য দফতরটি নিজের হাতে রেখে কোনও প্রতিমন্ত্রীকে ওই দফতরের দায়িত্ব দিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। তথ্যপ্রযুক্তি যেতে পারে কোনও পূর্ণমন্ত্রীর দায়িত্বে। পার্থর হাতে-থাকা পরিষদীয় দফতরের দু’জন প্রতিমন্ত্রী ইতিমধ্যেই রয়েছেন। প্রথম গ্রন্থাগারমন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী এবং দ্বিতীয় সন্ধ্যারানি টুডু। কিন্তু পরিষদীয় কাজে তাঁদের অভিজ্ঞতা না থাকায় একজন পূর্ণমন্ত্রীকে ওই দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। বিধানসভায় দলের মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ ও উপ মুখ্য সচেতক তাপস রায়কেও বাড়তি দায়িত্ব নিতে হতে পারে।
তবে এই বিষয়গুলি সবই জল্পনা এবং দাবির পর্যায়ে রয়েছে। এর কোনও আনুষ্ঠানিক সমর্থন বুধবার পর্যন্ত মেলেনি। প্রশাসনিক আধিকারিকদের মতে, বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের আগে কিছুই স্পষ্ট হবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy