Advertisement
E-Paper

‘মা-বাবাকে মারধর করতেন ছেলে-বৌমা, খেতে দিতেন না’! যাদবপুরে বৃদ্ধ দম্পতির মৃত্যুরহস্যে দাবি আত্মীয়দের

বৃদ্ধ মা-বাবাকে প্রায়ই মারধর করতেন ছেলে-বৌমা। খেতেও দিতেন না। কাছের আশ্রমে গিয়ে খেতেন মা-বাবা! পূর্ব যাদবপুরের মুকুন্দপুরে বৃদ্ধ দম্পতির মৃত্যুরহস্যে এমনটাই দাবি আত্মীয়দের।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২৫ ১৪:২৩

—প্রতীকী চিত্র।

বৃদ্ধ মা-বাবাকে প্রায়ই মারধর করতেন ছেলে-বৌমা। মাসে মাসে টাকা দেওয়ার যে কথা ছিল, তা-ও ঠিকমতো দিতেন না তাঁরা। শেষের দিকে টাকা দেওয়াই বন্ধ করে দিয়েছিলেন। খেতেও দিতেন না। কাছের আশ্রমে গিয়ে খেতেন মা-বাবা! পূর্ব যাদবপুরের মুকুন্দপুরে বৃদ্ধ দম্পতির মৃত্যুরহস্যে এমনটাই দাবি আত্মীয়দের।

মঙ্গলবার রাত ৮টা নাগাদ বন্ধ ফ্ল্যাট থেকে বৃদ্ধ দম্পতি দুলাল পাল (৬৬) এবং রেখা পালের (৫৪) ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দুলালের দেহ মিলেছিল ডাইনিং রুম থেকে। আর শোয়ার ঘর থেকে উদ্ধার হয় রেখার দেহ। দু’টি দেহই পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। এই ঘটনায় মৃত দম্পতির ছেলে সৌরভ পাল এবং বৌমা কল্যাণী পালের দিকেই আঙুল তুলেছেন আত্মীয়েরা। সরাসরি খুনের অভিযোগ না তুললেও, দুলাল-রেখার মৃত্যুর জন্য যে সৌরভ-কল্যাণীই দায়ী, তা-ও বুঝিয়ে দিয়েছেন তাঁরা।

জানা গিয়েছে, ছেলে-বৌমা থানায় রয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলছেন তদন্তকারীরা। রেখার দিদির মেয়ে শান্তাশ্রী মিত্রের দাবি, কল্যাণী সৌরভের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী। দ্বিতীয় বিয়ে করার পর থেকেই সংসারে অশান্তি লেগে ছিল। বাবা-মাকে প্রায়ই মারধর করতেন তাঁরা। শান্তাশ্রীর কথায়, ‘‘আমাদের সঙ্গে দীর্ঘ দিন কোনও যোগাযোগ ছিল না। সৌরভের এটা দ্বিতীয় বিয়ে। প্রথম পক্ষের স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্স হয়ে গিয়েছে। এই বিয়েটা করার পর থেকেই অশান্তি হচ্ছিল। বাবা-মাকে পেটাত। খেতে দিত না ঠিক করে। মাসে মাসে চার হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা ছিল। কোনও কোনও মাসে দু’হাজার টাকা দিত। শুনলাম, গত দু’মাস তো টাকাই দেয়নি। বৃদ্ধ বাবা-মা আশ্রমে গিয়ে খেত।’’

শান্তাশ্রীর দাবি, মঙ্গলবারও মা-বাবাকে মারধর করেছিলেন সৌরভ এবং কল্যাণী। মারধরের পর তাঁরা অফিসে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। এ কথা তাঁরা প্রতিবেশীদের থেকে জানতে পেরেছেন। শান্তাশ্রীর কথায়, ‘‘মঙ্গলবার সকালে আমার মা ফোন করেছিল মাসিকে (রেখা)। প্রথমে দু’বার মাসি ফোন তোলেননি। পরে ফোন ধরে জানিয়েছিল যে, সৌরভ-কল্যাণী আবার মারধর করেছে। সন্ধ্যাবেলা মাসির মেয়ে ফোন করেছিল ওদের বাড়িতে। ফোনে না পেয়ে প্রতিবেশীদের ঘরে গিয়ে দেখতে বলে। এর পরেই দু’জনের দেহ উদ্ধার হয়।’’

শান্তাশ্রীর মা রিনা মাঝিও বলেন, ‘‘মঙ্গলবারও মারধর করেছে। একটা সুইসাইড নোটও পাওয়া গিয়েছে শুনলাম। আমরা দেখিনি। তবে রেখা আমাকে বলেছিল এক বার, ‘যদি সুইসাইড করি, তা হলে ছেলে-বৌমার নামে লিখে যাব।’ এই পরিস্থিতিতে কেন ওদের (ছেলে-বৌমা) গ্রেফতার করা হচ্ছে না?’’ রিনার দাবি, মা-বাবার সঙ্গে ফ্ল্যাট নিয়ে ঝামেলা ছিল সৌরভ-কল্যাণীর। তাঁর কথায়, ‘‘ফ্ল্যাটটা রেখার নামে। বাবা-মা চেয়েছিল ফ্ল্যাটটা বেচে দেবে। ছেলে খেতে দেয় না। তাই ফ্ল্যাট বেচে ওদের হাতে অর্ধেক টাকা দিয়ে বাকি টাকা নিয়ে তারা চলে যাবে। এটা নিয়ে ঝামেলা চলছিল।’’

আত্মীয়দের দাবি, দুলাল-রেখার দেহ উদ্ধারের সময় তাঁদের শরীরের নানা জায়গায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। সেই আঘাত কি সত্যিই মারধরের কারণে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তদন্তকারীদের সূত্রের বক্তব্য, দেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসার পরেই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

Jadavpur Couple Death
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy