— প্রতীকী চিত্র।
সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ-সহ একাধিক রাজ্য থেকে যে জঙ্গি-পাকড়াও অভিযান শুরু হয়েছে, তাতে বার বার উঠেছে বর্ধমানের খাগড়াগড় প্রসঙ্গ। ধৃতদের কারও কারও সঙ্গে যে খাগড়াগড় বিস্ফোরণের জঙ্গিদের যোগ আছে, তা-ও স্পষ্ট গোয়েন্দাদের কাছে। জানা গিয়েছে, জেল থেকেই জঙ্গিদের একাংশ আনসারুল্লা বাংলা টিম বা এবিটি-র নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণ করে এখনও। পুরো বিষয়টি নিয়ে আরও তদন্ত করতে জেলবন্দি জঙ্গিদের নতুন করে জেরা করতে চান গোয়েন্দারা। তাদের সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। জেল খেটে এর মধ্যে যারা মুক্ত, তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করতে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা খোঁজতদ্বির করতে শুরু করেছেন। সূত্রের খবর, রাজ্যের বিভিন্ন জেলে জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) এবং এবিটি-র প্রায় ৪০ জন বন্দি। তাদের মধ্যে রয়েছে খাগড়াগড় এবং বিহারের বুদ্ধগয়া বিস্ফোরণে অভিযুক্তেরা। এদের আবার পাঁচ জন বাংলাদেশি।
গোয়েন্দাদের দাবি, বাংলাদেশের পরিস্থিতির বদল ঘটতেই এবিটি-র প্রধান জসিমুদ্দিন রহমানির নির্দেশে সক্রিয় জঙ্গিরা। তার জাল কতটা বিছিয়েছে এ রাজ্যে, তা জানতেই এ বার জেলবন্দি বাংলাদেশি জঙ্গিদের জেরা করা জরুরি। গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, ওই সংগঠনের সদস্যরা কারও না কারও নির্দেশে জাল বিস্তার এবং টাকা সংগ্রহ শুরু করেছে।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, এ রাজ্যের জেলে বর্তমানে বন্দি খাগড়াগড় এবং বুদ্ধগয়া বিস্ফোরণে অভিযুক্ত বাংলাদেশের নাগরিক রহমতুল্লা ওরফে সাজিদ, জাহিদুল ওরফে কওসর, তারিকুল ওরফে সুমন, লিয়াকত ওরফে রফিক। এদের মধ্যে তারিকুল বর্তমানে বহরমপুর জেলে বন্দি। গোয়েন্দাদের দাবি, তারিকুলের সঙ্গে মুর্শিদাবাদ থেকে ধৃত এবিটি সদস্য মিনারুল শেখ ও আব্বাস আলির যোগাযোগের প্রমাণ মিলেছে। তা থেকেই স্পষ্ট, জেলে বন্দি ওই জঙ্গিরা তাদের সংগঠন বিস্তারে সক্রিয়। তাই গোয়েন্দারা তারিকুলকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে চাইছেন। কার নির্দেশে তারিকুল সব কিছু করছে, সেই তথ্য জানাই মূল উদ্দেশ্য।
এক তদন্তকারী বলেন, ‘‘বাংলাদেশি জঙ্গি বন্দিরা জেলেই কতটা সক্রিয় রয়েছে, তা জানতে তাদের জেরা করা দরকার। সংগঠনের আর কারা এ রাজ্যে সক্রিয়, সেটাও তাদের জেরা করে জানা সম্ভব। ইতিমধ্যে জেলে থাকা জঙ্গিদের ওপর নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে।’’ খাগড়াগড় বিস্ফোরণের সঙ্গে যুক্ত ১২ জন ইতিমধ্যেই সাজা শেষে বাইরে বেরিয়ে গিয়েছে। তারা আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে কি না, তার খোঁজও শুরু করেছেন গোয়েন্দারা।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পরে ধরপাকড় শুরু হতেই গা ঢাকা দিতে শুরু করে জেএমবি জঙ্গিরা। এর বছর তিনেক বাদে বুদ্ধগয়া বিস্ফোরণের পরে সামনে আসে এবিটি-র নাম। ২০২২ সালে অসম ও মধ্যপ্রদেশ পুলিশের হাতে এবিটি-র কয়েক জন গ্রেফতার হতেই জানা যায়, তলে তলে এ রাজ্যে সংগঠন তৈরি করতে শুরু করেছে আল কায়দার উপমহাদেশীয় শাখা এবিটি। গোয়েন্দাদের একাংশের তাই ধারণা, খাগড়াগড় কাণ্ডের পরেও রাজ্যে জঙ্গি-নেটওয়ার্ক নির্মূল হয়ে যায়নি। সম্প্রতি অসম পুলিশের হাতে ধৃত নুর ইসলাম মণ্ডলকে জেরা করে জানা গিয়েছে, সে খাগড়াগড় বিস্ফোরণের আগে বর্ধমানের শিমুলিয়া মাদ্রাসায় প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। তার কয়েক জন সঙ্গী খাগড়াগড় কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিল। খাগড়াগড়ের ঘটনায় নুরকে এনআইএ না ধরলেও পরে অন্য একটি মামলায় অসমের বড়পেটার বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে সে রাজ্যের পুলিশ। তার বাড়ি থেকে বিস্ফোরকও উদ্ধার করা হয়েছিল। তদন্তকারী জানিয়েছেন, গত বছর এ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছিল নুর। আব্বাস এবং মিনারুলের সঙ্গে বৈঠকও করেছিল সে।
গোয়েন্দারা এই জালের সবটা খুঁজে বার করতেই এখন জেলে গিয়ে জঙ্গিদের জেরা করতে চাইছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy