Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

সেতুতে ট্রেন থেকে যুবকের অন্তর্ধান

ডানকুনিতে নৈশ ক্রিকেট খেলার জন্য অন্যদের সঙ্গে বরাহনগর থেকে লোকাল ট্রেনে চেপেছিলেন তিনি। ট্রেন যখন বালি ব্রিজের মাঝামাঝি, তখন থেকে আর খোঁজ নেই নিমতার রাজীব চক্রবর্তীর। সূত্র বলতে রাজীবের এক সঙ্গীর দাবি, ওই সময় কিছু যাত্রী ‘পড়ে গেল, পড়ে গেল’ বলে চিৎকার করে উঠেছিলেন। রাজীব কি ট্রেন থেকে রেললাইনের ফাঁক গলে পড়ে গেলেন গঙ্গায়?

রাজীব চক্রবর্তী।

রাজীব চক্রবর্তী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৫ ০২:৪৮
Share: Save:

ডানকুনিতে নৈশ ক্রিকেট খেলার জন্য অন্যদের সঙ্গে বরাহনগর থেকে লোকাল ট্রেনে চেপেছিলেন তিনি। ট্রেন যখন বালি ব্রিজের মাঝামাঝি, তখন থেকে আর খোঁজ নেই নিমতার রাজীব চক্রবর্তীর।

সূত্র বলতে রাজীবের এক সঙ্গীর দাবি, ওই সময় কিছু যাত্রী ‘পড়ে গেল, পড়ে গেল’ বলে চিৎকার করে উঠেছিলেন। রাজীব কি ট্রেন থেকে রেললাইনের ফাঁক গলে পড়ে গেলেন গঙ্গায়? নাকি ২৪ বছরের ওই যুবকের অন্তর্ধানে অন্য রহস্য আছে? রবিবার রাতের ওই ঘটনার পরে দক্ষিণেশ্বর জিআরপি এবং বালি থানায় নিখোঁজ-ডায়েরি করে রাজীবের পরিবার। রেল পুলিশ ও বালি থানা তদন্ত করছে। রিভার ট্রাফিক পুলিশ গঙ্গায় তল্লাশি চালিয়েও রাজীবের সন্ধান পায়নি।

পুলিশি সূত্রের খবর, উত্তর নিমতার কে কে রামদাস রোডের বাসিন্দা বাসুদেব চক্রবর্তীর বড় ছেলে রাজীব ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেট খেলেন। একটি মোবাইল সংস্থায় কাজ করছিলেন। মাঝেমধ্যে অন্য ক্লাবের হয়ে খেলতে যেতেন রাজীব।

রবিবার ট্রেনে ওঠার আগে পাড়ার মাঠে কিছু ক্ষণ খেলেন রাজীব। তার পরে তিনি তমাল দাস নামে এক বন্ধুকে খেলতে যাওয়ার কথা জানান। তমাল বলেন, “আমিও যেতে চাইলে রাজীব রাজি হয়নি। ও যে ডানকুনি যাচ্ছে, তা-ও বলেনি। বলেছিল, বালিতে খেলা আছে। ও বেরোনোর কিছু পরে এক বন্ধু ফোনে জানায় রাজীব ট্রেন থেকে পড়ে গিয়েছে।”

প্রশ্ন উঠছে, কোথায় খেলতে যাচ্ছেন, সেই বিষয়ে ওই বন্ধুকে ঠিক কথা কেন বলেননি রাজীব? কেনই বা সঙ্গে নিলেন না তাঁকে? ট্রেন থেকে যদি পড়ে গিয়েই থাকেন, কী ভাবে পড়লেন? জবাব মিলছে না।

রাজীব যে-বাল্যবন্ধুর সঙ্গে ক্রিকেট ম্যাচ খেলতে যাচ্ছিলেন, সেই রিন্টু পাল পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, রাত সওয়া ১০টা নাগাদ তাঁরা বরাহনগর স্টেশনে যান। দলে ৮-১০ জন ছিলেন। প্রথমে সকলেই ওঠেন সাড়ে ১০টার শিয়ালদহ-ডানকুনি লোকালের ভেন্ডার কামরায়। পরে দক্ষিণেশ্বরে রিন্টু ও রাজীব পরের কামরায় চলে যান। রিন্টু বলেন, “আমার ফোনে ব্যালান্স শেষ হয়ে যাওয়ায় রাজীবের মোবাইল নিয়ে ম্যাচ আয়োজকদের ফোন করছিলাম। ট্রেন ছাড়তেই রাজীব ডান দিকের দরজায় গিয়ে দাঁড়ায়।” রিন্টুর দাবি, বালি ব্রিজের মাঝামাঝি ট্রেন পৌঁছতেই কিছু যাত্রী চিৎকার করে ওঠেন ‘পড়ে গেল পড়ে গেল’! রিন্টু বলেন, “সিটে বসে ছিলাম। চিৎকার শুনে পিছন ফিরে দেখি, রাজীব দরজায় নেই। তখনই বুঝি, কিছু একটা ঘটেছে।”

বালিঘাটে ট্রেন থেকে নেমে রিন্টু বিষয়টি দলের অন্যদের জানান। সকলে বালি ব্রিজের মাঝামাঝি পর্যন্ত হেঁটে গিয়ে খোঁজাখুঁজি করেন। কিন্তু রাজীবকে কোথাও পাওয়া যায়নি। তার পরে তাঁরা জিআরপি-কে সব জানান। রেল পুলিশও রেললাইন বরাবর সেতুতে তল্লাশি চালায়। তল্লাশি চলে সোমবার সকালেও।

এক পুলিশ অফিসার জানান, সেতুর কিছু জায়গায় রেললাইনের মধ্যে হাঁটার জন্য কাঠামোর উপরে লোহার পাত রয়েছে। আবার কিছু জায়গায় কাঠামো পুরো খোলা। হতে পারে ট্রেন থেকে ছিটকে গিয়ে সেই ফাঁক দিয়েই গঙ্গায় পড়ে যান রাজীব। এ দিন সকালে নৌকো ভাড়া করে গঙ্গায় টহল দেন রাজীবের পরিজন। বিভিন্ন হাসপাতালেও খোঁজ করেন। কিন্তু ওই যুবকের সন্ধান মেলেনি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE