পাতিপুকুর মাছ বাজারের কর্মী পুষ্পেন্দুর মৃত্যুর পরে ওই রাতে ঘটনাস্থল সংলগ্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছিল উত্তেজনা। শুরু হয় বিক্ষোভ। টায়ার জ্বালিয়ে ঘণ্টাখানেক রাস্তা অবরোধ করেন স্থানীয়েরা।
পাতিপুকুরে এই জায়গাতেই ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয় পুষ্পেন্দু দপ্তরির। বৃহস্পতিবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
পাতিপুকুরে ট্রেনের ধাক্কায় এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় অভিযোগ উঠেছে পুলিশের ‘অতি সক্রিয়তা’ নিয়ে। বুধবার সন্ধ্যায় ট্রেনের ধাক্কায় মারা যান টালা থানা এলাকার মেট্রো কলোনির বাসিন্দা পুষ্পেন্দু দপ্তরি (২২)। তাঁর বাড়ির লোকেদের অভিযোগ, লেক টাউন থানার পুলিশের তাড়া খেয়েই রেললাইন ধরে পালাতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে পুষ্পেন্দুর। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওই যুবকের দেহ তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। রাতে নিমতলা শ্মশানে তাঁর অন্ত্যেষ্টি হয়েছে বলে পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে।
এ দিন এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ লেক টাউন থানার বিরুদ্ধে। যদিও বিধাননগরের পুলিশকর্তাদের দাবি, বুধবার সন্ধ্যায় লেক টাউন থানা ওই এলাকায় কোনও অভিযান চালায়নি।
পাতিপুকুর মাছ বাজারের কর্মী পুষ্পেন্দুর মৃত্যুর পরে ওই রাতে ঘটনাস্থল সংলগ্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছিল উত্তেজনা। শুরু হয় বিক্ষোভ। টায়ার জ্বালিয়ে ঘণ্টাখানেক রাস্তা অবরোধ করেন স্থানীয়েরা। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। দমদম জিআরপি থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুষ্পেন্দুর মৃত্যু নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে জিআরপি। এ দিনও ঘটনাস্থলে যান জিআরপি-র কর্তারা।
ঘটনাস্থলের কাছে রেললাইনের ধারেই থাকেন নীরা ঝা। তিনি বলেন, ‘‘ওই সময়ে ঘরে রান্না করছিলাম। হঠাৎ চিৎকার শুনতে পেলাম। মনে হল, ট্রেনে কেউ কাটা পড়েছে।’’ স্থানীয়দের দাবি, পাতিপুকুর রেল সেতু সংলগ্ন এলাকায় সন্ধ্যার পর থেকেই নেশার আসর বসে। তাই মাঝে মাঝে ওই এলাকায় অভিযান চালায় লেক টাউন থানার পুলিশ। বুধবার সন্ধ্যায় তেমন অভিযানই হয়েছিল বলে তাঁদের দাবি।
প্রশ্ন উঠেছে, রেললাইনে উঠে লেক টাউন থানা অভিযান চালাবে কেন? বিধাননগর কমিশনারেটের ডি সি (সদর) সূর্যপ্রকাশ যাদব অবশ্য বলেন, ‘‘ঘটনাস্থল আমাদের এলাকায় পড়ে না।’’ এস আর পি (শিয়ালদহ) বি ভি চন্দ্রশেখর বলেন, ‘‘বুধবার সন্ধ্যায় ওই এলাকায় জিআরপি কোনও অভিযান করেনি। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিল তারা।’’ তবে কোন পুলিশ গিয়েছিল? ধোঁয়াশা সেখানেই।
পুষ্পেন্দুর মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন পরিজনেরা। মৃতের বাবা সুশীল দপ্তরির দাবি, ‘‘বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেললাইনের ধারে বসে হাওয়া খাচ্ছিল ছেলেটা। মোবাইলে গেম খেলছিল। সেই সময়ে লেক টাউন থানার পুলিশ গিয়ে চার জনকে আটক করে। বাকিরা পালালে পুলিশ তাড়া করে। লাইন দিয়ে পালাতে গিয়েই ট্রেনে কাটা পড়ে আমার ছেলে। এ বার আমি কী করব, জানি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy