পুলিশ সুপারের অফিসের সামনে অবস্থানে বিজেপি প্রার্থী সিদ্ধার্থ নস্কর।
তিনি কীর্তনীয়া। গলায় প্রেমের গান। ভোটের মাঠে নেমেও এতদিন সেই গানেই জনসংযোগ সারছিলেন তমলুকের বিজেপি প্রার্থী সিদ্ধার্থ নস্কর।
তাল কাটল বৃহস্পতিবার। তমুলেক খোদ জেলা পুলিশ সুপারের অফিসের সামনের ধর্না দিতে আসা কীর্তনীয়া প্রার্থীর গলায় শোনা গেল হিংসার বার্তা। নাম না করে প্রকাশ্যেই প্রতিপক্ষ নেতার পা কেটে দেওয়ার হুমকি দিলেন তিনি।
কী বলেছেন সিদ্ধার্থ?
ময়নায় বাকচায় পুলিশের উপরে হামলার অভিযোগে বিজেপি নেতা-কর্মীদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে এ দিন বিক্ষোভ সভায় বক্তৃতা দিচ্ছিলেন সিদ্ধার্থ। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘দিদির ভাইয়েরা এবং এই পুলিশেরা, সবাইকে অনুরোধ জানিয়েছি, কোনও পক্ষপাতিত্ব না করে অন্তত এই ভোটটা মানুষকে গণতান্ত্রিক ভাবে দিতে দিন।... যদি এই অনুরোধ না শোনেন, এরপর যদি আপনি এক পা বাড়িয়েছেন, তাহলে শুনে রাখুন, আপনি এক পা বাড়ালে আপনার দাদার পা-টা আমি কেটে নেব।’’ এখানেই থেমে থাকেননি সিদ্ধার্থ। নিজেকে ‘আন্তর্জাতিক হিরো’ বলেও দাবি করেন তিনি। বিজেপি প্রার্থীর কথায়, ‘‘আপনি যদি তমলুকের হিরো হন, কোলাঘাটের জিরো আপনি একটা। আর আপনার দাদা পশ্চিমবাংলার হিরো হলে, আমি ইন্টারন্যাশনাল হিরো।’’
কারও নাম না করলেও রাজনৈতিক মহলের ধারণা, সিদ্ধার্থের নিশানা পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী এবং তাঁর ভাই তথা তমলুকের তৃণমূল প্রার্থী দিব্যেন্দু অধিকারী। সকাল ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চলা ওই অবস্থান বিক্ষোভে সিদ্ধার্থের সঙ্গে ছিলেন বিজেপি’র জেলা পর্যবেক্ষক সমীরণ সাহা, জেলা সভাপতি প্রদীপ দাসও।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
ভোটের আগে সিদ্ধার্থের ওই বক্তব্যকে উস্কানিমূলক বলে অভিযোগ করেছেন দিব্যেন্দু। তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনকে বলব ওঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে।’’ জেলা প্রশাসনের তরফেও পদক্ষেপের ইঙ্গিত মিলেছে। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘বিক্ষোভ কর্মসূচির ভিডিয়ো ফুটেজ দেখে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।’’ আর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) শিবপ্রসাদ পাত্রের বক্তব্য, ‘‘ঘটনাস্থলে এমসিসি দল ছিল। তারা পর্যালোচনা করে অভিযোগ জানাবে। তার পরেই পদক্ষেপ করা হবে।’’
যাঁর মন্তব্য নিয়ে এত জলঘোলা সেই সিদ্ধার্থ অবশ্য বলেন, ‘‘ওটা উত্তেজনাবশত বলে ফেলেছি। আমি জানি এটা বলা উচিত হয়নি।’’ তবে তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘এখানে বিনা কারণে বিজেপি নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। শুধুমাত্র বিজেপি করার জন্য নিরীহ মা-বোনেদের অত্যাচার করা হচ্ছে। এসব দেখে কতক্ষণ আর চুপ করে থাকব!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy