মেট্রো বন্ধ। প্ল্যাটফর্মে ভিড়। শনিবার, সেন্ট্রাল স্টেশনে। —নিজস্ব চিত্র।
লাইনের নীচে অন্ধকারের মধ্যে পড়ে ছিলেন বছর তিরিশের যুবক। চার দিকে ছড়িয়ে রক্ত। তাঁকে তুলে আনার জন্য নানা ভাবে চেষ্টা চলছিল। প্রায় এক ঘণ্টা দশ মিনিটের চেষ্টার পরে উদ্ধার করা হয় ওই যুবককে। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ভাগ্যক্রমে তখনও তিনি জীবিত। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই যুবকের নাম নারায়ণ ঠাকুর। তাঁর বাড়ি ১২ নম্বর প্রেমচাঁদ বড়াল স্ট্রিট। শনিবার বিকেলের এই ঘটনায় ওই যুবক বেঁচে গেলেও প্রশ্ন উঠেছে, মেট্রোর লাইনে ঝাঁপ যেখানে নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা, সেখানে উদ্ধারকাজে এক ঘণ্টারও বেশি সময় লেগে গেল কেন?
ওই যুবক পড়েছিলেন তিন নম্বর কামরার নীচে। কিন্তু কামরার নীচে ঠিক কোথায় ওই যুবক পড়ে রয়েছেন, তা বুঝতে মেট্রো-কর্তৃপক্ষের বেশ কিছুক্ষণ সময় লেগে যায়। একটি মাত্র বড় টর্চ দিয়ে তাঁরা লাইনের নীচে দেখার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু অন্ধকারে তাঁরা যুবকের অবস্থান ঠিক মতো ঠাহর করতে পারছিলেন না। এর পরে ঘটনাস্থলে আসেন বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীরা। তাঁদেরই এক জন বলেন, “ওই যুবক বেঁচে ছিলেন বলেই আমাদের মনে হচ্ছিল।” শেষে ট্রেনের বিদ্যুৎ-সংযোগ ছিন্ন করে ওই কর্মীরা লাইনে নেমে যুবককে তুলে আনেন। তখন ওই যুবক অচৈতন্য।
তবে এই উদ্ধারকাজে এক ঘণ্টারও বেশি সময় লেগে যায়। মেট্রো রেলের প্ল্যাটফর্মে থাকা যাত্রীদের মধ্যেই কেউ কেউ প্রশ্ন তোলেন, মেট্রোয় তো মাঝেমধ্যেই আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে, সেখানে তো উদ্ধারকাজ আরও দ্রুত হওয়া উচিত। যদিও মেট্রোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্রের দাবি, “উদ্ধারকাজে দেরি হয়নি। বরং ওই যুবক বেঁচে আছেন অনুমান করাতেই আমাদের সাবধানে উদ্ধার কাজ করতে হয়েছে। ট্রেনটিকে আমরা আগে পিছিয়ে নিতে পারিনি।”
মেট্রো সূত্রে জানা গিয়েছে, বিকেল চারটে তিন মিনিটে সেন্ট্রাল স্টেশনে নোয়াপাড়ামুখী মেট্রোর সামনে ওই যুবককে ঝাঁপিয়ে পড়তে দেখেন কয়েক জন। সঙ্গে সঙ্গে থামিয়ে দেওয়া হয় ট্রেন। ওই ট্রেনের এক যাত্রী হালিশহরের বাসিন্দা দেবাশিস রায় বলেন, “সেন্ট্রাল স্টেশনে ঢুকে হঠাৎ ঝাঁকুনি দিয়ে থেমে যায় ট্রেনটি। দরজা খুলছিল না প্রায় মিনিট দশ। এর পরে দরজা খুললে স্টেশনে নেমে বুঝতে পারলাম কেউ লাইনে ঝাঁপ দিয়েছে।” এ দিন সেন্ট্রাল স্টেশন দিয়ে ফের ট্রেন চালু হতে পাঁচটা কুড়ি বেজে যায়। প্রায় এক ঘণ্টা কুড়ি মিনিট মেট্রো পরিষেবা বন্ধ থাকায় যাত্রীরা দুর্ভোগের মধ্যে পড়েন। তবে সেন্ট্রাল স্টেশন দিয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকলেও নোয়াপাড়া থেকে গিরিশ পার্ক ও কবি সুভাষ থেকে ময়দান পর্যন্ত ট্রেন চালু ছিল। পাঁচটা কুড়ির পর থেকে ট্রেন চলাচল আবার স্বাভাবিক হয়।
এ দিকে, হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, গুরুতর জখম হয়েছেন ওই যুবক। এখন কোমায় রয়েছেন তিনি। তাঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত লেগেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy