বাড়িতে নীল-সাদা রং করলে কর ছাড় দেওয়ার পুর-প্রস্তাবের বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল কলকাতা হাইকোর্টে। বৃহস্পতিবার তনভির আহমেদ খান নামে পার্ক স্ট্রিটের এক বাসিন্দা প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলা দায়ের করেছেন।
গত বছর কলকাতা পুরসভা একটি প্রস্তাব গ্রহণ করে জানিয়েছিল, বাড়িতে নীল-সাদা রং করা হলে এক বছরের জন্য কর ছাড় মিলবে। এই প্রস্তাব নিয়ে সে সময়েও বিতর্ক শুরু হয়েছিল। বস্তুত, এই নীল-সাদা রঙের বিষয়টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কপ্রসূত। বিরোধী দলের নেতারা বলেছিলেন, তৃণমূল-শাসিত পুরসভাও দলনেত্রীকে খুশি করার লক্ষ্যেই এই পথে চলছেন।
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছিল, এ ভাবে কর ছাড় দেওয়া কি আদৌ সংবিধান-সম্মত? কোনও রাজনৈতিক দলের নির্দিষ্ট রং করা হলে নাগরিকদের মধ্যে বিভেদ তৈরি হবে কি না, সে প্রশ্নও ওঠে। এ দিন হাইকোর্টে দায়ের করা জনস্বার্থের মামলাতেও একই প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
মামলাকারীর আইনজীবী শুভাশিস চক্রবর্তী জানিয়েছেন, আদালতের কাছে তাঁরা চারটি বিষয় তুলে ধরেছেন। প্রথমত, এ ভাবে কর ছাড় দেওয়া অসাংবিধানিক। দ্বিতীয়ত, সৌন্দর্যায়নের জন্য নীল-সাদা রং করার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু সৌন্দর্যায়ন মানে যে নীল-সাদা রং, সেটা কোথায় বলা হয়েছে? তৃতীয়ত, এ ভাবে কর ছাড় দেওয়ার কথা পুরসভার কোনও আইনে বলা হয়েছে কি না। এবং চতুর্থত, এ ভাবে রং নির্দিষ্ট করা হলে নাগরিকদের মধ্যে রাজনৈতিক বিভেদ তৈরি হবে। এর ফলে যে ব্যক্তিরা বাড়িতে নীল-সাদা রং করবেন না, তাঁরা কোনও আক্রমণের মুখে পড়লে তার দায়িত্ব কে নেবে, সে প্রশ্ন উঠেছে। এই মামলার সপক্ষে দাঁড়িয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবীদের একাংশও। তাঁরা বলছেন, সরকারি ভাবেও শহরের বহু জায়গায় নীল-সাদা রং করা হয়েছে। এর ফলে সরকারি টাকা অপচয় হচ্ছে, এই প্রশ্ন তুলে ওই আইনজীবীদের দাবি, শহর জুড়ে নীল-সাদা রং করা নিয়ে সরকারকে শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে হবে।
এ দিনের মামলার বিষয়ে কলকাতা পুরসভার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “যে কেউ আদালতে যেতেই পারেন।” পুরকর্তাদের একাংশ বলছেন, যেহেতু মামলাটি এখনও গৃহীত হয়নি, তাই এ বিষয়ে মন্তব্য করা উচিত নয় বলে মনে করছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy