অসহায়: লকডাউনে বন্ধ সব কাজ। খাদ্যসঙ্কটে পড়েছেন মাদ্রাজিপাড়ার বাসিন্দারা। নিজস্ব চিত্র
লকডাউনের জেরে থেমে গিয়েছে ট্রলি ভ্যান, রিকশার চাকা। রোজগার হারিয়েছেন নির্মাণকর্মী, দিনমজুরেরা। মধ্য হাওড়ার জিটি রোডের পাশে মাদ্রাজিপাড়ার ১৭০টি পরিবারের চোখের সামনে এখন তাই ঘোর অন্ধকার। জনতা কার্ফুর পর থেকে জারি হওয়া লকডাউনের কারণে গত এক সপ্তাহ ধরে তাঁরা প্রায় অভুক্তই। অভিযোগ, এই ক’দিনে তাঁদের কাছে পৌঁছয়নি কোনও সরকারি ত্রাণ। কোনও নেতা-নেত্রী বা সমাজসেবী সংগঠনের সাহায্যও পাননি।
হাওড়ার জিটি রোডের পাশে জুটমিলের উল্টো দিকে তস্য গলির মধ্যে রয়েছে এই মাদ্রাজিপাড়া। বাংলা, হিন্দি, তামিল, বিহারি-সহ বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের বাস সেখানে। কেউ ট্রলি ভ্যান, রিকশা বা টোটো চালিয়ে, কেউ বা নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করে সংসার চালান। কিন্তু লকডাউনের জেরে গত কয়েক দিন ধরে রোজগার প্রায় বন্ধই হয়ে গিয়েছে এই মানুষগুলোর।
হাওড়ার তস্য গলির মধ্যে দিয়ে বৃহস্পতিবার ওই কলোনিতে পৌঁছনোমাত্র কার্যত ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন বাসিন্দারা। প্রত্যেকেরই অভিযোগ, লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে তাঁদের কাছে সরকারি কোনও ত্রাণ এসে পৌঁছয়নি। খোঁজ নিতেও আসেননি কোনও নেতা-নেত্রী।
ওই পাড়ার বাসিন্দা, দিনমজুর রাজু রাও কয়েক বছর ধরেই পক্ষাঘাতে শয্যাশায়ী। তাঁর স্ত্রী শোভাদেবী জানান, তাঁদের একমাত্র ছেলে রিকশা চালায়। সে-ই পরিবারের একমাত্র রোজগেরে। কিন্তু লকডাউনের কারণে তার রোজগারের পথও আপাতত বন্ধ। শোভাদেবী বলেন, ‘‘চাল কেনারই পয়সা নেই। স্বামীর ওষুধ কেনা তো দূরের কথা। রেশনে চাল দেবে শুনে থানায় খোঁজ নিতে গিয়েছিলাম। ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বার করে দিল।’’
তাই গত কয়েক দিন ধরে কোথাও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে শুনতে পেলেই ছুটে যাচ্ছেন মাদ্রাজিপাড়ার বাসিন্দারা। কিন্তু ফিরতে হচ্ছে খালি হাতেই। একই অভিযোগ কমলাদেবী, সমীর শর্মাদের মতো
অন্য বাসিন্দাদেরও।
হাওড়ার ওই এলাকা ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। অভিযোগ, লকডাউনের সময়ে মাদ্রাজিপাড়ার বাসিন্দাদের খোঁজটুকু পর্যন্ত নিতে আসেননি স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর। কেন? ওই কাউন্সিলরকে বারবার ফোন এবং মেসেজ করেও কোনও উত্তর মেলেনি। তবে মাদ্রাজিপাড়ার পাশে দাঁড়িয়েছেন ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর আসরাফ জাভেদ। বুধবার ও বৃহস্পতিবার দুপুরে খিচুড়ি এনে বাড়ি বাড়ি বিলি করেছেন। আসরাফ বলছেন, ‘‘শুনলাম ওই ওয়ার্ডে কোনও সরকারি ত্রাণ বা অন্য সাহায্য আসেনি। মানুষগুলো খেতে পাচ্ছেন না। তাই শুধু দুপুরে খিচুড়ি দিয়েছি দু’দিন। তবে নিজের ওয়ার্ড সামলে কত দিন পারব জানি না।’’ এ নিয়ে মধ্য হাওড়ার বিধায়ক তথা রাজ্যের সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, ‘‘খবর নিয়েছি। ওখানে মানুষগুলোকে যাতে খাবার দেওয়া হয়, তা-ও দলের নেতাদের দেখতে বলেছি। আরও কী ভাবে সাহায্য করা যায় দেখছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy