Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

বিজেপিরও আছে এক মানস ভুঁইয়া

চলার পথে দেখা হলে শুনতে হয় পরিচিতের শ্লেষ, ‘‘কী রে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে কবে এলি?’’

দাঁতনের মানস। নিজস্ব চিত্র

দাঁতনের মানস। নিজস্ব চিত্র

বিশ্বসিন্ধু দে
দাঁতন শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৯ ০৪:১১
Share: Save:

নাম শুনে বিচারক ভাল করে আগাপাশতলা দেখে নেন।

চলার পথে দেখা হলে শুনতে হয় পরিচিতের শ্লেষ, ‘‘কী রে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে কবে এলি?’’

কটাক্ষ, বিস্ময় সবই নামের জন্য। নাম তাঁর মানস ভুঁইয়া। দাঁতন ২ ব্লকের বিজেপির পশ্চিম মণ্ডলের সাধারণ সম্পাদক। এক নাম তো অনেকেরই হয়। কিন্তু মেদিনীপুর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মানসের সঙ্গে যে তাঁর মিল পদবিতেও। অগত্যা ব্লকের তুরকা গ্রাম পঞ্চায়েতের রসুলপুরের বাসিন্দাকে বলতেই হয়, ‘‘আমি সবংয়ের মানস নই, দাঁতনের মানস।’’

দাঁতনের মানসকে তাঁর সমনামীর জন্য প্রায়ই কোনও না কোনও পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। মাঝে মাঝে বিভিন্ন মামলা সংক্রান্ত কাজে আদালতে যেতে হয়। মানস জানাচ্ছিলেন, তাঁর নাম শুনেই হাসাহাসি শুরু করেন আইনজীবীরা। বিচারক আইনজীবীদের বক্তব্য শোনার আগে চশমা খুলে চোখ বড় বড় করে ভাল করে দেখে নেন তাঁকে। প্রচারে বেরিয়ে শুনতে হয় নানা তির্যক মন্তব্য।

সবংয়ের ভূমিপুত্র মানসের সঙ্গে অবশ্য ধারে ভারে কোনও তুলনাতেই আসেন না দাঁতনের মানস। একজন পেশায় চিকিৎসক। পোড়খাওয়া রাজনীতিক। দীর্ঘদিনের বিধায়ক। বর্তমানে রাজ্যসভার সাংসদ। অন্যজনের চাষাবাষই সম্বল। এককালে ভিডিয়ো ক্যাসেটের দোকান ছিল বটে। কিন্তু কবেই সে ব্যবসা চুকেবুকে গিয়েছে। তাই এখন আখ চাষ, ধান চাষ করেই চলে সংসার। আর বাকি সময়ে রাজনীতি। মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী তাঁর সমনামী সম্পর্কে বলছেন, ‘‘নাম মিলতেই পারে ক্ষতি কী! ভাল তো। কেউ তো আর এক নয়।’’ তৃণমূলের এমন এক হেভিওয়েট নেতার সঙ্গে নামের মিল। কেমন লাগে? দাঁতনের মানস প্রথমে মনে করিয়ে দিলেন, নাম পুরোটা এক নয়। তৃণমূল নেতার মধ্যনাম রয়েছে। তিনি মানসরঞ্জন। কিন্তু বিজেপি নেতার শুধুই মানস। বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দিতে নারাজ বিজেপি নেতা। তাঁর কথায়, ‘‘ওগুলো কিছু বিষয় নয়। বাবা বনবিহারী এবং স্বর্গত মা পূর্ণিমা ভুঁইয়া নাম রাখেন আমার।’’ তবে রাজনীতির কথা উঠলেই সবংয়ের ভূমিপুত্রের উদ্দেশে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়ে বললেন, ‘‘ওরকম রাজনীতি করি না। ২১ বছর ধরে আমার একটাই দল।’’

বিজেপি নেতা মানসের স্ত্রী শিবানী সংসার সামলান। চাষবাষে সাহায্য করা, দুই সন্তানের খেয়াল রাখার পর কিছুটা সময় পেলে বাংলা সিরিয়ালে ডুব। রাজনীতি তাঁর মাথায় ঢোকে না। নেতা-মন্ত্রীদের চেয়ে সিরিয়ালের চরিত্রেরাই তাঁর আপন। তাই শিবানী বলেই ফেললেন, ‘‘আমি স্বামীকেই জানি। এই নামে অন্য কাউকে চিনি না।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE