দেখতে ধোপদুরস্ত, একাধিক ভাষাতেও চোস্ত। পাসপোর্ট অফিসের সামনেই ঘোরাঘুরি করত সে। আর তার নিশানায় থাকত চাকরির জন্য দেশের বাইরে যেতে ইচ্ছুক লোকজন। দেশের বাইরে চাকরি ও সহজে পাসপোর্ট করে দেওয়ার কথা বুঝিয়ে সে সহজেই ফাঁদে ফেলত তাঁদের। আর তার পরেই মুদ্রা বিনিময়ের টোপ দিয়ে টাকা হাতিয়ে ব্যাঙ্কের ভিতরে গিয়ে হঠাৎ উধাও হয়ে যেত। খোঁজ করেও তার নাগাল পেতেন না প্রতারিত ব্যক্তি।
সিকন্দর হুসেন ওরফে শেখ সেলিম নামে ওই ব্যক্তিকে শনিবার বিকেলে রেসকোর্সের মাঠের সদস্যদের গেটের সামনে থেকে গ্রেফতার করেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। বজবজের জমিন্দার পাড়ার বাসিন্দা ওই প্রতারকের কাছ থেকে উদ্ধার হয় নকল সদস্যপত্র, প্রচুর চুক্তিপত্রের কাগজ, বিভিন্ন দেশে যাওয়ার নকল ‘ভিসা’ এবং প্রচুর ভিজিটিং কার্ড। রবিবার আদালতে তার চার দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
পুলিশ জানায়, বছরখানেক ধরে এ ভাবেই চলছিল সিকন্দরের ‘অপারেশন’। এ বছরই তার নামে অন্যান্য থানাতেও একই রকমের চার-পাঁচটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ২০১৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর শেক্সপিয়র সরণি থানায় বারাসতের বাসিন্দা রাহুল দত্ত আড়াই লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন।
রাহুলবাবুর অভিযোগ, কানাডায় যাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তাঁকে বিভিন্ন কাগজ এবং চুক্তিপত্রে সই করিয়ে নেয় সিকন্দর। তার পরে মুদ্রা বিনিময়ে নাম করে টাকা নিয়ে ব্যাঙ্কের ভিতরে গিয়ে উধাও হয়ে যায়। ধৃতকে গ্রেফতারের পরে জেরায় পুলিশ জেনেছে, কানাডা, আবু ধাবি, লন্ডন, অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়া এবং সেখানে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন লোককে ফাঁদে ফেলত সিকন্দর। বিভিন্ন ফর্ম, রসিদ এবং চুক্তিপত্রে সই করাত সে। যাতে উল্লেখ থাকত দেশের বাইরে গিয়ে চাকরি করলে সেই ব্যক্তির কোম্পানির বেতন থেকে কিস্তিতে টাকা কেটে দেওয়া হবে সিকন্দরকে। যা দেখে স্বাভাবিক ভাবেই সন্দেহ হত না কারও। তার পরে মুদ্রা বিনিময়ের জন্য টাকা নিয়ে বিভিন্ন বেসরকারি ব্যাঙ্কের সামনের দরজা দিয়ে ঢুকে পিছনের দরজা দিয়ে উধাও হয়ে যেত সে। পুলিশের অনুমান, এই কাজে সিকন্দরের সঙ্গে আরও অনেকে যুক্ত থাকতে পারে। ঘটনাটির সবিস্তার তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy