কালীঘাট মন্দিরের পাঁচ নম্বর গেটের বাইরে পুজোর লাইনে দূরত্ব-বিধি ভঙ্গ। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
করোনার আতঙ্ক এ বার কালীঘাট মন্দিরেও! সম্প্রতি ওই মন্দিরের এক সেবায়েত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মন্দিরের পাঁচ নম্বর গেটের ঠিক উল্টো দিকে তাঁর বাড়ি। তা ছাড়া, মন্দির লাগোয়া একটি প্রসাদের দোকানও রয়েছে তাঁর। গত সোমবার ওই সেবায়েতের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। তার পর থেকেই তিনি একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানিয়েছে ‘কালীঘাট মন্দির সেবায়েত কাউন্সিল’। শুধু ওই সেবায়েতই নন, সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হয়ে ‘কালী টেম্পল কমিটি’র এক কর্তার আত্মীয়দের মধ্যে এক জন মারা গিয়েছেন বলে সূত্রের খবর।
সেবায়েত কাউন্সিলের সম্পাদক দীপঙ্কর চট্টোপাধ্যায় বললেন, ‘‘আক্রান্ত সেবায়েত মন্দিরে নিয়মিত যাতায়াত করতেন। মন্দিরের চার দেওয়ালের ভিতরে জীবাণুনাশের সব রকম ব্যবস্থা করা হয়েছে। মন্দির থেকে কোনও ভাবেই সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা নেই। কিন্তু মন্দিরের বাইরে সংক্রমণের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। সেই কারণে আমরা মন্দিরের বাইরেও কিছুটা এলাকা জীবাণুমুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’
মন্দির কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, মন্দিরের ভিতরে পুজোর কোনও রকম ব্যবস্থা না থাকায় এক শ্রেণির পাণ্ডা মন্দিরের আশপাশে যজমানদের জড়ো করে পুজো করছেন। হাতে ফুল নিয়ে মন্দিরের চুড়োর দিকে তাকিয়ে পাণ্ডাদের সঙ্গে মন্ত্র জপ করে পুজো সারছেন অনেকেই। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই হাজারখানেক মানুষ জমায়েত হয়ে মন্দিরের চারপাশে এ ভাবেই পুজো করছেন বলে মন্দির কমিটি সূত্রের খবর। মন্দির কমিটি ও সেবায়েত কাউন্সিলের আধিকারিকদের বক্তব্য, ওই জমায়েত থেকেই সংক্রমণ ছড়াচ্ছে বলে তাঁদের আশঙ্কা। আসন্ন কালীপুজোয় হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী করোনা সংক্রান্ত সব রকম বিধিনিষেধ মেনে চলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ‘কালী টেম্পল কমিটি’।
কমিটি জানিয়েছে, যে সমস্ত দর্শনার্থী বাইরে পুজো দিচ্ছেন, তাঁদের উপরে কড়া নজরদারি চলবে। সাধারণ ভাবে এখন সকাল ৬টা থেকে বেলা ১২টা ও বিকেল ৪টে থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মন্দির খোলা রাখা হচ্ছে দর্শনার্থীদের জন্য। প্রসাদ বা ফুল নিয়ে মন্দিরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। কালীপুজোর দিনও এই নিয়ম বলবৎ রাখা হবে বলে মন্দির কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে। বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, কালীঘাট মন্দিরের ভিড় নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পুলিশকে। মন্দির কমিটির কোষাধ্যক্ষ কল্যাণ হালদার বললেন, ‘‘মন্দিরের চার দেওয়ালের ভিতরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করবেন কমিটির সদস্যেরা। কিন্তু মন্দিরের বাইরের ভিড় অথবা জমায়েত নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব স্থানীয় থানার। আমরা মন্দির কমিটির তরফে কালীপুজোয় ভিড় নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করব।’’
কিন্তু সম্প্রতি এক সেবায়েত সংক্রমিত হওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে মন্দিরের অন্য সেবায়েতদের মধ্যেও। কালীপুজোর ভিড়ের কথা ভেবে এখন ভীত হয়ে পড়েছেন কালী টেম্পল কমিটি ও সেবায়েত কাউন্সিলের সদস্যেরা।
সেবায়েত কাউন্সিলের সম্পাদক দীপঙ্কর চট্টোপাধ্যায় বললেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরেই মন্দিরের পাঁচ নম্বর গেটের বাইরে লোকজন জড়ো করে পুজো করা হচ্ছে। আর সংক্রমণও ছড়িয়েছে ওই চত্বরেই। পুণ্যার্থীদের অনেকে তো মাস্কটুকুও পরছেন না। আমরা গোটা বিষয়টি পুলিশকে জানিয়ে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করার অনুরোধ করব। মন্দির সংলগ্ন এলাকায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কালীপুজোর দিন বহিরাগতদের ভিড় হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী নিয়ন্ত্রণ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy