ট্রেনের কামরায় অদিতি দে। ছবি: অদিতি দে-এর ফেসবুক প্রোফাইল থেকে নেওয়া
এক সময়ে দোল কিংবা হোলির সময়ে ট্রেনে চেপে ভিন্ রাজ্যে যেতে ভয় পেতেন অনেকে। কারণ, ট্রেন লক্ষ্য করে পাথর, মল-মূত্র ছোড়া হবে এই ভয়ে। গত কয়েক বছর ধরে সেই চল শুরু হয়েছে এ রাজ্যেও। সোমবার, দোলের দিন তেমনই ঘটনা ঘটল এক মহিলার সঙ্গে। শিয়ালদহ-ডায়মন্ড হারবার লোকালে তিনি অফিস থেকে ট্রেনে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন। পার্ক সার্কাসের কাছে ট্রেন লক্ষ্য করে পলিথিনে ভরে মূত্র ও প্যাকেট ছোড়া হয়। যা এসে পড়ে ওই মহিলার গায়ে।
একই ঘটনা ঘটে সোমবার সকালে হাওড়া মেন লাইনের বিভিন্ন ট্রেনের যাত্রীদের সঙ্গেও। অভিযোগ, শ্রীরামপুর স্টেশন ছাড়ার পরেই বিভিন্ন স্টেশন এলাকা থেকে ট্রেন লক্ষ্য করে পাথর, রং, জলের বোতল এবং মল-মূত্র ছোড়া হয়। মঙ্গলবার হোলির দিনেও একই অভিযোগ উঠেছে।
যে মহিলার গায়ে সেই মূত্র ভরা পলিথিন এসে পড়েছিল তাঁর অবশ্য অভিযোগ, শুধু দোল কিংবা হোলি বলেই নয়। ট্রেন লক্ষ্য করে মাঝেমধ্যেই পাথর, মল-মূত্র কিংবা নোংরা ছোড়া হয়। এর প্রতিকার চেয়ে বিশেষ পদক্ষেপের জন্য রেল পুলিশের কাছে আর্জিও জানিয়েছেন ওই মহিলাযাত্রী। তিনি বলেন, ‘‘এটা হামেশাই ঘটে। নোংরার বদলে কোনও দিন যে অ্যাসিড ছোড়া হবে না, তার কী নিশ্চয়তা রয়েছে?’’
রেল পুলিশের অবশ্য দাবি, যাত্রীদের থেকে খবর পেয়েই তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। তদন্তকারীরা জানান, পার্ক সার্কাস স্টেশনের কাছে রেললাইন বরাবর দীর্ঘ পাঁচিল রয়েছে। সেই পাঁচিলের পিছন থেকেই পলিথিনে ভরে নোংরা এবং পাথর ছোড়া হয়েছে। যেহেতু ওই এলাকাটি রেল চত্বরের মধ্যে নয়, সে জন্য বালিগঞ্জ জিআরপি-র সঙ্গে যোগাযোগ করে রেল পুলিশ। বিষয়টি নিয়ে রেলের পাশাপাশি রাজ্য পুলিশও তদন্ত করছে বলে জানিয়েছে রেল।
চলন্ত ট্রেন লক্ষ্য করে পাথর বা কোনও কিছু ছোড়া চরম অন্যায় জানিয়ে মঙ্গলবার পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যেহেতু পাঁচিলের অন্য প্রান্ত থেকে ওই সব ছোড়া হয়েছে, সে জন্য রেলের পাশাপাশি রাজ্য পুলিশও ঘটনাটির তদন্ত করছে।’’ তবে ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি বলে জানিয়েছেন নিখিলবাবু।
মাস কয়েক আগে শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখায় বামনগাছি, দত্তপুকুর স্টেশন এলাকা থেকে চলন্ত ট্রেন লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া হয়। এক স্কুলছাত্রীর চোখ-মুখ পাথরের আঘাতে রক্তাক্ত হয়। এ বার হাওড়া মেন এবং শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার যাত্রীদের পক্ষ থেকেও একই অভিযোগ উঠেছে।
তবে রেলের দাবি, শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখায় পাথর ছোড়ার প্রবণতা এখন অনেক কমেছে। এর পিছনে স্থানীয় থানার পুলিশকেও ভূমিকা নিতে হয়েছে বলে রেলের তরফে জানানো হয়েছে। আধিকারিকেরা জানান, দুষ্কৃতীদের ধরা ছাড়াও ওই সব এলাকায় পাহারা দেওয়া এবং রেললাইন সংলগ্ন
এলাকার বাসিন্দাদের সচেতন করতে আলোচনা, পদযাত্রাও করে পুলিশ। লিফলেট ছাপিয়ে স্থানীয় থানা এবং রেল পুলিশ কর্তাদের নম্বরও বিলি করা হয়। সম্প্রতি বামনগাছি এলাকাতেই এক যুবক চলন্ত ট্রেন লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে গেলে তাকে ধরে রেল পুলিশের হাতে তুলে দেন এলাকার মানুষ। হাওড়া মেন এবং শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখাতেও ধরপাকড়ের পাশাপাশি মানুষকে সচেতন করার এমন কাজের কথাও ভাবছে রেল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy