কলকাতার জল সরবরাহ ও নিকাশি ব্যবস্থার সংস্কারে এশীয় উন্নয়ন ব্যাঙ্ক (এডিবি) প্রথম পর্যায়ে কলকাতা পুরসভাকে এক হাজার কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে। সোমবার নয়াদিল্লিতে এডিবি-র প্রতিনিধির সঙ্গে এ ব্যাপারে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় জানান, প্রথম পর্যায়ের টাকায় শহরের সংযোজিত এলাকায় নিকাশি ও জল সরবরাহ ব্যবস্থার কাজ করা হবে। তিনি বলেন, “সইসাবুদ শেষ। এডিবি জানিয়েছে ঋণের টাকা তাড়াতাড়ি পাঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।”
পুরসভা সূত্রের খবর, এর আগে কলকাতা পরিবেশ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় শহরের নিকাশি ব্যবস্থার সংস্কারে দু’দফায় ৩৩ কোটি ডলার বা প্রায় ১৮০০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে কেন্দ্র। এর পরেও কলকাতা পুরসভা ও রাজ্যের দাবি ছিল যাতে শহরের সংযোজিত এলাকায় জল সরবরাহ ও নিকাশি ব্যবস্থার সংস্কারে আরও ঋণ দেয় এডিবি। সে জন্য কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রককে প্রস্তাবও পাঠানো হয়েছিল রাজ্যের তরফে। গত সেপ্টেম্বরেই অর্থ মন্ত্রকের মধ্যস্থতায় নতুন করে আরও ৪০ কোটি ডলার (প্রায় ২৪০০ কোটি) ঋণ দেওয়ার ব্যাপারে সম্মতি দেয় এডিবি। তারই প্রেক্ষিতে এ দিন প্রথম পর্যায়ের এক হাজার কোটি টাকা দেওয়ার ব্যাপারে চুক্তি হয়। পুরসভার পক্ষে হাজির ছিলেন পরিবেশ উন্নয়ন প্রকল্পের (কেইআইআইপি) ডিজি (প্রোজেক্ট) সৌম্য গঙ্গোপাধ্যায়। মেয়র শোভনবাবু জানান, প্রারম্ভিক আলোচনায় ২৪০০ কোটি টাকা ঋণের কথা বলা হলেও পরে সেই পরিমাণ আরও বেড়ে প্রায় ৩৬০০ কোটি টাকা হয়েছে।
কী কী কাজ হবে ঋণের টাকায়?
মেয়র শোভনবাবু জানান, গার্ডেনরিচ থেকে তারাতলা অবধি পানীয় জলের পাইপ লাইন বসানো হবে। বেহালা চৌরাস্তা থেকে জোকা পর্যন্ত রাস্তায় নিকাশি ব্যবস্থা মজবুত করা হবে। মাইক্রো টানেলের মাধ্যমে রাস্তায় জমে থাকা জল ফেলা হবে বেগর খালে। অর্থাৎ কলকাতা পুরসভার ১২৫ ও ১২৬ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার নিকাশি ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটানো হবে।
এডিবি-র সমীক্ষা অনুযায়ী, শহরের জল সরবরাহ সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনা খুবই ত্রুটিপূর্ণ। সেই ব্যবস্থার সংস্কারে খুব বেশি টাকা ব্যয় করা হয়নি। তাই ৫৭০০ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইনের বিভিন্ন ছিদ্রপথে প্রতিদিনই ৩০ কোটি লিটার জল নষ্ট হচ্ছে। তাঁদের বক্তব্য, কলকাতা পুরসভাকে ঋণ দেওয়ার অন্যতম লক্ষ্য হল জলের এই অপচয় বন্ধ করা। উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি জলের অপচয় বন্ধ করা গেলে শহর ও শহরতলি এলাকায় ২৪ ঘণ্টা জল সরবরাহ সুনিশ্চিত করা যেতে পারে বলে মনে করছেন এডিবি কর্তারা।
সে দিকে লক্ষ রেখেই প্রথম পর্যায়ের ঋণের টাকায় উত্তর কলকাতার টালা সংলগ্ন ১ থেকে ৬ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় পাইপলাইনের ছিদ্র থেকে জল অপচয় রুখতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে মেয়র শোভনবাবু জানান। এ ছাড়া পলতায় ২ কোটি গ্যালন ক্ষমতাসম্পন্ন জল শোধনাগার প্রকল্পও করা হবে।
তবে এডিবি সূত্রে জানা গিয়েছে, ঋণের টাকার যথাযথ ব্যবহার না হলে কেইআইপি প্রকল্পে আর ঋণ দেওয়া না-ও হতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy