সেতুবন্ধন: অস্থায়ী এই বেলি ব্রিজের ভবিষ্যৎ নিয়েই এখন উঠেছে প্রশ্ন। (পাশে) মাঝেরহাট সেতুতে কাজ চলছে। শুক্রবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী, রণজিৎ নন্দী
নতুন সেতু চালু হতে পারে শীঘ্রই। আর সেটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হলে হয়তো অনাদরেই পড়ে থাকবে গত দু’বছর ধরে চলা একটি অস্থায়ী সেতু।
সব কিছু পরিকল্পনামাফিক চললে আগামী সপ্তাহেই উদ্বোধন হওয়ার কথা নতুন মাঝেরহাট সেতুর। এ ব্যাপারে রেলের ছাড়পত্র শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজ্য সরকারের কাছে এসে পৌঁছেছে। এই নতুন সেতু খুলে দেওয়া হলে আলিপুর এবং নিউ আলিপুরের মধ্যে থাকা বেলি ব্রিজের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। তবে রাজ্য এবং রেলের মধ্যে প্রাথমিক আলোচনায় ঠিক হয়েছে, নতুন মাঝেরহাট সেতু চালু হওয়ার এক মাসের মধ্যে বেলি ব্রিজ বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে।
তবে পুলিশকর্তারা মনে করছেন, নতুন সেতুর পাশাপাশি অতিরিক্ত একটি রাস্তা থাকলে যান চলাচলের সুবিধাই হবে। যদিও পূর্ত দফতরের কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, নতুন মাঝেরহাট সেতু চালু হলে প্রথম কয়েক দিন সার্বিক পরিস্থিতি দেখে নেওয়ার পরে বেলি ব্রিজ বন্ধও হয়ে যেতে পারে। কারণ হিসেবে তাঁরা বলছেন, ওই অস্থায়ী সেতু চালু হওয়ার সময়েই আপত্তি জানিয়েছিলেন নিউ আলিপুরের বাসিন্দাদের একাংশ। কিন্তু বৃহত্তর স্বার্থে তাঁরা তা মেনে নেন। তবে পরবর্তীকালেও বেলি ব্রিজ দিয়ে গাড়ি চলাচলের বিষয়ে তাঁদের তরফে আপত্তি উঠেছিল।
দু’বছর আগে, ২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর মাঝেরহাট সেতু ভেঙে মৃত্যু হয় পাঁচ জনের। ওই বিপর্যয়ের জেরে বেহালা, ঠাকুরপুকুরের মতো দক্ষিণ শহরতলির একটা বড় অংশের সঙ্গে মূল শহরের যাতায়াত কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। সেতুর নীচে শিয়ালদহ-বজবজ শাখার রেললাইন থাকায় সঙ্গে সঙ্গে বিকল্প রাস্তা তৈরি করা যায়নি। ফলে প্রতিদিন কর্মস্থলে আসতে প্রবল অসুবিধায় পড়তেন অফিসযাত্রীরা। সেই সময়েই মাঝেরহাট স্টেশনের অদূরে শিয়ালদহ-বজবজ শাখার রেললাইন এবং চেতলা খালের উপরে ইস্পাতের কাঠামো দিয়ে তৈরি হয় অস্থায়ী বেলি ব্রিজ। এই সেতুতে যান চলাচলের জন্য রয়েছে দু’টি লেন। রাজ্য পূর্ত দফতরের তরফে প্রায় ৫০ মিটার দীর্ঘ ওই বেলি ব্রিজ তৈরি করা হয়েছিল। এক দিকে আলিপুর অ্যাভিনিউ এবং অন্য দিকে হুমায়ুন কবীর সরণিকে যুক্ত করেছে এই সেতু।
আরও পড়ুন: মন্ত্রিত্বে ইস্তফার পর রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, বিধায়ক পদ ছেড়ে নিতে চান শুভেন্দু
সূত্রের খবর, মূলত তিন বছরের মেয়াদে রেলের কাছ থেকে লিজ় নিয়ে ওই বেলি ব্রিজ তৈরি করা হয়েছিল। তার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ রেলকে দিয়েছিল রাজ্য। সেই মেয়াদ শেষ হতে বাকি এক বছর। লালবাজার জানাচ্ছে, মাঝেরহাট বিপর্যয়ের পরে বেলি ব্রিজ দিয়ে ছোট গাড়ি চালিয়ে অবস্থা সামাল দেওয়া গিয়েছিল। তাদের মতে, নতুন মাঝেরহাট সেতু চালু হলে বেলি ব্রিজের প্ৰয়োজনীয়তা কমবে ঠিকই, কিন্তু শহরের বুকে একটি রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ না হওয়াই ভাল। এ ব্যাপারে ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘আমরা তো চাইব, হাতে একাধিক রাস্তা থাকুক। তবে সবটাই নির্ভর করছে নবান্নের সিদ্ধান্তের উপরে।’’
পূর্ত দফতরের খবর, প্রাথমিক ভাবে ভাবা হয়েছে, কয়েক কোটি টাকা খরচ করে তৈরি ওই বেলি ব্রিজ প্রথমেই ভাঙা হবে না। সেতুর দু’দিকে প্রাচীর তুলে যাতায়াত বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে। তার পরে প্রয়োজন বুঝে ওই ইস্পাতের কাঠামো অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হবে। তবে দফতরের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য তাঁরাও আপাতত সরকারের দিকে তাকিয়ে।
আরও পড়ুন: মালদহের তৃণমূল নেতাদের কলকাতায় জরুরি তলব
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy