নির্বাচনী গোল। সোমবার, সল্টলেকের পূর্বাচলে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
এক ভোটের দুই চিত্র। খাস সল্টলেকের বেশির ভাগ বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকায় কার্যত বড় কোনও গোলমালের অভিযোগ আসেনি। অথচ দমদম, নিউ টাউন, রাজারহাট এলাকায় বেশ কিছু বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী না থাকায় বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বুথ জ্যাম-সহ বেশ কিছু অভিযোগ এল দিনভর।
সোমবার, ভোটের সল্টলেকে বড় গোলমাল হয় বারাসতের বিজেপি প্রার্থী পি সি সরকারকে ঘিরে। তিনি সল্টলেকের দু’টি বুথে ভোট পরিদর্শনে গিয়ে তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন। পূর্বাচল আবাসনের কাছে স্থানীয় কাউন্সিলর মিনু চক্রবর্তী ও বিকে ব্লকের একটি স্কুলের বুথে সল্টলেক পুরসভার চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তী বিজেপি প্রার্থীর বুথের মধ্যে ভোট পরিদর্শন নিয়ে আপত্তি তোলেন। তৃণমূলের অভিযোগ, ভোটারদের প্রভাবিত করতে বিজেপি প্রার্থী লোকজন, সংবাদমাধ্যম নিয়ে বুথে বুথে যাচ্ছেন। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপি প্রার্থীর দাবি, তিনি প্রার্থী হিসাবে ভোট পরিদর্শন করতে যান।
এর পাশাপাশি দুপুরে বিডি পার্কের কাছে প্রাক্তন মহিলা কাউন্সিলর সিপিএমের মায়া মণিগ্রামকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। বিধাননগর পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ তৃণমূলের অনুপম দত্তের মদতেই এমন ঘটে বলে তাঁর অভিযোগ। তিনি অনুপমবাবুর বিরুদ্ধে সল্টলেক উত্তর থানায় অভিযোগও দায়ের করেন। এর কিছু পরেই বিজি ব্লকে যান অনুপমবাবু। তার পরে পুলিশের সামনেই সিপিএমের ক্যাম্প ভাঙচুর করা হয়। এই ঘটনার পিছনেও অনুপমবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে সিপিএম। দুটি অভিযোগই অস্বীকার করে অনুপমবাবুর দাবি, “সব ভিত্তিহীন।” নির্বাচন কমিশনও বলে, ভোট মোটের উপর শান্তিপূর্ণ।
কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতিতেই সল্টলেকের সংযুক্ত এলাকা নাওভাঙা, নবপল্লি এলাকায় একটি বুথ থেকে সিপিএমের এক এজেন্টকে বার করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। সিপিএমের তরফে অভিযোগ পাঠানো হয় নির্বাচন কমিশনের কাছে। মূল সল্টলেক, দত্তাবাদ ও সংযুক্ত এলাকার বিভিন্ন বুথে ছাপ্পা দেওয়ার অভিযোগও ওঠে। যদিও নির্বাচন কমিশন এমন তথ্য মানতে নারাজ। বিকেলের পর থেকে ফাল্গুনী আবাসনের পিছনে একটি স্কুলের বুথের ভিতরে ও বাইরে দু’পক্ষের মধ্যে গোলমাল হয়। রাতে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
দুপুর বারোটা নাগাদ বাঙুরের একটি বুথের বাইরে সিপিএম ও তৃণমূলের মধ্যে বচসা থেকে হাতাহাতি হয়। অভিযোগ, সিপিএম-এর অস্থায়ী অফিসে ঢুকে মারধর করে তৃণমূল কর্মীরা। ঘটনায় দীপঙ্কর সেনগুপ্ত ও সুফল বসু নামে দুই ডিওয়াইএফআই কর্মী আহত হন। দীপঙ্করবাবুকে আর জি কর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযোগ, রাজ্য পুলিশের সামনেই ঘটনাটি ঘটে। সল্টলেক পুলিশ জানায়, ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদিও তৃণমূল কর্মীরা জানান, বুথের সামনে সিপিএম কর্মীরা ভিড় করছিলেন। তার প্রতিবাদ করাতে সিপিএম কর্মীরাই তাদের মারধর করে।
অন্য দিকে যে বুথগুলিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী নেই, সেখানে বেলা গড়াতে ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ উঠতে থাকে। যেমন দমদমের ক্লাইভ হাউসের কাছে একটি বুথে এক ব্যক্তি অন্যের নামে ভোট দিচ্ছেন, এই অভিযোগে এলাকা উত্তপ্ত হয়। বুথের সামনে দু’পক্ষের কর্মীরা ভিড় করতে থাকেন। পরে দমদম থানার পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দেয়। দমদমের মধুগড়ে এক সিপিএম এজেন্টকে মারধর করে বুথের বাইরে বার করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। বিকেলে ওই বুথে দিয়ে দেখা যায়, তৃণমূল ছাড়া অন্য কোনও দলের এজেন্ট নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy