হাতে বিজেপির পতাকা তুলে নিচ্ছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বিজেপিতে যোগদানের পরেই এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডল থেকে ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট করল তৃণমূল। শাসকদলের পোস্ট করা ছবিতে লেখা ‘মাই লর্ড’। যেখানে ইংরেজি বর্ণমালার ‘ও’ অক্ষরের পরিবর্তে একটি পদ্ম ফুলের ছবি আঁকা রয়েছে। সঙ্গে লেখা, ‘যারা জানে, তারাই বুঝবে’।
পদ্মশিবিরে যোগ দিয়ে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমি সর্বভারতীয় দলে যোগ দিলাম। এমন একটি দল যার মাথায় নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহরা রয়েছেন। আমি দলের শৃঙ্খলাবদ্ধ সৈনিক হিসাবে কাজ করতে চাই। আজ আর বিশেষ কিছু বলার নেই। আমাদের লক্ষ্য পশ্চিমবঙ্গ থেকে রাজ্যের একটি দুর্নীতিগ্রস্ত দলের বিদায় দেওয়া। যাতে ২০২৬ সালে আর তারা ক্ষমতায় আসতে না পারে। এই দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর লড়াই যাতে শুরু করা যায়, তার জন্যই বিজেপিতে যোগ দিয়েছি। আমাকে যা দায়িত্ব দেওয়া হবে, তা পালন করব।’’
রাজ্য বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক মঙ্গল পাণ্ডে বলেন, ‘‘তাপস রায় বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। আজ যোগ দিলেন অভিজিৎ। আবার বিজেপির শক্তি বৃদ্ধি হল। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে প্রাক্তন বিচারপতিকে স্বাগত জানাচ্ছি।’’
অভিজিতের বিজেপিতে যোগদান কর্মসূচির মঞ্চে রয়েছেন সুকান্ত মজুমদার, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, রাজ্য বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক মঙ্গল পাণ্ডে, সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়, বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। সুকান্ত বলেন, ‘‘এক জন বিশিষ্ট ব্যক্তি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বিজেপি পরিবারে যোগ দিতে চলেছেন। আগামী দিনে বিজেপি তাঁকে নির্বাচনে এবং অন্যান্য জায়গায় ব্যবহার করবেন।’’
শুভেন্দু বলেন, ‘‘আমি এটুকুই বলব যে রাজ্যের রাজনীতিতে এ রকম এক জনের প্রয়োজন ছিল। তিনি তাঁর যে লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছিলেন, তখন তাঁকে আক্রমণ করা হয়েছে। তাঁর কাজ করার ক্ষমতা কেড়েও নেওয়া হয়েছিল। যোগদানের আগে তিনি অমিত শাহের আশীর্বাদ গ্রহণ করেছেন। রাজ্য থেকে পরিবারবাদী এবং তোষণকারী সরকারকে ফেলতে পারব।’’
বিজেপির সল্টলেকের অফিসে পৌঁছলেন অভিজিৎ। যোগদান কর্মসূচি আর কিছু ক্ষণেই। শঙ্খধ্বনি এবং পুষ্পবৃষ্টির মাধ্যমে তাঁকে স্বাগত জানালেন বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা। উঠল ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনিও।
বিজেপি সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ বিজেপিতে যোগ দেবেন অভিজিৎ। ১২টার কিছু পরে বাড়ি থেকে বেরোন অভিজিৎ। তিনি বলেন, ‘‘আমি আজকে বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছি। বিজেপি নেতারা এসেছেন। আমার বেরোতে পাঁচ-সাত মিনিট দেরি হয়ে গেল। আমার আজ খুব ভাল লাগছে। সর্বভারতীয় দলে যোগ দিতে যাচ্ছি। আমাকে যা দায়িত্ব দেওয়া হবে, তা করব।’’
অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে ফের আক্রমণ করল তৃণমূল। বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক বৈঠকে শশী পাঁজা বলেন, ‘‘তাঁর ঘরে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের আসা-যাওয়া ছিল। আজকে পরিষ্কার যে, উনি বিচারপতির আসনে বসে বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন। উনি বিচারপতির পদের অবমাননা করেছেন।’’
১১টা নাগাদ অভিজিতের সল্টলেকের বাসভবনে এলেন বিজেপির বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। সঙ্গে রয়েছেন বিজেপির নেতা সজল ঘোষ। তাঁরা অভিজিৎকে নিয়ে বিজেপির সল্টলেকের অফিসে যাবেন। সেখানেই তাঁর যোগদান কর্মসূচি হবে।
অগ্নিমিত্রা বলেন, ‘‘আমি অভিজিৎবাবুকে নিতে এসেছি। আমরা ওঁকে সল্টলেকের অফিসে নিয়ে যাব। সেখানে যোগদান কর্মসূচি হবে। এর পর আমাদের একটা দল সন্দেশখালি যাব।’’ সজল বলেন, ‘‘এ রকম এক জন গুরুত্বপূর্ণ মানুষকে আমরা পাব। মানুষের কাছে উনি দেবতার মতো। এতে বিজেপিও সমৃদ্ধ হবে।’’
উল্লেখ্য, অভিজিৎ পদ্ম পতাকা হাতে নেবেন বলে ঘোষণা করার পর থেকেই তাঁকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। তাঁকে নিয়ে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। যে বিচারপতিকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত ছিলেন বামপন্থীরা, সেই অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অভিজিৎকে তীব্র সমালোচনা করেছে সিপিএম।
বিজেপিতে যোগদান করবেন, ঘোষণা করার পরেই রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলকে বেনজির আক্রমণ করেন অভিজিৎ। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল একটি দুষ্কৃতীদের দল বলে মনে করি। তৃণমূলকে আমি রাজনৈতিক দল বলেই মনে করি না। তৃণমূল হল একটি আদ্যোপান্ত যাত্রাদল। ওদের যাত্রাপালার নাম হল মা-মাটি-মানুষ।’’ নাম না করে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘তালপাতার সেপাই’ বলেও মন্তব্য করেন। তবে স্বীকার করেন, ‘রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকৃত রাজনীতিবিদ’।
বৃহস্পতিবার তিনি বিজেপিতে যোগদান করবেন। এ কথা আগেই জানিয়েছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বিচারপতির পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর সাংবাদিক সম্মেলন করে অভিজিৎ জানান, বিজেপিতেই আপাতত যোগদান করছেন তিনি। বিজেপি তাঁকে টিকিট দিলে লোকসভা ভোটেও লড়বেন। বিজেপিতে যোগদানের পর লোকসভা ভোটে অভিজিতের টিকিট পাওয়া নিয়ে কোনও ইঙ্গিত মেলে কি না, সে দিকে নজর থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy