অ্যাকাডেমি অধিগ্রহণ করুক রাজ্য সরকার, দাবিতে অনশন শুরু। — নিজস্ব চিত্র।
অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টস অধিগ্রহণ করুক রাজ্য সরকার। এই দাবিতে প্রেক্ষাগৃহের সামনে অনশন করেন অ্যাকাডেমির কর্মীদের একাংশ। বুধ এবং বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত তাঁরা অনশন করেছেন। তাঁদের অনশন-আন্দোলন জারি থাকবে কি না তা নিয়ে শুক্রবার বৈঠকে বসবেন ওই কর্মীরা। তার পরেই পরবর্তী সিদ্ধান্তের কথা জানানো হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
কর্মীদের অভিযোগ, অ্যাকাডেমির সার্বিক দুরবস্থা কাটাতে নবান্নকে আর্থিক সাহায্যের অনুরোধ জানিয়ে কোনও উত্তর মেলেনি। অবহেলার অভিযোগ উঠেছে বোর্ড অব ট্রাস্টের বিরুদ্ধেও। রাজ্য সরকার এবং বোর্ড অব ট্রাস্টের ‘অসহযোগিতা’র বিরুদ্ধেই এই অনশন-আন্দোলন। অনশনকারীদের আরও দাবি, যে সব কর্মী বোর্ড অব ট্রাস্টের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, তাঁদের বেতন দেওয়া হয়নি। যদিও কর্মীদের অনশন নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি অ্যাকাডেমির বোর্ড অব ট্রাস্টের চেয়ারম্যান তথা কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার প্রসূন মুখোপাধ্যায়। তবে তিনি জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের তরফে অ্যাকাডেমি অধিগ্রহণের দাবি ‘ন্যায়সঙ্গত’ নয়।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ নভেম্বর আনন্দবাজার অনলাইনই প্রথম অ্যাকাডেমির সামগ্রিক দুরবস্থা, বিপন্নতা এবং বর্তমান প্রতিকূলতা নিয়ে বিশদে লিখেছিল। অ্যাকাডেমির অবস্থা যে ভাল নয়, দরকারে অ্যাকাডেমি বন্ধ রেখে তার সংস্কার করা উচিত— আনন্দবাজার অনলাইনে এমন অভিমত প্রকাশ করেছিলেন শহরের বিশিষ্ট নাট্য ব্যক্তিত্বেরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে অ্যাকাডেমির গেটের সামনে অনশন-আন্দোলনে বসেন কর্মীদের একাংশ। অ্যাকাডেমির তৃণমূল কর্মী সংগঠনের চেয়ারম্যান অসীম বসু সরাসরি আঙুল তুলেছেন বোর্ড অব ট্রাস্টের দিকে। দাবি করেছেন, বোর্ডের পরিবর্তন না হলে অচলাবস্থা চলতেই থাকবে। তাঁর কথায়, ‘‘দিনের পর দিন বোর্ডে নির্বাচন হয় না। পকেট ভরার জন্য এখান থেকে কত ছবি চলে গিয়েছে। প্রচুর শিল্পী এখন চোখের জলে ফেলছেন।’’ এর পর বোর্ডের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা ট্রাস্টি বা কমিটির বিরুদ্ধে কথা বলছেন, সেই কর্মীদের বেতন বন্ধ করা হচ্ছে। দাবি করছি, যাঁরা দায়িত্ব নিয়েছেন, তাঁদের পরিবর্তন করা হোক। এটা তখনই হবে, যখন রাজ্য সরকার দায়িত্ব নিয়ে হস্তক্ষেপ করে এটা অধিগ্রহণ করবে।’’ অ্যাকাডেমি কর্মী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ দাস বলেন, ‘‘দুস্থ শিল্পীরা কোনও সাহায্য পাচ্ছেন না। ছবি কেনাবেচা করে চলে যাচ্ছেন ক্রেতারা। নিজেদের লাভ দেখছেন। আট বছর বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) হচ্ছে না। অডিট হচ্ছে না।’’
এই সব অভিযোগ মানতে চাননি প্রসূন। তিনি বলেন, ‘‘ওঁদের দাবি ন্যায়সঙ্গত নয় বলেই আমার মনে হয়। রাজ্য সরকার কোনও ট্রাস্টের অধীনে থাকা সম্পত্তি কোন আইনে অধিগ্রহণ করতে পারে, আমার জানা নেই।’’ দীর্ঘ দিন মিটিং ডাকা হয় না— কর্মীদের এই অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রসূন বলেন, ‘‘ওঁরা বোধহয় কার্যনির্বাহী সমিতির এজিএমের কথা বলছেন। সেই বৈঠক বছর বছর হওয়ার কথা। কিন্তু ২০১৪-র নির্বাচনে জিতে আসার পরে আর এজিএম ডাকা হয়নি।’’ কর্মীদের মাসিক বেতন নিয়ে ওঠা অভিযোগ নিয়ে তাঁর দাবি, ‘‘সরকারি কোনও সাহায্য পাওয়া যায় না। রোজগারের পুরোটাই হল ভাড়া থেকে। করোনাকালে গত আড়াই বছর হল একেবারেই বন্ধ ছিল। কিন্তু কর্মীদের মাইনে থেকে সমস্ত খরচ তো করতে হয়েছে। মাস পাঁচেক বাদ দিয়ে কোনও সমস্যা হয়েছে বলে আমার জানা নেই। ব্যাঙ্ক ওভার ড্রাফ্ট (কোনও কিছু জমা রেখে লোন পাওয়া)-এ চলছে। সেটা তো শোধ করতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy