সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টরে বাস ও গাড়ির পার্কিং সমস্যা মেটাতে একটি কেন্দ্রীয় টার্মিনাস তৈরির পরিকল্পনা করেছে সেখানকার দায়িত্বে থাকা প্রশাসনিক সংস্থা ‘নবদিগন্ত ইন্ডাস্ট্রিয়াল টাউনশিপ অথরিটি’। সংস্থার ২০১৪-১৫ সালের বাজেটে এর জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে প্রায় দু’কোটি টাকা।
প্রশাসন সূত্রে খবর, পাঁচ নম্বর সেক্টরের সমস্যা মূলত দু’টি। এক দিকে যেখানে-সেখানে বাস থামিয়ে যাত্রী তোলা, অন্য দিকে বাস পার্কিংয়ের জন্য নির্দিষ্ট জায়গার অভাব। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে বিভিন্ন অফিসের সামনে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ি। ওই বাসগুলির রুট পারমিট রয়েছে পাঁচ নম্বর সেক্টর পর্যন্ত। কিন্তু সেখানে কোথায় বাস দাঁড় করাতে হবে, সে বিষয়ে রুট পারমিটে কিছু বলা নেই। যার মিলিত ফল, পার্কিং সমস্যায় জেরবার সল্টলেকের শিল্পতালুক। পুলিশ-প্রশাসন কার্যত দর্শক।
নবদিগন্তের এক কর্তা জানান, টার্মিনাস তৈরি হলে সেখানেই বাস রাখতে হবে। লাইসেন্সে নবদিগন্ত টার্মিনাস বলেই উল্লেখ করার কথা পরিবহণ দফতরকে ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে। এর ফলে যেখানে-সেখানে বাস দাঁড় করালে ব্যবস্থা নিতে পারবে প্রশাসন।
নবদিগন্ত সূত্রের খবর, ২১৫এ বাসস্ট্যান্ডের পিছনে প্রায় ১ একর জায়গা জুড়ে এই কেন্দ্রীয় টার্মিনাস তৈরি হবে। সেখানে একসঙ্গে ৩০টি বাস রাখার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বাকি অংশের মধ্যে ৩০০ বর্গফুট জায়গায় চার চাকার গাড়ি ও ট্যাক্সি স্ট্যান্ড তৈরির চিন্তা-ভাবনা করছেন উদ্যোক্তারা।
যদিও প্রস্তাবিত কেন্দ্রীয় টার্মিনাসে গাড়ি রাখা নিয়ে সংশয় রয়েছে শিল্পতালুকের তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীদের একাংশের মধ্যেই। এসডিএফ-এর কাছে একটি সংস্থায় কাজ করেন গড়িয়ার বাসিন্দা নির্মাল্য মজুমদার। তিনি বললেন, “শিল্পতালুকে ২১৫এ বাসস্ট্যান্ডের পিছনে ওই প্রস্তাবিত কেন্দ্রীয় টার্মিনাস বা পরিবহণ দফতরের সেই জমি থেকে আমার অফিস অনেক দূর। হেঁটে যেতে অনেকটা সময় লাগবে।”
এই সমস্যা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নবদিগন্তের কর্তারা। তাঁরা জানিয়েছেন, টার্মিনাস বা পার্কোম্যাট থেকে ব্যাটারি-চালিত গাড়ি শিল্পতালুকের মধ্যে যাতায়াত করবে। ফলে নিজেদের গাড়ি রেখে সেই ব্যাটারি-চালিত গাড়িতেই অফিসে যেতে পারবেন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মীরা। পাশাপাশি, শিল্পতালুকের মধ্যেও ইন্টারসিটি সার্ভিস দেওয়ার ভাবনাচিন্তা চলছে।
কিন্তু স্রেফ একটি টার্মিনাস হলেই কি পাঁচ নম্বর সেক্টরে পার্কিং সমস্যা মিটবে? এ ব্যাপারে রাজ্যের পুরমন্ত্রী তথা নবদিগন্তের চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম গত ১৮ ফেব্রুয়ারি বলেছিলেন, “পরিবহণ দফতরের একটি জমি পেলে বহুতল পার্কোম্যাটের কথাও ভাবা হচ্ছে। পরিবহণ দফতরের সঙ্গে সে বিষয়ে কথা বলব। শিল্পতালুকে আরও কয়েকটি জায়গার খোঁজ করা হচ্ছে। সেখানেও পার্কিং লট তৈরির চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।”
সংস্থার এক কর্তার বক্তব্য, রিং রোড তৈরি হয়ে গেলে সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টরে গাড়ি পার্কিং পুরো বন্ধ করে দেওয়া হবে। কারণ, তা করা না হলে মাত্র ৪৩২ একরের নবদিগন্ত এলাকায় যানজট কমানো যাবে না। কিন্তু সেই পরিকল্পনা কার্যকর করতে হলে আগে দরকার এই ধরনের বহুতল পার্কোম্যাট বা টার্মিনাস তৈরি করা। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের পরে টার্মিনাসের কাজ শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছেন নবদিগন্তের কর্তারা। ছ’মাসের মধ্যেই কাজ শেষ করা হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy