এ ভাবেই যাতায়াত। ছবি: শৌভিক দে।
হাডকো মোড় থেকে পূর্ত ভবন যাবেন বলে অটোতে উঠলেন নীহার সরকার। গন্তব্যে পৌঁছে অটোচালককে ভাড়া দিতে গিয়ে শুরু হল গোলমাল। নীহারবাবু ১০ টাকার নোট দিতেই চালক জানালেন আরও দু’টাকা দিতে হবে। নীহারবাবুর দাবি, তিনি প্রায়ই এ পথে যান। এত দিন ১০ টাকাই ভাড়া দিয়েছেন। কিন্তু চালক নাছোড়। শেষ পর্যন্ত ১২ টাকাই দিতে হল।
উল্টোডাঙা থেকে লালকুঠি যাবেন বলে অটো খুঁজছিলেন মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা কুন্তল বসাক। প্রায় আধঘণ্টা পরে অটো মিলল, ভাড়া চাইল ২০ টাকা। চালকের সাফ কথা: ‘‘ওই ভাড়াই দিতে হবে। না হলে অন্য অটো দেখুন।’’ এখানেও যাত্রীকে হার মানতে হল।
বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, সল্টলেকে যাতায়াত করতে গিয়ে অনেক যাত্রীরই এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে। বর্ধিত ভাড়া, যত্রতত্র অটোর স্ট্যান্ড, চালকদের একাংশের দুর্ব্যবহার-সহ একাধিক অভিযোগ উঠলেও প্রশাসনের থেকে শুধুই প্রতিশ্রুতি মিলছে। অভিযোগ পুরোপুরি স্বীকার না করলেও প্রশাসন সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের তরফে অটো নিয়ন্ত্রণের জন্য পদক্ষেপ করা হয়েছে।
সল্টলেকে বাসের সংখ্যা কম। তাই যাতায়াত অনেকাংশে অটোর উপরে নির্ভরশীল। ফলে অধিকাংশ যাত্রী অটোর জোরজুলুম মেনে নিতে বাধ্য হন বলে অভিযোগ। যদিও অটো ইউনিয়নের তরফে বেশি ভাড়া নেওয়ার কথা অস্বীকার করা হয়েছে। তারা জানান, বিভিন্ন স্ট্যান্ডের অটোর ভাড়া নির্দিষ্ট। তবে ফ্লাইং অটোর ক্ষেত্রে মাঝেমধ্যে এমন ঘটে। যদিও তা মানতে নারাজ যাত্রীরা।
উল্টোডাঙা থেকেই করুণাময়ী পর্যন্ত ১০টি রুটে অটো চলে। একই সঙ্গে কাঁকুড়গাছি, ফুলবাগান, বাইপাস-বেলেঘাটা মোড় থেকেও অটো রুট রয়েছে। পাশাপাশি সল্টলেকের যত্রতত্র অটোর স্ট্যান্ডও গজিয়ে উঠেছে। এক সময় বিধাননগর পুরসভা জানিয়েছিল, শহরে অটোর স্ট্যান্ড নির্ধারিত করা হবে। কিন্তু তা হয়নি। যাত্রীদের বক্তব্য, চালকেরা নিজেদের মতো ভাড়া বাড়াচ্ছেন। দেখার মতো কেউ নেই। প্রতিবাদ করলেই চালকদের ‘দাদাগিরি’র মুখোমুখি হতে হয়। পাশাপাশি পাঁচ জন যাত্রী নিয়েও অটো চলছে। কখনও কখনও ছ’জন যাত্রীও তোলা হয় বলে অভিযোগ। যদিও বিধাননগর পুলিশ কর্তাদের একাংশের দাবি, অভিযোগ এলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
সল্টলেক পুরকর্তৃপক্ষের একাংশের বক্তব্য, নির্ধারিত অটো স্ট্যান্ডের বিষয়ে ইতিমধ্যেই পরিকল্পনা রয়েছে। পুরসভার চেয়ারপার্সন পারিষদ অশেষ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রিকশা-সহ বিভিন্ন গাড়ির স্ট্যান্ড নিয়ে কাউন্সিলর এবং ইউনিয়নগুলির সঙ্গে আলোচনা করা হবে।’’
রাজ্য পরিবহণ দফতরের এক কর্তা জানান, ইতিমধ্যেই অটোর ক্ষেত্রে কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে। কিন্তু তার পরেও কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। এই সমস্যা নিয়ে ফের আলোচনা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy