নতুন সুইমিং পুল। ছবি: শৌভিক দে।
অবশেষে একটি আধুনিক মানের সুইমিং পুল পেতে চলেছেন সল্টলেকবাসী। সেন্ট্রাল পার্কের বাইরে স্পোর্টস কমপ্লেক্স চত্বরে তৈরি হচ্ছে ওই সুইমিং পুল। কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। তবে সুইমিং পুল তৈরির পাশাপাশি স্পোর্টস কমপ্লেক্স চত্বরের পরিকাঠামো উন্নয়নেরও পরিকল্পনা নিয়েছে বিধাননগর পুরসভা।
বাম আমলেই সল্টলেকে সেচভবন ও বিকাশ ভবনের ঠিক উল্টো দিকে স্পোর্টস কমপ্লেক্স তৈরি করা হয়েছিল। কমপ্লেক্সের দু’টি মাঠ ময়দানের বিভিন্ন ফুটবল ক্লাব প্র্যাকটিসের জন্য বছরভর ব্যবহার করে। কিন্তু সেখানে পরিকাঠামো ছিল দুর্বল। ছিল না সুইমিং পুল, ক্যান্টিন, জিম ইত্যাদি।
তবে শুধু খেলোয়াড়দের জন্যই নয়, সুইমিং পুল তৈরির ব্যাপারে দীর্ঘ দিন ধরে দাবি জানাচ্ছিলেন সল্টলেকবাসী। সে কথা মাথায় রেখে বাম আমলেই সুইমিং পুল তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু নানা প্রতিবন্ধকতায় কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ক্ষমতায় এসে সেই কাজে হাত দেয় তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ড। কিন্তু আর্থিক সমস্যার কারণে সেই কাজ শেষের সময়সীমাও পিছিয়ে যায়।
প্রতিবন্ধকতা দূর করে এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে সুইমিং পুল তৈরির কাজ। পুর-কতৃর্র্পক্ষ জানিয়েছেন, পুল তৈরিতে খরচ হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা। সূত্রের খবর, কিছু দিনের মধ্যেই পুলটি চালু হবে। পুলটির রক্ষণাবেক্ষণ নিয়েও পরিকল্পনা করেছেন পুর-কর্তারা। প্রয়োজন পড়লে মেম্বারশিপের মাধ্যমে রক্ষণাবেক্ষণের খরচ জোগাড় করা, বিভিন্ন ক্লাব বা বিভিন্ন প্রতিযোগিতার জন্য পুলটি ভাড়া দিয়ে খরচ জোগাড়ের চিন্তা-ভাবনাও করা হচ্ছে।
বিধাননগর পুরসভার এক কর্তার মতে, স্পোর্টস কমপ্লেক্স তৈরির সময়ে ক্রিকেট ও ফুটবল প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছিল পুরসভা। ফলও মিলেছিল হাতেনাতে। কিন্তু সাঁতার প্রশিক্ষণের সে অর্থে তেমন কোনও ব্যবস্থাই ছিল না। এ বার সেই পরিকল্পনা কার্যকর করা সম্ভব হবে।
পুরসভা সূত্রের খবর, মূলত দু’টি সুইমিং পুল তৈরি হচ্ছে। একটি আন্তর্জাতিক স্তরের। ৫০ মিটার দীর্ঘ ওই পুলে আড়াই মিটারের দশটি লেন থাকবে। পাশাপাশি আট মিটার ব্যাসার্ধের ছোট একটি পুলও তৈরি হচ্ছে। পোশাক পরিবর্তনের জন্য ঘর তৈরির কাজও শেষ পর্যায়ে। তবে আপাতত ওই পুলে ডাইভিং করা যাবে না। তবে বিধাননগর পুরসভার এক কর্তা জানান, আন্তর্জাতিক স্তরের সুইমিং পুলে যা যা থাকার প্রয়োজন, সে সব ব্যবস্থা করা হবে।
তবে পুল তৈরি হলেও সমস্যা দেখা দিয়েছে জল নিয়ে। পুরসভার এক আধিকারিক জানান, সল্টলেকের জলে লোহার পরিমাণ বেশি। তাই প্রয়োজন আয়রণ ট্রিটমেন্ট প্লান্টের। পুলের জলের মান ঠিক রাখাও ব্যয়বহুল। সব দিক ভেবেই পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। বিধাননগর পুরসভার চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তী বলেন, “দীর্ঘ দিন আগেই আমরা ওই সুইমিং পুল তৈরির কাজে হাত দিয়েছিলাম। সল্টলেকের বাসিন্দারা এই পুল ব্যবহার করতে পারবেন। তবে রক্ষণাবেক্ষণের খরচ ব্যয়বহুল। তাই সে বিষয়েও পরিকল্পনা করা হচ্ছে।”
সূত্রের খবর, বৈদ্যুতিক ও আরও কিছু পর্যায়ের কাজ শেষ হলেই সুইমিং পুলটি চালু করবে পুরসভা। তবে শুধু আন্তর্জাতিক স্তরের পুল তৈরি নয়, সার্বিক ভাবে স্পোর্টস কমপ্লেক্সের উন্নয়নেও নজর দিয়েছে পুরসভা। সুইমিং পুলের সঙ্গে যথাযথ ক্যান্টিন, জিম তৈরির পরিকল্পনা হচ্ছে।
একই সঙ্গে স্পোর্টস কমপ্লেক্সের মাঠ দু’টির সংস্কার নিয়েও ভাবনা-চিন্তা করছে পুরসভা। এক পুরকর্তা জানান, আপৎকালীন ব্যবস্থা হিসেবে একটি মাঠের সংস্কারের কাজে হাত দেওয়া হয়েছে। অন্য মাঠটিরও সংস্কার হবে। ময়দানে ফুটবল মরসুম চালুর আগেই মাঠ দু’টিকে নব কলেবরে সাজাতে পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিধাননগর পুর-কর্তৃপক্ষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy