প্রতীকী ছবি।
কোথাও খেলার মাঠের সবুজ ফিকে হয়ে গিয়েছে। কোথাও সেই সবুজে ভাগ বসিয়েছে পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা ফুলের নার্সারি। কোনও জায়গায় অর্ধনির্মিত স্টেডিয়াম গিলে খেয়েছে গোটা মাঠকেই। এমন ছবি শহরে দেখা গেল ‘খেলা হবে দিবসে’ই!
উত্তর কলকাতার হৃষীকেশ পার্কের মাঠে এক সময়ে ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন হত। এখন সেখানে ফুটবল খেলা কার্যত উঠেই গিয়েছে। এলাকার এক বাসিন্দা শঙ্করলাল সিংহের কথায়, “এক সময়ে ওই মাঠে চুটিয়ে ফুটবল-ক্রিকেট খেলেছি। এখন সেখানে ফুটবলের কোনও জায়গা নেই। খানিকটা অংশ প্রাতর্ভ্রমণকারীদের জন্য বরাদ্দ, খানিকটায় ধর্মীয় অনুষ্ঠান হয়। মাঠের এক কোণে একটা পাম্পিং স্টেশনও হয়েছে।” কাঁকুড়গাছির ৩এ বাসস্ট্যান্ডের কাছে প্রফুল্ল প্রতাপ মাঠে আগে নিয়মিত ফুটবল-ক্রিকেট খেলা হত। এখন কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং একটি ফুলের নার্সারির ঠিকানা ওই মাঠ। স্থানীয় বাসিন্দা বিশ্বদীপ কররায় বলেন, “একটি শিশুদের পার্ক আছে ওখানে। সকালে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য খোলা হয়।”
রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে আগাছায় ভরে গিয়েছে বিবেকানন্দ রোড ও বিধান সরণির সংযোগস্থলে পকেট গ্রাউন্ড। সেখানে এখন খাওয়াদাওয়ার অনুষ্ঠান হয়। ফ্ল্যাট উঠে যাওয়ায় টালিগঞ্জের নেতাজিনগর এলাকার তেঁতুলতলার মাঠ এবং ফিল্ম গোডাউন মাঠটি কার্যত হারিয়েই গিয়েছে বলে আক্ষেপ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
যদিও উদ্যান বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত, পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য দেবাশিস কুমারের দাবি, ‘‘শহরে খেলার পার্ক বাড়ছে। করোনার কারণে পার্কগুলি দীর্ঘ সময় বন্ধ ছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসায় আবার পার্কগুলি খোলা হচ্ছে।’’
বিধাননগরের ঝাঁ চকচকে সল্টলেক এবং রাজারহাট-গোপালপুর পুর এলাকাতেও মাঠের বেহাল দশার ছবিটা একই। জিডি ব্লকে বিশিষ্ট ফুটবলার, প্রয়াত প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির উল্টো দিকের জিডি পার্ক ভরেছে ঘাস ও আগাছায়। পার্কের রাস্তায় স্তূপ করে রাখা নির্মাণ সামগ্রী। শোনা গেল, পার্কে সংস্কারের কাজ চলছে। সল্টলেকের বৈশাখী আবাসনের ভিতরে খেলার মাঠে পুরনো দিনের স্মৃতিচিহ্ন হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে গোলপোস্ট, কিন্তু ফুটবল বা ক্রিকেট খেলার মতো পরিস্থিতি নেই। সল্টলেকের দত্তাবাদের বালির মাঠে, এ দিন মহিলারা যেখানে ফুটবল খেললেন সেটিও প্রায় সবুজহীন।
বিধাননগর পুর এলাকার কেষ্টপুরের কাছে কাজী নজরুল ইসলাম মাঠে এ দিন ‘খেলা হবে দিবস’ পালন করা হল প্রায় ঘাসহীন ও আবর্জনা পড়ে থাকা অবস্থাতেই। বাগুইআটির নারায়ণতলার (পূর্ব) ডিপোর মাঠে এক সময়ে স্টেডিয়াম তৈরির পরিকল্পনা করেছিল রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভা। সেই স্টেডিয়াম তো হয়ইনি, উল্টে হারিয়ে গিয়েছে কচিকাঁচাদের খেলার মাঠটিও। দমদম এলাকাতেও বেশ কিছু মাঠ পড়ে রয়েছে অবহেলাতেই।
বিধাননগরের পুর প্রশাসক কৃষ্ণা চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘করোনার জন্য বাচ্চারা মাঠে যায় না। তবে মাঠের সংস্কার করা হয়। খেলা হবে দিবসের জন্য অনেক মাঠ নতুন করে সাজানো হয়েছে। দেখভালের দিকে পুর কোঅর্ডিনেটরদের নজর দিতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy