জুনিয়র ডাক্তারদের জেনারেল বডির বৈঠকের অডিয়ো প্রকাশ করেছেন কুণাল ঘোষ। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
আরও একটি অডিয়ো প্রকাশ করেছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে সল্টলেকে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ধর্নায় বসেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। শনিবার রাতে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে কালীঘাটে গিয়েছিলেন। কিন্তু বৈঠক ভেস্তে গিয়েছে আবার। এই পরিস্থিতিতে আন্দোলনকারীদের বৈঠক করতে চাওয়ার ইচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে রাজ্যের শাসকদল। নতুন অডিয়োতে কুণালের অভিযোগ, জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ জটিলতা তৈরির মানসিকতা নিয়েই কালীঘাটে গিয়েছিলেন।
রবিবার দুপুরে একটি অডিয়ো প্রকাশ করেছেন কুণাল। দাবি করেছেন, তা মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে যাওয়ার আগে সল্টলেকের ধর্নামঞ্চে জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠকের একটি অংশ। এর পর ডাক্তারদের কটাক্ষ করে কুণাল বলেন, ‘‘এই বৈঠকের সরাসরি সম্প্রচার হলে জনগণের বুঝতে সুবিধা হত। স্পষ্ট, একাংশ জটিলতার মানসিকতা নিয়েই গিয়েছিলেন।’’ কুণাল আরও যোগ করেন, ‘‘এই অডিয়ো কারও টেলিফোনকথন নয়। এটি ওঁদের মঞ্চে নিজেদের বৈঠকের আলোচনা।’’
অডিয়োতে শোনা গিয়েছে, কালীঘাট থেকে ডাক আসার পর সেখানে যাওয়া এবং দাবিদাওয়া সম্বন্ধে জুনিয়র ডাক্তারেরা আলোচনা করছেন। কেউ কেউ সরকারের দাবি মেনে বৈঠকের পক্ষে। কেউ কেউ আবার ভিডিয়োগ্রাফি বা সরাসরি সম্প্রচারের দাবিতে অনড় থাকতে চাইছেন। সুপ্রিম কোর্টে আগামী মঙ্গলবারের শুনানি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করছেন কেউ কেউ।
কুণালের প্রকাশ করা এই অডিয়োকে গুরুত্ব দিতে নারাজ জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ। আন্দোলনকারী চিকিৎসক সৌম্যদীপ রায় বলেন, ‘‘কুণালবাবু বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের কথা বলেন। তাঁর কোনও ঠিক নেই। তাঁর কথায় কেউ ভরসা করেন না। শুরু থেকেই আন্দোলন সম্বন্ধে বিভিন্ন ধরনের কুৎসা তিনি করে এসেছেন। মানুষ ওঁকে ভরসা করেন না।’’
ফাঁস হওয়া ওই আলোচনার অংশ এবং নিজেদের মধ্যে মতানৈক্য প্রসঙ্গে সৌম্যদীপ বলেন, ‘‘জেনারেল বডির বৈঠকে তো নানা ধরনের মত উঠে আসে। তার ভিত্তিতেই তো ঐক্যমতে পৌঁছনো হয়। ভিতর থেকে কারা বৈঠকের বিভিন্ন কথাবার্তা টুকরো টুকরো আকারে বাইরে বার করছে, এ ভাবে চিহ্নিত করা সম্ভব নয়। বৈঠকে আমরা অনেকে ছিলাম। তবে আন্দোলন ভাঙার জন্যই এটা করা হচ্ছে। কেউ কেউ আন্দোলন ভাঙার চেষ্টা করছে নিশ্চয়ই।’’
কী শোনা গিয়েছে কুণালের প্রকাশ করা অডিয়োতে?
অডিয়োতে শোনা যাচ্ছে, কয়েক জন যুবক নিজেদের মধ্যে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করছেন। কেউ কেউ সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। তাঁদের আশঙ্কা, মঙ্গলবার এই সংক্রান্ত শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে পারে। কারণ, ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্ট তাঁদের কাজে ফেরার নির্দেশ দিয়েছে। যা তাঁরা অমান্য করেছেন। ভিডিয়োগ্রাফি ছাড়া মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে আপত্তি জানাচ্ছেন কেউ কেউ। বাকিরা তাঁদের বোঝাচ্ছেন। এক জনকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট মোটেই আমাদের বলেনি, কাজে যোগ দিন। আদালত মুখ্যমন্ত্রীকে একটা জায়গা দিয়েছে। তার পর থেকে উনি খেলছেন। উনি আমাদের ধর্নামঞ্চে গিয়েছিলেন। বাড়িতে ডেকেছেন। এর পরেও তুই যদি বলিস, আমরা যাব না, তা হলে আর তো কথা বলবেনই না, উল্টে এর পর আর আমাদের কথা ভাববেনও না। তখন কিন্তু তোকে এর দায় নিতে হবে।’’ ওই কণ্ঠকে আরও বলতে শোনা যায়, ‘‘এখন যদি আমরা বৈঠকে যাই, তা হলে আমাদের নিজেদের পক্ষে কথা বলার জায়গা থাকবে। আমরা আদালতে বলতে পারব, আমরা আলোচনার পথ খোলা রেখেছি। আমাদের দাবি এখনও মেটেনি। আলোচনা করছি। আমাদের আরও সময় দিন।’’ অন্য কণ্ঠ এর পর বলে, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট পরবর্তী শুনানির দিন আমাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে পারে, এটা আমরা ভাবছি। আদালত বলেনি যে, আমাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবেই।’’ প্রথম কণ্ঠ তার পর আবার বলে, ‘‘সরাসরি সম্প্রচারের জন্য পুরো বিষয়টা আটকে দেব? আমাদের কিন্তু কোনও আইনজীবী নেই। সুপ্রিম কোর্টে দাঁড়াতে পারব কি না, জানি না।’’ এর পর তাঁদের মধ্যে আরও কিছু ক্ষণ তর্কাতর্কি হয়। বন্ধ হয়ে যায় অডিয়ো।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy