Advertisement
০৫ অক্টোবর ২০২৪
Kunal Ghosh

Kunal Ghosh: উডবার্ন ওয়ার্ড এখন কয়েদিদের আশ্রয়স্থল! আদালতে বিস্ফোরক ও আবেগতাড়িত কুণাল

‘‘আইকোর মডেলকে যিনি তুলে ধরেছিলেন, তিনি আজ মন্ত্রী। তিনিই তখন আমাকে পাগল বলেছিলেন। তিনি এখন দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ওঁকে জেলে ঢোকানো উচিত।’’

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২২ ১৩:৪৬
Share: Save:

ফের বিস্ফোরক কুণাল ঘোষ। আবারও তৃণমূলের বিড়ম্বনা বাড়িয়ে দলের এক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন তিনি। সোমবার আদালতে হাজিরা দিতে গিয়ে আবেগতাড়িত হয়ে কেঁদেও ফেলেন তৃণমূল মুখপাত্র। ক্ষোভের সুরে বললেন, ‘‘আইকোর মডেলকে যিনি তুলে ধরেছিলেন, তিনি আজ মন্ত্রী। তিনিই তখন আমাকে পাগল বলেছিলেন। তিনি এখন দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাঁকে ঘাড় ধরে জেলে ঢোকানো উচিত।’’ কুণাল আরও বলেন, ‘‘এখন তো অনেক প্রভাবশালীর চিকিৎসা হচ্ছে উডবার্ন ওয়ার্ডে। কিন্তু জেলে থাকা অবস্থায় আমার দাঁতের যন্ত্রণার চিকিৎসা হয়নি। এখন এসএসকেএমের উডবার্ন ওয়ার্ড অসুস্থদের চিকিৎসাস্থল নয়, ওটা কয়েদিদের আশ্রয়স্থল।’’ পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন আত্মহত্যার চেষ্টা মামলায় সোমবার আদালতে হাজির হয়েছিলেন কুণাল। সেখানেই এমন মন্তব্য করেন তিনি।

ক্ষোভ প্রকাশ করলেও কোন নেতার বিরুদ্ধে তাঁর আক্রমণ, তা খোলসা করেননি তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক। পাশাপাশি উডবার্ন ওয়ার্ড নিয়ে কুণালের বক্তব্যের তির যে সিবিআইয়ের ডাক পেয়ে উডবার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের দিকেই, তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি কারও। অনুব্রতের সিবিআই জেরা এড়িয়ে যাওয়া নিয়েও কুণাল বিরূপ মন্তব্য করেছিলেন। সঙ্গে তিনি জানিয়েছিলেন, ‘‘আমি কখনও সিবিআই জেরা এড়িয়ে যাইনি।’’

গত কয়েক দিন ধরেই মন্ত্রিসভার কয়েক জন সদস্যের সঙ্গে বাগ্‌যুদ্ধ চলছে কুণালের। সম্প্রতি শিক্ষাক্ষেত্রে কয়েকটি দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তভার গিয়েছে সিবিআইয়ের হাতে। আদালতের এমন নির্দেশ প্রসঙ্গে শুক্রবার তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর পাশে থাকলেও তাঁর কথা থেকে অনেকে মনে করেছিলেন, কুণাল যেন দায় ঠেলে দিচ্ছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থর দিকে। কুণাল তখন বলেছিলেন, ‘‘দলের মহাসচিব তথা তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিস্তারিত বুঝিয়ে বলতে পারবেন।’’

এর পর শুক্রবার ফিরহাদকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, এর ফলে কি দলের অভ্যন্তরে আড়াআড়ি বিভাজন প্রকাশ্যে চলে এল? জবাবে ফিরহাদ বলেছিলেন, ‘‘কোনও আড়াআড়ি ভাঙন নয়। কুণাল মন্ত্রিসভার সদস্য নন। আমাদের সব দায়িত্ব যৌথ। আমি সেই মন্ত্রিসভার সদস্য। পার্থদাও মন্ত্রিসভার সদস্য। তাই বিষয়টা পার্থদার একার নয়।’’

রবিবারই ফেসবুক লাইভ করে কুণাল জবাব দেন ফিরহাদকে। তিনি বলেছিলেন, ‘‘২১ সালের ভোটে আমি এক দিকে সমন পেয়েছি, আর এক দিকে কাঁথিতে দাঁড়িয়ে অধিকারী সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে বক্তৃতা করে গিয়েছি। আমি আমার লড়াই করেছি। আমাকে স্মরণ করাতে হবে না যে, আমি মন্ত্রী নই। আমার কোনও হ্যাংলামি নই। মন্ত্রী হতে না পারলে যাদের জীবন অসম্পূর্ণ, এ সব তাদের দেখাবেন। মন্ত্রী, বিধায়ক, সাংসদ আমাকে দেখাবেন না। আমাকে জীবন যা দেখিয়েছে, তাতেই আমি পূর্ণ। আমি দলের প্রতি আনুগত্য দেখিয়েছি। জেলে বসে আমি যেমন লড়াই করেছি, তেমনই আমি মাসে দশ হাজার টাকা চাঁদা দলকে দিয়েছি। ব্যাঙ্ককে নির্দেশ দিইনি চাঁদা দেবেন না। জেল থেকে বেরোনোর পর কেন্দ্রীয় সরকার আমাকে একটি কমিটির চেয়ারম্যান করতে চেয়ে চিঠি দিয়েছিল। সাংসদ হিসেবে চেয়ারম্যান হলে অসুবিধা ছিল না। কিন্তু সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলাম।’’ সোমবার আরও এক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে নতুন বিতর্ক উস্কে দিলেন কুণাল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kunal Ghosh TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE