-প্রতীকী চিত্র।
বিয়ের নাম করে বছর আটত্রিশের এক মহিলাকে রাজস্থানে নিয়ে গিয়ে এক লক্ষ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। আরও অভিযোগ, তাঁকে ভুলিয়ে রাজস্থানে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করেছিল তাঁরই পাশের গ্রামের এক দম্পতি। রাজস্থান পুলিশের সাহায্য নিয়ে মঙ্গলবার ওই রাজ্যের ভিওয়াড়ী থেকে তরুণীকে উদ্ধার করেছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। এ দিনই তাঁকে দিল্লিতে নিয়ে আসা হয়েছে। তবে অভিযুক্ত দম্পতি এখনও অধরা।
বারুইপুর জেলার মানবপাচার রোধ শাখার আধিকারিক কাকলি ঘোষ জানাচ্ছেন, সম্প্রতি ঝড়খালির এক তরুণীকে রাজস্থানে পাচার করা হয়েছে জানিয়ে তাঁর কাছে ঝড়খালি উপকূল থানা থেকে ফোন আসে। ফোন পেয়েই দিল্লির একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। তাদের তৎপরতায় উদ্ধার হয় তরুণী।
ঝড়খালি উপকূল থানা সূত্রের খবর, গত বছরের জুলাইয়ে বছর কুড়ির এক যুবক পুলিশের কাছে অভিযোগে জানিয়েছিলেন, ১২ জুলাই ভোরে তাঁর মা বাড়ি থেকে বেরোন। আর বাড়ি ফেরেননি। ছেলের সন্দেহ, কেউ তাঁর মাকে ভুলিয়ে অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও প্রথমে ওই তরুণীর খোঁজ মেলেনি। এর পরে সম্প্রতি বাসন্তী থানা থেকে ফোন আসে ঝড়খালি উপকূল থানায়। বাসন্তী থানার আধিকারিকেরা জানান, ফোনে এক মহিলা তাঁদের জানিয়েছেন, তাঁকে রাজস্থানে নিয়ে গিয়ে ছেলের বয়সি এক যুবকের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: দুর্ভোগ কমলেও জমা জল ফেলা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন
খবর পেয়েই বারুইপুরের মানবপাচার রোধ শাখার আধিকারিক কাকলি ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় ঝড়খালি উপকূল থানার তরফে। সেই সূত্রে দিল্লির স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির কর্ণধার বীরেন্দ্রকুমার সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করেন কাকলি। বীরেন্দ্র রাজস্থান পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই তরুণীর মোবাইল ফোনের অবস্থান খুঁজে বার করেন। দেখা যায়, সেটি ভিওয়াড়ী জেলার। সেখান থেকেই তরুণীকে উদ্ধার করা হয়।
ওই তরুণী জানিয়েছেন, ঝড়খালিতে তাঁর শ্বশুরবাড়ি। কিছু দিন ধরে স্বামীর সঙ্গে তাঁর অশান্তি চলছিল। শ্বশুরবাড়িতে মাঝেমধ্যে আসত পাশের গ্রামের বাসিন্দা লিয়াকত আলি মোল্লা নামে এক ব্যক্তি। সেই সূত্রে তার সঙ্গে আলাপ হয় ওই তরুণীর। এক দিন ভোরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে তিনি লিয়াকতের বাড়ি যান। লিয়াকত ও তার স্ত্রী প্রথমে তাঁকে তাদের মেয়ের বাড়ি, পরে গাড়িতে চাপিয়ে দিল্লি হয়ে রাজস্থানে নিয়ে যায়। তরুণীর অভিযোগ, সেখানে তাঁকে বেশ কয়েক জন ছেলেকে দেখানো হয়। শেষে বছর পঁচিশের এক জনের হাতে তাঁকে বিয়ের নাম করে তুলে দেওয়া হয়। এর বদলে এক লক্ষ টাকা নেয় লিয়াকত।
অভিযোগে তরুণী জানিয়েছেন, গত বছর জুলাইয়ের শেষ থেকে তিনি ওখানেই ছিলেন। বাড়ি আসতে চাইলেও আসতে দেওয়া হত না। লিয়াকতের স্ত্রীর থেকে ফোন নিলেও পরে সেটি ভেঙে দেওয়া হয়। শেষে গান শোনার নাম করে ফোন নিয়ে বাসন্তী থানায় ফোন করেন তরুণী।
আরও পড়ুন: মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির নামে ‘প্রতারণা’, গ্রেফতার ১
দিল্লির ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি জানাচ্ছে, ভিওয়াড়ীতে গিয়ে তারা জানতে পারে, সেখানে মেয়েদের জন্মহার ছেলেদের তুলনায় অনেক কম। ফলে গ্রামগুলিতে মেয়ের সংখ্যাও কম। সেই কারণে অনেক পরিবারের ছেলেরাই বিহার বা বাংলার মেয়েকে বিয়ে করে নিয়ে আসেন। তেমন ভাবেই নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ওই তরুণীকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy