সাগরদিঘি বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী কে হবেন? এ নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের অন্দরে। ঝটিকা সফরে সোমবার মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘিতে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার সফরের আগেই জেলায় শাসকশিবিরে জোর আলোচনা, সাগরদিঘির প্রয়াত বিধায়ক সুব্রত সাহার আসনের উপনির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে তিনি কে হবেন, তা নিয়ে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা।

জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, সাগরদিঘি ব্লকের ধুমারপাহাড়ে একটি প্রশাসনিক সভায় অংশগ্রহণ করবেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই সভা থেকে বিভিন্ন প্রকল্পের উপভোক্তাদের হাতে প্রকল্পগুলির সুবিধা তুলে দেওয়া হবে। পাশাপাশি, একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন এবং শিলান্যাস করার কথাও রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর।

মমতার জেলা সফরের স্থান সাগরদিঘি হওয়ায় তৃণমূলের অন্দরে সাগরদিঘি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে প্রার্থী নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। তৃণমূলের একটি সূত্রের খবর, সাগরদিঘির উপনির্বাচনে দলের প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন প্রয়াত সুব্রত সাহার স্ত্রী মৌমিতা সাহা। অন্য সূত্রের দাবি, বর্তমান ব্লক তৃণমূলের সভাপতি দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় কিংবা প্রাক্তন ব্লক তৃণমূল সভাপতি মহম্মদ আলি (মধু) এই উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী হচ্ছেন।

প্রসঙ্গত, সাগরদিঘির বিধায়ক তথা রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং উদ্যানপালন দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী সুব্রত সাহার আকস্মিক মৃত্যুতে এই আসনটি খালি হয়েছে। হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন ২৯ ডিসেম্বর মারা যান ৬৯ বছরের সুব্রত। মেঘালয় এবং ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচনের সঙ্গে সাগরদিঘির উপনির্বাচনও হতে পারে বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর। কমিশন তার দিন ক্ষণ ঘোষণার আগেই সাগরদিঘির উপনির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল। জঙ্গিপুর সংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা সংসদ খলিলুর রহমান বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আসছেন, এটাই আমাদের কাছে বাড়তি পাওনা। দলের প্রার্থী কে হবেন, তা ঠিক করবেন দিদি।’’

মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভা যাতে সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হয়, সে জন্য রবিবার ছুটির দিনেও তাৎপরতা তুঙ্গে মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনে। সমস্ত দফতরের জেলা কর্তাদের রবিবারের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। প্রশাসনিক ভবনে চলছে দফায় দফায় বৈঠক।

প্রশাসন সূত্রে খবর, সোমবার দুপুর ১২টা নাগাদ ধুমারপাহাড় এলাকায় মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভা শুরু হবে। তাঁর হেলিকপ্টারের অবতরণের জন্য ইতিমধ্যে সেখানে একটি অস্থায়ী হেলিপ্যাড তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র, জেলা পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে-সহ প্রশাসনের একাধিক শীর্ষ আধিকারিক ইতিমধ্যেই বহু বার সভাস্থল পরিদর্শন করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী নিরাপত্তায় মোতায়ন থাকছে ১,২০০ পুলিশের একটি বাহিনী। তাঁর নিরাপত্তায় ত্রিস্তরীয় বেষ্টনীতে মুড়ে ফেলা হচ্ছে সভাস্থল। জেলা পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন থাকছে। যে কোনও রকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে প্রস্তুত থাকছে জেলা পুলিশ।’’

সোমবারের মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভার প্রস্তুতি কেমন চলছে? জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র বলেন, ‘‘প্রশাসনিক ভাবে আমরা প্রস্তুত। আশা করছি, আগামিকালের (সোমবারের) সভা প্রত্যাশা মতো হবে।’’