—ফাইল চিত্র।
আরএসএস নিজেদের লোকেদের কেন্দ্রীয় বাহিনীর উর্দি পরিয়ে রাজ্যে ঢুকিয়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার বাসন্তীর সভায় তিনি বলেন, ‘‘আমার সন্দেহ, কেন্দ্রীয় বাহিনীর উর্দি পরে আরএসএস ঢুকেছে। ওরা গুলি চালাচ্ছে। একজন আহত হয়েছেন।’’ একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রীর হুঙ্কার, ‘‘ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে গণতান্ত্রিক ভাবে বদলা নেওয়া হবে।’’
আরএসএস এবং বিজেপি অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। কেন্দ্রীয় বিজেপির তরফে রাজ্যে দলের পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেন, ‘‘সাংবিধানিক পদে বসেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর বিচারবুদ্ধি লোপ পেয়েছে। তাই উনি এ সব উল্টোপাল্টা কথা বলছেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গের গণতন্ত্রকে বিশ্বের সামনে হাস্যকর করে তুলেছেন। আশা করব, তাঁর উপলব্ধি হবে। বাংলার গণতন্ত্রকে আর হাস্যকর করে তুলবেন না।’’ আরএসএসের মুখপাত্র জিষ্ণু বসু বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর এ সব অর্থহীন অভিযোগের কী জবাব দেব?’’
ষষ্ঠ দফার ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ এনেছে তৃণমূল। ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী গুলিও চালিয়েছেন বলে অভিযোগ। তৃণমূলের দাবি, সেই গুলিতে আহত তাদের এক সমর্থক।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এ দিন বাসন্তীর সভায় সেই ঘটনার উল্লেখ করেই কেন্দ্রীয় বাহিনীকে তুলোধোনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, ‘‘ওঁরা লাইনে দাঁড়ানো লোকেদের মোদীকে ভোট দেওয়ার কথা বলছেন। এ রকম দেখলেই অভিযোগ জানাবেন। লজ্জা করে না? কাল যখন মোদী থাকবেন না, তখন কী করবেন?’’
এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, মালদহ দক্ষিণে বিজেপি প্রার্থীর স্বামী এখন অবসরপ্রাপ্ত হলেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে কাজ করছেন। তাঁর নির্দেশেই কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো হচ্ছে রাজ্যে। মমতার প্রশ্ন, ‘‘এটা কি একটা নিরপেক্ষ ব্যবস্থা?’’ একই সঙ্গে তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী দেখিয়ে আমাদের ধমকে চমকে লাভ নেই। সবটাই বেআইনি ভাবে হচ্ছে। কাগজপত্র আমাদেরও তৈরি আছে। ভোটের পর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মা ভাই বোনেদের গায়ে হাত দেওয়ার এক্তিয়ার আপনাদের নেই।’’
কেন্দ্রীয় বাহিনীর আচরণে ‘অসন্তোষ’ প্রকাশ করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেন, ‘‘যাঁরা এই কাজগুলো করাচ্ছেন তাঁদের বলছি, ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে বদলা নেব বলে দিলাম। গণতান্ত্রিক বদলা। ছেড়ে কথা বলব না। এ ভাবে বাংলাকে অপমান করতে পারেন না। কে আপনি, আইন শৃঙ্খলায় হস্তক্ষেপ করছেন? এটা রাজ্যের বিষয়। রাজ্য পুলিশ কি পুলিশ নয়? এটা অসাংবিধানিক।’’
একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রতি তাঁর বার্তা, ‘‘আপনারা আসবেন, কাজ করবেন, চলে যাবেন। রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে কথা বলার কোনও অধিকার আপনাদের নেই।’’
বাসন্তীর পর বারুইপুর এবং সোনারপুরের সভা থেকেও একই ভাবে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে আক্রমণ করেন মমতা। এক্তিয়ার ভেঙে কেন্দ্রীয় বাহিনী বুথে ঢুকে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করে সোনারপুরের সভায় তিনি বলেন, ‘‘বুথের দরজায় থাকবে রাজ্য পুলিশ। আপনারা কেন কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ভিতরে ঢুকতে দিচ্ছেন? কীসের ভয়ে?’’
ভোট শেষ হয়ে গেলে নির্বাচন কমিশন বা কেন্দ্রীয় সরকারের আওতায় যে রাজ্য পুলিশ থাকবে না, তা মনে করিয়ে দিয়ে এ দিন মমতা বলেন, ‘‘আমি নিজে পুলিশমন্ত্রী। রাজ্য পুলিশ মাথা উঁচু করে নিজের দায়িত্ব পালন করবে। আমরা কেউ মরে যাইনি। আপনারা কি চাকরি হারানোর ভয় পাচ্ছেন? দিল্লি আপনাদের পোস্টিংও ঠিক করবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy