শুক্রবার সন্ধ্যায় মণিপুরের কাংপোকপি জেলায় বিক্ষোভ। ছবি: সংগৃহীত।
কুকি জনজাতির বিক্ষোভে শুক্রবার সন্ধ্যায় নতুন করে অশান্তি ছড়াল মণিপুরের কাংপোকপিতে। বিক্ষোভকারীরা কাংপোকপির এক ডেপুটি কমিশনারের দফতরে হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ। প্রাথমিক ভাবে জানা যাচ্ছে, হামলায় জখম হয়েছেন এক পুলিশকর্মীও।
কাংপোকপির পাহাড়ি এলাকা থেকে নিরাপত্তা বাহিনীকে সরানোর দাবি তুলে আসছে কুকি জনজাতির মানুষেরা। সেই দাবি নিয়েই শুক্রবার সন্ধ্যায় কাংপোকপির পরিবহণ ব্যবস্থাকে স্তব্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করেন তাঁরা। নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ানেরা তাতে বাধা দেন বিক্ষোভকারীদের। এর পরেই কাংপোকপির ডেপুটি কমিশনারের দফতরের দিকে এগিয়ে যায় বিক্ষুব্ধ কুকি জনতা। স্থানীয় সূত্রে খবর, তাঁরা ভবনকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে থাকেন। পাল্টা জবাব দেয় নিরাপত্তা বাহিনীও। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানো হয়। শূন্যে গুলিও চালানো হয় বলে সূত্রের খবর।
নিরাপত্তা বাহিনী ভিড় ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করলে বেশ কয়েক জন বিক্ষোভকারী হুড়োহুড়িতে আহত হন। পরিস্থিতি সামাল দিতে কাংপোকপিতে আরও নিরাপত্তা বাহিনী পাঠানো হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। গত ২৯ ডিসেম্বরও নিরাপত্তা বাহিনীকে ঘিরে বিক্ষোভ চলেছে কাংপোকপি জেলায়। পাহাড়ি এলাকায় সশস্ত্র জঙ্গিদের দখলে থাকা অঞ্চলে অভিযান চালায় সেনা, বিএসএফ এবং সিআরপিএফের এক যৌথ বাহিনী। জঙ্গিদের আশ্রয় নেওয়ার বাঙ্কার ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। তার পরেই ওই অঞ্চলের আশপাশের গ্রামের মহিলারা নিরাপত্তা বাহিনীকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান।
গত বছরের মে মাস থেকে মেইতেই এবং কুকি-জো সম্প্রদায়ের মধ্যে হিংসা ঘিরে উত্তপ্ত মণিপুর। মাঝে কিছু দিন বিরতির পর গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে মেইতেই ও কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে নতুন করে সংঘর্ষে পরিস্থিতি আবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় একাধিক বাড়িঘর। দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে মণিপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে। মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি রাজ্যের বেশ কয়েক জন বিধায়কের বাড়িতে হামলা চালায় উন্মত্ত জনতা। রাজ্যের পাঁচ জেলায় জারি করা হয় কার্ফু। ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়। চলতি মাসেও মুখ্যমন্ত্রী বীরেনের বাড়ির অদূরে বোমা পাওয়া গিয়েছে। আঁটসাঁট করা হয়েছে বীরেনের নিরাপত্তাও।
এই আবহে গত ৩১ ডিসেম্বর মণিপুরের অশান্তির জন্য সাধারণ মানুষের কাছে ক্ষমা চান মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী। যা ঘটেছে, তা ভুলে গিয়ে নতুন করে শুরু করার কথা বলেন। তাঁর আশা চলতি বছরে শান্তি ফিরবে মণিপুরে। তবে এর মধ্যেও বার বার অশান্তি ছড়িয়েছে মণিপুরের বিভিন্ন প্রান্তে। যে অঞ্চলগুলিতে সবচেয়ে বেশি অশান্তির খবর পাওয়া যায়, তার মধ্যে একটি কাংপোকপি জেলা। মঙ্গলবার মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী জানান, পশ্চিম ইম্ফল, পূর্ব ইম্ফল, কংপোকপি ও চুড়াচাঁদপুর জেলা মিলিয়ে দু’হাজারেরও বেশি বাস্তুচ্যুত পরিবারকে নিজেদের ভিটেয় পুনর্বাসিত করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy