অবশেষে কিছুটা হলেও উৎকণ্ঠা কাটল গণধর্ষিতা রেলকর্মীর। ডাক্তারি পরীক্ষার পরে সোমবার নীলরতন সরকার হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানান, তাঁর গর্ভের শিশুটি সুস্থ আছে।
চিৎপুর রেলইয়ার্ডে দিনের পর দিন নির্যাতন চলেছে ওই মহিলার উপরে। সেই অভিযোগ জানাতে গিয়ে থানায় হেনস্থা হয়েও চোখের জল ফেলেননি ওই মহিলা। দাঁতে দাঁত চেপে সব অপমান সহ্য করেছিলেন। কিন্তু এ দিন গর্ভের শিশুটি সুস্থ রয়েছে জানতে পেরে ঝরঝর করে কেঁদে ফেলেন তিনি। বলেন, “এত যন্ত্রণা সহ্য করেও শুধু ওর সুস্থ জীবন প্রার্থনা করছিলাম।” খুশিতে চোখের জল মুছেছেন তাঁর স্বামীও।
শনিবার রাত থেকে নীলরতন সরকার হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু হয়েছে নির্যাতিতার। হয়েছে ডাক্তারি পরীক্ষা, আলট্রাসোনোগ্রাফি-ও। ঘটনার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছিলেন শিশু ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা। সোমবার সকালে হাসপাতালে মেয়েটিকে দেখতে যান তিনি। পরে মন্ত্রী বলেন, “মেয়েটি এবং তাঁর গর্ভস্থ বাচ্চা ভাল আছে। তবে মেয়েটি অ্যানিমিয়া আর ট্রমায় ভুগছে।” সরকারি দায়িত্বেই তাঁর চিকিৎসা ও প্রয়োজনে কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থাও করা হবে বলে জানান মন্ত্রী।
নির্যাতিতাকে সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে কি? মন্ত্রী বলেন, “এই অবস্থায় মেয়েরা সরকারি সাহায্য পায়। বিষয়টি স্বরাষ্ট্র দফতরকে জানাব। মেয়েটি অন্যত্র চাকরির আর্জি জানালে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।”
ওই নির্যাতিতা মন্ত্রীকে বলেন, “আমার জীবন যারা দুর্বিসহ করেছে তাদের ফাঁসি চাই।” তাঁর স্বামীও মন্ত্রীকে বলেন, “আমার স্ত্রী-সন্তান সুস্থ হয়ে উঠুক। রাজ্যের কোনও মহিলার সঙ্গে যেন এমন ভয়ঙ্কর ঘটনা না ঘটে শুধু সেটাই চাই।” মন্ত্রী তাঁদের আশ্বাস দেন, দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আবেদন জানাবেন তিনি।
চিৎপুরের এই গণধর্ষণের ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধী দলগুলিও। আগামী বৃহস্পতিবার প্রদেশ কংগ্রেস রাস্তায় নামছে। প্রদেশ কংগ্রেস সূত্রের খবর, ওই দিন শিয়ালদহে আরপিএফ এবং জিআরপি-র কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখানো হবে। ঘটনার নিন্দা করে বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু এ দিন বলেন, “চিৎপুর রেল ইয়ার্ডে যে ঘটনা ঘটেছে, তা নিয়ে রাজ্য দায় এড়াতে পারে না। কারণ, জিআরপি রাজ্যের অধীনে।” বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহও বলেন, “অপরাধীদের কঠোর শাস্তি হোক। আগামী দিনে এমন জঘন্য ঘটনা আর যাতে না ঘটে সেটাই চাই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy